Saturday, April 20, 2024
বাড়িবিশ্ব সংবাদইমরান খান: রাজনীতির খেলায় হেরে ক্ষমতা থেকে বিদায়

ইমরান খান: রাজনীতির খেলায় হেরে ক্ষমতা থেকে বিদায়

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১০ এপ্রিল।  অনেক নাটকীয়তার পর মধ্যরাতে পার্লামেন্টে হওয়া আস্থাভোটে হেরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রিত্বের পাট চুকাতে হল ইমরান খানকে।আরও একবার মেয়াদ শেষ করতে না পারা এক প্রধানমন্ত্রীকে দেখল দেশটি, বছর চারেক আগে যিনি ‘দুর্নীতিমুক্ত নয়া পাকিস্তানের’ স্বপ্ন দেখিয়ে মসনদে বসেছিলেন; তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের শীর্ষনেতা সেই ইমরানকে রোববার রাজনীতির খেলায় হেরে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, সদ্য ক্ষমতা হারানো তার সরকারকে মনে রাখা হবে মূলত দেশের অর্থনীতির অবস্থা আরও সঙ্গীন করে তোলার জন্য; তারা যে একইসঙ্গে দেশটির রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর আস্থাও হারিয়ে ফেলেছিল, তার ইঙ্গিতও ছিল স্পষ্ট।উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, ক্রমবর্ধমান ঘাটতি আর নির্বাচনী প্রচারে দেওয়া দুর্নীতি নির্মূলের প্রতিশ্রুতি ইমরান রাখতে পারছেন না এমন ধারণায় তাকে ঘিরে অনেক পাকিস্তানির ঘোর সাম্প্রতিক সময়ে কেটে যাচ্ছিল। ক্ষমতাসীন জোটে ভাঙনে অনেকের তা-ই মনে হয়েছে।ক্ষমতা হারালেও ইমরান খুব দ্রুত রাজনীতির মাঠ থেকে হারিয়ে যাবেন বলে মনে হচ্ছে না।সুপ্রিম কোর্ট পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করে আইনপ্রণেতাদের আস্থাভোটে অংশ নেওয়ার আদেশ দেওয়ার পর ইমরানের এক সহযোগী উচ্চ আদালতের এ পদক্ষেপকে ‘বিচারিক অভ্যুত্থান’ অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন। আর ইমরান বলেছিলেন, তিনি ‘শেষ বল’ পর্যন্ত লড়বেন।

৬৯ বছর বয়সী এ পিটিআই নেতা যুক্ত হলেন পাকিস্তানের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর সেই দীর্ঘ তালিকায়, যারা তাদের মেয়াদ শেষ করতে পারেনি।১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পর দেশটির কোনো প্রধানমন্ত্রীই তার মেয়াদ পূরণ করতে পারেনি; ইমরান যুক্ত হওয়ায় দলটি ভারী হলেও এক জায়গায় তার সমকক্ষ আর কেউ নেই; এর আগে দেশটির কোনো প্রধানমন্ত্রীকেই আস্থাভোটে হেরে গদি ছাড়তে হয়নি।পাকিস্তানকে ১৯৯২ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক ইমরান ২০১৮ সালে দুর্নীতিমুক্ত, সমৃদ্ধ, বিশ্বের কাছে শ্রদ্ধা পাওয়ার মতো দেশ গড়ার স্বপ্ন হাজির করে বিপুল সংখ্যক মানুষের মন জয় করে নিয়েছিলেন।কিন্তু তুখোড় জাতীয়তাবাদী হিসেবে খ্যাতি আর ক্যারিশমা তাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে যথেষ্ট হল না।

পাকিস্তানের প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর ছায়ায় থাকা নিয়ে একসময় প্রচুর সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছিল ইমরানকে; কিন্তু পিটিআই নেতার ক্ষমতাচ্যুতির পর এখন তার সঙ্গে সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার সম্পর্ক খারাপ হওয়ার প্রসঙ্গই আলোচনায় বেশি আসছে।পাকিস্তানের রাজনীতিতে ব্যাপক ক্ষমতাশালী সেনাবাহিনী দেশটির ইতিহাসের প্রায় অর্ধেককাল নিজেরাই শাসন করেছে; দেশটির বড় বড় অনেক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানও তাদেরই নিয়ন্ত্রণে।

সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী বারবারই রাজনীতিতে তারা যে ‘হস্তক্ষেপ’ করে না তা বলতে হচ্ছিল।

গত মাসে এক সমাবেশে ইমরান সেনাবাহিনীর এই ‘নিরপেক্ষ’ থাকার ভানের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন।

বলেছিলেন, “কেবল পশুরাই নিরপেক্ষ থাকতে পারে।”“তাদেরকে ইমরানের সমর্থক হিসেবে দেখা হোক এমনটা চায়নি সেনাবাহিনী; তার ব্যর্থতার জন্য তাদেরকেও দায়ী করা হোক, সেটাও চায়নি,” সেনাবাহিনী আর ইমরানের সম্পর্ক নিয়ে বলছিলেন বিরোধীদলের নেতা ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাস।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য