Tuesday, October 8, 2024
বাড়িবিশ্ব সংবাদলেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে টহলরত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের দায়িত্ব কী?

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে টহলরত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের দায়িত্ব কী?

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১ অক্টোবর: ইসরায়েল দক্ষিণ লেবাননের আক্রমণ করার পর ১৯৭৮ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে থাকা দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের মোতায়েন করা হয়।এই শান্তিরক্ষী বাহিনীটি ‘ইউএন ইন্টেরিম ফোর্স ইন লেবানন’ বা ইউএনআইএফআইএল নামে পরিচিত। প্রতি বছর জাতিসংঘের ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ বাহিনীটির দায়িত্ব পুনর্নির্ধারণ করে দেয়।২০০৬ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে লেবাননের হিজবুল্লাহ বাহিনীর মাসব্যাপী যুদ্ধের পর নিরাপত্তা পরিষদ ১৭০১ প্রস্তাব গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে ইউএনআইএফআইএল দায়িত্ব বিস্তৃত করে।

ব্লু লাইন কী?

ব্লু লাইন হল জাতিসংঘের বেঁধে দেওয়া একটি লাইন যা লেবাননকে ইসরায়েল ও ইসরায়েল অধিকৃত গোলান মালভূমি থেকে পৃথক করেছে। ২০০০ সালে দক্ষিণ লেবানন থেকে চলে যাওয়া ইসরায়েলি বাহিনী ব্লু লাইনের অপর পাশে অবস্থান নেয়। যে কোনো পক্ষ থেকে অনুমোদনবিহীনভাবে স্থলপথে বা আকাশপথে ব্লু লাইন পার হলে তাকে নিরাপত্তা পরিষদের ১৭০১ প্রস্তাবের লঙ্ঘন বলে ধরা হয়।

শান্তিরক্ষীরা কোথায় কাজ করে?

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের কাজের নির্ধারিত এলাকা হল উত্তরে লিটানি নদী থেকে দক্ষিণে ব্লু লাইন পর্যন্ত। ইউএনআইএফআইএল মিশনের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বাহিনীটিতে ৫০টি দেশের ১০ হাজারের বেশি সেনা ও প্রায় ৮০০ বেসামরিক কর্মী আছে।

১৭০১ প্রস্তাবনায় কী বলা হয়েছে?

এতে শান্তিরক্ষীদের তাদের দায়িত্বের অধীনে থাকা এলাকাটি লেবাননের রাষ্ট্রীয় বাহিনী বাদে অন্য অস্ত্রশস্ত্র ও সশস্ত্র ব্যক্তিদের থেকে মুক্ত রাখতে লেবাননের সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার কথা বলা হয়েছে।এতে লেবাননের ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনী হিজবুল্লাহর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাঁধে। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে দেশটির সেনাবাহিনীর উপস্থিতি সত্ত্বেও হিজবুল্লাহই কার্যকরভাবে অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করে। হিজবুল্লাহ ব্যাপকভাবে অস্ত্র সজ্জিত একটি মিলিশিয়া বাহিনী আর তারা লেবাননের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক শক্তি।১৭০১ প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে শান্তিরক্ষা মিশন ‘তাদের দায়িত্বাধীন এলাকাটি কোনো ধরনের শত্রুতামূলক তৎপরতার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে না, এটি নিশ্চিত করার জন্য তাদের আওতার মধ্যে থাকা সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে’।

১৭০১ প্রস্তাবের লঙ্ঘন শান্তিরক্ষীরা কীভাবে মোকাবেলা করে?

শান্তিরক্ষা মিশনটিকে সব ধরনের লঙ্ঘনের বিষয়টি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রতিবেদন জমা দিতে হয়। জাতিসংঘ মহাসচিব প্রতি চার মাসে একবার ১৭০১ প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের কাছে প্রতিবেদনগুলো তুলে ধরেন। তবে তিনি প্রয়োজন মনে করলে যে কোনো সময় প্রতিবেদনগুলো নিরাপত্তা পরিষদের নজরে আনতে পারেন।

ইউএনআইএফআইএল এর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, শন্তিরক্ষীরা ব্লু লাইন পর্যবেক্ষণ করার সময় লঙ্ঘন প্রতিরোধ করার জন্য সমন্বয়, যোগাযোগ ও টহল দেওয়ার মাধ্যমে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন।যখনই কোনো ঘটনা ঘটে ‘তখনই দুই পক্ষের মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষ এড়াতে ও পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নিশ্চত করতে ইউএনআইএফআইএল প্রয়োজন হলে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে’।এই মিশন ‘উত্তেজনা আর বাড়তে না দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে’ ইসরায়েলি ও লেবাননি সামরিক বাহিনীর সঙ্গেও যোগাযোগ করে।

লঙ্ঘন

জাতিসংঘের মহাসচিব নিয়মিতভাবে উভয়পক্ষের দ্বারা ১৭০১ প্রস্তাব লঙ্ঘনের প্রতিবেদন দিচ্ছেন।২০২২ এর নভেম্বরে নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের বাইরে হিজবুল্লাহ ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অননুমোদিত অস্ত্রের স্ব-স্বীকৃত রক্ষণ অব্যাহত আছে যা ক্রমাগত গুরুতর লঙ্ঘন।”এই একই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, “ইসরায়েলি আকাশযান ও ড্রোনের লেবাননের আকাশসীমার অব্যাহত লঙ্ঘন গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে আছে।”জাতিসংঘের প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা যায়, ওই এলাকায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের চলাচলও নিয়মিতভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।সর্বশেষ চলতি বছরের জুলাইয়ে মহাসচিব নিরাপত্তা পরিষদের কাছে যে প্রতিবেদন দিয়েছেন তাতেও ওই সবগুলো বিষয়ই উল্লেখ করা হয়েছে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য