স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৯ নভেম্বর: ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ২৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।বৃহস্পতিবার এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।ইসরায়েল ও ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ লেবাননে যুদ্ধবিরতি শুরু করার একদিন পর গাজায় আবারও উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের প্রাণঘাতী অভিযানের পর প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরু করে। পরেপর থেকে গত ১৩ মাস ধরে চলা যুদ্ধে ২৩ লাখ মানুষের বসতি গাজা উপত্যকা একদম ধ্বংস হয়ে গেছে।
“আমি আশা করি লেবাননের মত আমাদেরও যুদ্ধবিরতি হবে। আমি আমার পরিবার নিয়ে নিজের জন্মভূমিতে নিরাপদে বাঁচতে চাই,” বলেছেন গাজার এক বাস্তুচ্যুত নারী আমাল আবু হামিদ।দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোকে আশ্রয় দেওয়া একটি স্কুলের আঙিনায় বসে তিনি রয়টার্সকে আরও বলেন, “আল্লাহ চাইলে যুদ্ধবিরতি হবে।”“যুদ্ধের আগে জীবন সুন্দর ছিল … এখন কিছুই সুন্দর নেই, সব শেষ। আমাদের বাড়িঘর, আমাদের ভাইয়েরা, আর কেউ বেঁচে নেই। দিনে কোনোরকম একবেলা খাবার পাই। এখন তো রুটিও জুটছে না,” খুব আক্ষেপ করে বলেন আবু হামিদ।
মঙ্গলবার লেবাননে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি এখন গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য আবারও নতুন করে চেষ্টা শুরু করবেন।যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য কয়েক মাসের প্রচেষ্টায় খুব কম অগ্রগতি হয়েছে এবং আলোচনা এখন স্থগিত রয়েছে।ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূল করার লক্ষে গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে প্রায় ৪৪ হাজার ২০০ মানুষ নিহত এবং ছিটমহলের প্রায় সব জনগোষ্ঠী অন্তত একবার হলেও বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে গাজার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। অঞ্চলটি বর্তমানে বিস্তীর্ণ অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, গাজায় নিহতদের অন্তত ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।তিনি বলেন, গত সাত সপ্তাহ ধরে গাজার উত্তর প্রান্তে চলমান ইসরায়েলি হামলায় ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।উত্তর গাজা উপত্যকায় বেইত লাহিয়ায় কামাল আদওয়ানের একটি বাড়িতে ও হাসপাতালের কাছে দুটি পৃথক বিমান হামলায় ছয়জন এবং দক্ষিণে খান ইউনিসে একটি মোটরসাইকেল বোমা হামলায় আরও চারজন নিহত হয়েছেন।
গাজা উপত্যকার আটটি ঐতিহাসিক শরণার্থী শিবিরের একটি নুসেইরাতের একটি বহুতল ভবন ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েলি বিমানগুলো। মসজিদের বাইরের রাস্তাগুলোতেও বেশ কয়েকটি বিমান হামলা চালিয়েছে সেনারা। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন।রয়টার্সের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তাদের বাহিনী ‘গাজা উপত্যকায় অভিযান পরিচালনার অংশ হিসেবে হামাসের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা অব্যাহত রেখেছে’।বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মিসরের সীমান্তবর্তী রাফাহ শহরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আরও গভীরে প্রবেশ করেছে ট্যাংকগুলো।