স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৯ মার্চ। পূর্ব উপকূলের দুই রাজ্যে ব্যাপক বন্যার কারণে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।বুধবার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের নর্দান রিভার্স এলাকা পরিদর্শনের পর মরিসন বলেন, “এইসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অস্ট্রেলিয়া বসবাসের জন্য একটি কঠিন দেশ হয়ে যাচ্ছে।”
জরুরি অবস্থা জারির কারণে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়িয়ে দুর্গত এলাকাগুলোয় ত্রাণ সরবরাহের গতি বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। রেকর্ড বৃষ্টির পর নিউ সাউথ ওয়েলস ও কুইন্সল্যান্ডে দেখা দেওয়া ওই দুর্যোগ এখন পর্যন্ত ২১ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, দুই সপ্তাহ ধরে কয়েক হাজার ঘরবাড়িও প্লাবিত হয়ে আছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
দুর্গত এলাকার বাসিন্দাদের সহায়তায় দ্রুতগতিতে কাজ না করায় দেশটির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলোকে ব্যাপক ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। এখন জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করায় তা কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষগুলোকে বন্যাদুর্গত অঞ্চলে সরাসরি হস্তক্ষেপের সুযোগ করে দেবে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী বুধবার লিসমোর শহরে জরুরি অবস্থা জারির বিষয়টি জানান এবং শহরটি ‘৫০০ বছরে একবার হয় এমন দুর্যোগ’ সহ্য করেছে বলে মন্তব্য করেন।বন্যায় কয়েকদিন আগেই শহরটিতে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।অস্ট্রেলিয়ায় ২০১৯-২০ সালের দাবানলের পর দুর্গত এলাকায় সাহায্য ও সহযোগিতা পাঠানোর ক্ষেত্রে ‘লাল ফিতার দৌরাত্ম কমাতে’ এই জাতীয় জরুরি অবস্থা জারির ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে বলে জানান মরিসন।জরুরি অবস্থা ঘোষিত হওয়ায় বন্যাদুর্গত স্থানীয়রা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো অতিরিক্ত ত্রাণ সাহায্য নেওয়ার সুযোগ পাবে এবং শহরগুলো পরিষ্কারে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদেরও বিস্তৃত আকারে মোতায়েন করা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
লিসমোরে গিয়ে কিছু স্থানীয় ও জলবায়ু পরিবর্তনবিরোধী কর্মীর বিরূপ অভ্যর্থনার স্বীকার হন মরিসন। তারা এ বন্যাকে ‘জীবাশ্ম জ্বালানি বন্যা’ অভিহিত করে শ্লোগান দেয়। বন্যাদুর্গত অনেক এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা কর্তৃপক্ষের তুলনায় স্বেচ্ছাসেবকদের উপরই বেশি নির্ভর করছে, অনেক মানুষকেই এখনও অস্থায়ী বাসস্থান বা গাড়িতে দিন কাটাতে হচ্ছে।“বৃষ্টির মধ্যে দুই বছরের একটি শিশু ও ৭ প্রাপ্তবয়স্কের সঙ্গে এক ছাদে আমরা ১৬ ঘণ্টা আটকে ছিলাম,” কয়েকদিন আগে এবিসিকে এমনটাই বলেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা স্টেসি গর্ডন।অনেক এলাকায় এখন বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও সিডনি নর্থের মতো কিছু এলাকায় এখনও বড় ধরনের বন্যা সতর্কতা বিদ্যমান; মঙ্গলবার শহরটি ব্যাপক বন্যার সাক্ষী হয়েছিল।জরুরি অবস্থা কার্যকর হতে হলে রাজ্যগুলোর গভর্নর ও অস্ট্রেলিয়ার গভর্নর জেনারেলের স্বাক্ষর লাগবে, এসব স্বাক্ষর শুক্রবার নাগাদ হয়ে যাবে বলেই আশা মরিসনের।