Wednesday, March 19, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদঅশান্ত বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বেগ রাষ্ট্রসংঘ !

অশান্ত বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বেগ রাষ্ট্রসংঘ !

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৩ ফেব্রুয়ারি : ‘জুলাই বিপ্লব’ থেকে যে অশান্তি শুরু হয়েছে, শেখ হাসিনার ক্ষমতচ্যুত হওয়ার ছয় মাস পরেও তা থামার লক্ষণ নেই। এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রসংঘ বাংলাদেশে শান্তি এবং রাজনৈতিক স্বচ্ছতা ফেরাতে জরুরি পদক্ষেপ করল। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানাচ্ছে, পরিস্থিতির উন্নতিতে পাঁচ দফা সুপারিশ করা হয়েছে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশনের তরফে। এইসঙ্গে শেখ হাসিনার জমানায় ‘পরিকল্পিত’ বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে’র ঘটনার নিন্দা করেছে রাষ্ট্রসংঘ। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধে পাঁচ দফা পদক্ষেপের সুপারিশ করা হয়েছে। সেগুলি কী কী?

১) বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, নির্যাতন-সহ অপরাধের তদন্ত ও বিচারের জন্য কার্যকর, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও সমন্বিত প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে রাষ্ট্রসংঘ। এই ধরনের অপরাধ যাঁদের নির্দেশে হয়েছে, বর্তমান আইন ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী তাঁদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।

২) মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধে পুলিশের নিয়মকানুন সংশোধনের সুপারিশ করেছে রাষ্ট্রসংঘ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক বিধি ও মানদণ্ডের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সংশোধন আনতে হবে। সংশোধিত নিয়মকানুন অনুযায়ী গুরুতর আহত অথবা মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে, এমন পরিস্থিতি মোকাবিলা ছাড়া পুলিশ গুলি চালাতে পারবে না। পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর কড়া শাস্তি এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে অভিযুক্ত ‘র‌্যাব’ বাহিনী ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। মেধার ভিত্তিতে পুলিশে নিয়োগের কথাও বলা হয়েছে।

৩) মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বিতর্কিত ফৌজদারি আইনগুলো রদ অথবা সংশোধন করে এসব আইনে গ্রেপ্তার, তদন্ত ও বিচার স্থগিতের সুপারিশ করেছে রাষ্ট্রসংঘ। অতীতে এসব আইন ব্যবহার করে গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক বিরোধীদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা চালাতে দেখা গিয়েছে, বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। সাইবার নিরাপত্তা আইন, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা সংক্রান্ত আইন, সন্ত্রাসবাদ দমন আইন ও মানহানি আইনের অপপ্রয়োগ রোখার পাশাপাশি বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার ও নজরদারি সংক্রান্ত পুলিশি ক্ষমতা কমানোরও সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

৪) নাগরিক স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে রাষ্ট্রসংঘের তরফে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব দল ও প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। যে প্রতিষ্ঠানগুলি নির্বাচন পরিচালনা ও পর্যবেক্ষণ করে, তাদের সক্ষমতা বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা ঠিক নয় বলেই মন্তব্য করা হয়েছে। যদিও অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করার পথে, এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

৫) আর্থিক সুশাসনের পরামর্শ দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ-সহ দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার জন্য আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্নীতি দমনসংক্রান্ত আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। যাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, বিশেষ করে উচ্চপদের কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের বিচার করতে হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনের সদস্যদের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে রাষ্ট্রসংঘের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমে’র প্রতিবেদনে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য