স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১ মে: লেবাননের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে কয়েকশ শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে এই প্রথম দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমন্বিত প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হল। অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন। রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাজধানী বৈরুত ও অন্যান্য এলাকার ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থী, সাবেক শিক্ষার্থী ও অন্য লেবাননিরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। তারা ফিলিস্তিনি পতাকা দুলিয়ে ও পোস্টার প্রদর্শন করে প্রতিবাদ জানায়। পোস্টারগুলোতে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে এমন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানানো হয়।
দেড়শ বছরের পুরনো আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুত (এইউবি) এর শিক্ষার্থী রায়ান কিলানি (২১) জানান, ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানানোর কারণে তাদের ডিগ্রি নিয়ে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে জেনেও শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলেন, “গাজার ফিলিস্তিনিরা ও গাজার শিক্ষার্থীরা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়, তাদের জীবন ও পরিবার হারিয়েছে। তাদের দিকে তাকিয়ে একটি ডিগ্রি আমাদের কাছে নদী থেকে সাগর পর্যন্ত স্বাধীন ফিলিস্তিনের তুলনায় কিছুই না। অবশ্যই আমরা যুক্তরাষ্ট্রের, নির্দিষ্ট করে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদে অনুপ্রাণিত হয়েছি।”
আরব বিশ্বের বেশিরভাগ অংশে গাজাপন্থি বিক্ষোভের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। শুধু লেবাননে ফিলিস্তিনি উপদলগুলো ও তাদের মিত্র লেবাননি সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ কিছু বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। এইউবিতে প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের একটি চত্বরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। এখানে দুই ঘন্টার জন্য তাদের প্রতিবাদ করার অনুমতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা কর্মীরা প্রতিবাদকারীদের ও সাংবাদিকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আর কোথাও প্রবেশ করতে দেয়নি। লেবাননের আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী কিছু সময়ের জন্য ‘যুক্তরাষ্ট্রের পতন হোক’ বলে শ্লোগান দেয়।
শিক্ষার্থী আলি আল-মুসলেম (১৯) বলেন, “পুরো বিশ্বকে আমরা দেখাতে চাই যে আমরা ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা ভুলে যাইনি আর তরুণ প্রজন্ম সচেতন ও সংস্কৃতিমান, তারা এখনও ফিলিস্তিনিদের আন্দোলনের সঙ্গে আছে।” মঙ্গলবার আম্মানের জর্ডান বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে একটি অবস্থান ধর্মঘটের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, কিন্তু পরে তা প্রত্যাহার করা হয়। তবে এদিন বিকালে আম্মানে ইসরায়েলের দূতাবাসের কাছে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। সোমবার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তিউনিসিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ও রাজধানীর সড়কপথে বিক্ষোভ করেছে দেশটির শিক্ষার্থীরা। এর পাশাপাশি বহু মানুষ ফরাসি দূতাবাস ও রাজধানীর নাট্যশালার কাছে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।