স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৯ ফেব্রুয়ারি : গণঅভ্যুত্থানের নামে যে নারকীয় ঘটনা চলেছে, তার বিচার হবে। খুনিদের শাস্তি দিতে সম্প্রতি দেশে ফেরার বার্তা দিয়েছেন দেশত্যাগী বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার রাতে ভারচুয়াল মাধ্যমে আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছিলেন মুজিবকন্যা। পালটা প্রতিক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকার জানাল, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরানো এবং বিচারের আওতায় আনাই বর্তমানে তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বাঙালি জাতিসত্তাকে উসকে দেওয়া হাসিনার ভার্চুয়াল বার্তায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে ‘ইউনুস-জামাত সরকার’।
‘জুলাই বিপ্লবে’র পরে ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্যই হয়ে দাঁড়িয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা। পক্ষান্তরে বাঙালি জাতিসত্তায় আঘাত করা। জামাত ও তৌহিদি জনতার মতো মৌলিবাদী সংগঠনগুলি ইতিমধ্যে মুজিবের ঐতিহাসিক ৩২ ধানমন্ডির বাড়ি ধ্বংস করে বাংলাদেশের আকাশে ইসলামিক স্টেটের পতাকা উড়িয়েছে। পালটা ভারত থেকে হাসিনা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, “ইনশাআল্লা দেশে ফিরব, এবং আমি সব হত্যার বিচারও করব।’। এর প্রতিক্রিয়ায় ইউনুস মিডিয়া উপদেষ্টা শফিকুল আলম বলেন, “হাসিনাকে দেশে ফেরানোই এখন বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। হাসিনার প্রত্যার্পণ এবং তাঁকে বিচারের আওতায় আনার নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। মুজিবকন্যার বিচার হবেই।”
দেশে মূল্যবৃদ্ধি, আর্থিক সংকট, আইনশৃঙ্খলার অবনতির মতো চ্যালেঞ্জ থাকলেও রাজনৈতিক কারণেই হাসিনাই মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইউনুস সরকারের। একই কারণে আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করতে তৎপর হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শফিকুল বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলি সিদ্ধান্ত নেবে যে দেশের রাজনৈতিক আঙিনায় দলটির (আওয়ামি লিগ) অস্তিত্ব বজায় থাকা উচিত কি না।” এইসঙ্গে জানান, “হত্যা, গুম করা এবং অন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আানা হবে।” কার্যত হাসিনাকে পালটা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইউনুসের মিডিয়া উপদেষ্টা। এছাড়াও ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করে শফিকুল বলেন, “হাসিনার গণহত্যার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘও। এর ফলে ভারতের উপরে হাসিনাকে প্রত্যার্পণের চাপ বাড়ছে।”
প্রসঙ্গত, সোমবার ভারচুয়াল মাধ্যমে হাসিনা বলেন, “আমি আছি। আমি অবশ্যই এর (গণহত্যার) বিচার কোনও না কোনও দিন করব। ওরা (অন্তর্বর্তী সরকার) যতই দায়মুক্তি দিক, এই হত্যার দায়মুক্তি হয় না। হত্যার বিচার হয়। আমার বাবা-মা, তিন ভাইকে যখন হত্যা করেছিল, তখনও দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমি তাদের বিচার করেছি। এই পুলিশহত্যার বিচারও আমি করব একদিন।” তিনি আরও বলেন, “যারা বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে, যাঁদের জন্য মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, তাঁরা অবশ্যই আইনের মুখোমুখি হবে। আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন, এবং এই সব অন্যায়ের ন্যায়বিচার হবেই।” মুজিবকন্যা বলেন, “এখন শুনছি ওরা ‘ডেভিল হান্ট’ শুরু করবে। কে ডেভিল? কাকে খুঁজছে? একটা সরকার চলছে যে দেশ চালাতে ব্যর্থ। অর্থনীতি সংকটে, আইনশৃঙ্খলা দিনে দিনে আরও খারাপ দিকে যাচ্ছে, সাধারণ মানুষের কোনও নিরাপত্তা নেই।”