স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৫ মে। রাশিয়ার চলমান আগ্রাসনের মধ্যে ইউক্রেইনের প্রতি জনসমর্থন আদায়ের গানে ইউরোভিশন জয় করেছে দেশটির জনপ্রিয় ব্যান্ড কালুশ অর্কেস্ট্রা।ইতালির তুরিনে ইউরোপের জনপ্রিয় এই আসরে বিভিন্ন দেশের শিল্পীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ৬৩১ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম হয়েছে র্যাপ-ফোক ব্যান্ড দলটি।
যুদ্ধাবস্থায় বিশেষ অনুমতিতে ইউক্রেইন ছেড়ে ইউরোভিশনে অংশ নিয়েছিলেন কালুশ অর্কেস্ট্রার সদস্যরা। ইউরোভিশনের মঞ্চে গাওয়া তাদের গানের নাম স্টেফানিয়া।বিবিসি জানিয়েছে, গানটি মূলত ব্যান্ড দলটির প্রধান শিল্পী ওলেহ সিউকের মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লেখা হলেও এটি ছিল, রাশিয়ার আগ্রাসনের মধ্যে ইউক্রেইনের প্রতি জনসমর্থনের আদায়ের আর্তি।স্টেফানিয়া গানটি গাওয়া হয়েছে সমসাময়িক র্যাপ এবং হিপ-হপ বিটের সঙ্গে পুরনো ইউক্রেইনিয়ান ফোক সুর এবং ঐতিহ্যবাহী বাঁশির মিশেলে। গানের লিরিকে ইউক্রেইনের ‘ভাঙা রাস্তা’ এবং ‘ধূসর মাঠের’ বর্ণনা যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষের চিত্র তুলে ধরেছে।
কালুশ অর্কেস্ট্রার সদস্যরা তাদের পারফরমেন্স শেষ করে অনুরোধ জানান, “দয়া করে ইউক্রেনকে সাহায্য করুন, মারিউপোলকে সাহায্য করুন, এখনই আজভস্তলকে সাহায্য করুন।”ইউরোভিশনের ট্রফি গ্রহণ করে সিউক বলেন, “ইউক্রেনকে সমর্থন করার জন্য ধন্যবাদ। এই জয় প্রতিটি ইউক্রেনীয়ের জন্য। স্লাভা ইউক্রেইনি।”প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছেন যুক্তরাজ্য স্যাম রাইডার, যা ১৯৯৮ সালের পর ইউরোভিশনে দেশটির সেরা অর্জন।যুক্তরাজ্যের সাবেক নির্মাণ কর্মী স্যামের গান ‘স্পেস ম্যান’ জুরি ভোটে ২৮৩ পয়েন্ট নিয়ে প্রতিযোগিতার শীর্ষে ছিল। কিন্তু দর্শক-শ্রোতার প্রথম পছন্দ ছিল স্টেফানিয়া। ফলে পাবলিক ভোটে পিছিয়ে গিয়ে প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছে যুক্তরাজ্য। বিবিসি জানিয়েছে, ইউরোভিশন প্রতিযোগিতার মঞ্চেও বিভিন্ন দেশের শিল্পীরা ইউক্রেইনের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন। তারা ইউক্রেইনের পাতাকা দেখিয়েছেন, মঞ্চে ইউক্রেইন নিয়ে কথা বলেছেন।
আইসল্যান্ডের শিল্পী সিস্টুর বলেন, “ইউক্রেইনের জন্য শান্তি চাই, আমরা তোমাকে ভালোবাসি।”এস্তোনিয়ান গায়ক স্টেফান তার গানের শেষে ইউক্রেইনীয়দের উদ্দেশে বলেন, “একটি সুন্দর আগামীর জন্য আপনার আশা হারাবেন না।”
এবারের প্রতিযোগিতাও শুরু হয় জন লেননের ‘গিভ পিস এ চান্স’ গান দিয়ে। তুরিনের রাস্তায় ১ হাজার শিল্পী সেই পরিবেশনায় অংশ নেন।এবারের আসরের বিজয়ী ইউক্রেইনের কালুশ অর্কেস্টার গায়ক ওলেহ সিউক আশা করছেন, আগামী বছর তার দেশেই বসতে পারে ইউরোভিশন।“আমি নিশ্চিত, আগামী বছর একটি নতুন, ঐক্যবদ্ধ এবং সুখী পরিবেশে ইউরোপকে আতিথ্য করতে পারলে খুশি হবে ইউক্রেইন।”