স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ০৯ মার্চ : রণক্ষেত্র সিরিয়া। প্রেসিডেন্ট আসাদের অনুগামীদের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরাপত্তা আধিকারিকদের সংঘাতে দু’দিনে মৃত্যু হয়েছে হাজারের বেশি মানুষের। গত ৮ ডিসেম্বর পতন হয় বাশার আল-আসাদের সরকারের। তারপরও নেভেনি অশান্তির আগুন। ফের তা চূড়ান্ত রূপ ধারণ করল।
৫০ বছর ধরে পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটির ক্ষমতার রাশ ধরে রেখেছিল আসাদ পরিবার। ২০০০ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হন বাশার আল আসাদ। কিন্তু জলঘোলা হতে শুরু করে ২০১১ সালে। আরব বসন্তের হাওয়ায় উত্তাল হয়ে ওঠে মরুদেশটি। আকাশ বাতাস কেঁপে ওঠে একনায়ক হঠাও, গণতন্ত্র ফেরাও স্লোগানে। শুরু হয়ে যায় গৃহযুদ্ধ।
আসাদকে গদিচ্যুত করতে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিদ্রোহীদের যৌথমঞ্চ ‘সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস’ (এসডিএফ)। কুর্দ বাহিনী পিপলস প্রোটেকশন ইউনিটের (ওয়াইপিজি) নেতৃত্বে আরম্ভ হয় এক অসম যুদ্ধ। লড়াইয়ে বিদ্রোহীদের সাহায্য করতে শুরু করে আমেরিকা। পাশাপাশি আসাদের হয়ে আসরে নামে ইরানের মদতপুষ্ট হেজবোল্লা, রাশিয়া। সেই থেকেই গৃহযুদ্ধে রক্তাক্ত হতে শুরু করে সিরিয়া। শুরুর দিকে লড়াইয়ে অন্যতম প্রধান শহর আলেপ্পো হাতছাড়া হলেও, ২০১৬ সালে তা পুনরুদ্ধার করে আসাদ বাহিনী। যদিও পালটা মার দিতে শুরু করে বিদ্রোহীরা। ৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহীদের কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয় আসাদ বাহিনী। ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়ে পালান গদিচ্যুত প্রেসিডেন্ট। তিনি রাশিয়ায় রয়েছেন।
কিন্তু আসাদ না থাকলেও তাঁর অনুগামীরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। আর এই সংঘাতের বলি হতে হচ্ছে সাধারণ নাগরিকদেরও। জানা যাচ্ছে, গত বৃহস্পতিবার থেকে ৭৪৫ জন সিরিয়ার সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে নতুন প্রশাসনের ১২৫ জন সরকারি ও নিরাপত্তা আধিকারিকও প্রাণ হারিয়েছেন। পালটা আঘাতে অন্তত ১৪৮ জন অনুগামীও মারা গিয়েছেন। এহেন পরিস্থিতিতে পথে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে মৃতদেহের স্তূপ। কোথাও জল নেই। কোথাও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। বেশির ভাগ মানুষই লুকিয়ে রয়েছেন বাড়িতে। রাস্তায় রাস্তায় বন্দুকধারীদের দাপাদাপি। এলাকায় ঢুকে বাড়ি লক্ষ্য করে গুলিও চালাচ্ছে তারা। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি একেবারেই অগ্নিগর্ভ।