স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ৩০ মে; হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জাতিসংঘের উদ্যোগে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র অংশ নিতে রাজি নয়। দেশটির এক কর্মকর্তা এ কথা বলেছেন। আজ বৃহস্পতিবার এ শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা।চলতি মাসের শুরুর দিকে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহত হন ইব্রাহিম রাইসি। কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধান যদি দায়িত্বরত অবস্থায় মারা যান, তবে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ১৯৩টি সদস্যদেশের প্রতিনিধিরা আনুষ্ঠানিকভাবে মিলিত হয়ে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে থাকেন।জাতিসংঘে আজকের অনুষ্ঠানে রাইসিকে স্মরণ করে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধির বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘কোনোভাবেই আমরা এ আয়োজনে অংশ নেব না।’এর আগে এ ধরনের অনুষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের বর্জন করার কোনো খবর জানা যায়নি।নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ইরানি মিশন এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
কট্টরপন্থী রাইসিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনির সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচনা করা হতো। ১৯ মে দেশটির আজারবাইজান সীমান্তের কাছে পার্বত্য এলাকায় তাঁকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়।ওই মার্কিন কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘জাতিসংঘের উচিত ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়ানো, তাদের দীর্ঘদিনের ‘‘নিপীড়ককে’’ স্মরণ করা নয়। ১৯৮৮ সালে বিচারবহির্ভূতভাবে হাজারো রাজনৈতিক বন্দীকে হত্যা করাসহ অসংখ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত ছিলেন রাইসি।’রাইসিসহ ওই হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় আরও যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের স্মরণে ২০ মে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে কিছুক্ষণের জন্য নীরবতা পালন করা হয়। জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন উপরাষ্ট্রদূত রবার্ট উড অনিচ্ছা সত্ত্বেও অন্য সদস্যদেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নীরবতা পালনের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন।
তবে রাইসির মৃত্যুতে আনুষ্ঠানিকভাবে শোক জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০ মে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এ কথা জানায়। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মুখপাত্র জন কারবিও সেদিন বলেছিলেন, ‘এ ব্যক্তির (রাইসি) হাতে যে প্রচুর রক্তের দাগ ছিল, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই।’রাইসির মৃত্যুর ঘটনায় ইরানের প্রতি সমবেদনা জানানোর কারণে রিপাবলিকান সদস্যরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন।২০২১ সালে ৬৩ বছরের রাইসি ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। দায়িত্ব পালনকালে তিনি ইরানে নৈতিকতা–সংক্রান্ত আইন কঠোর করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাঁর শাসনকালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর রক্তক্ষয়ী দমনপীড়নের ঘটনা ঘটেছে।