স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৮ এপ্রিল: রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেইনকে আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব রেখে উত্থাপিত একটি বিল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে ভোটাভুটির আগে দিয়ে ওই বিলটি অনুমোদন দেওয়ার আর্জি জানিয়ে ইউক্রেইনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শামিহাল।তিনি বলেন, যদি যুদ্ধে ইউক্রেইন হেরে যায় তবে ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’ শুরু হয়ে যাবে।বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন প্রস্তাবিত ওই বিলটি দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেসে আটকে আছে। যেখানে কিইভের জন্য ৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের কথা বলা হয়েছে। আগামী শনিবার ওই বিলের উপর পুনরায় ভোটাভুটি হবে।বিলে কিইভের পাশপাশি ইসরায়েল ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সহায়তার প্রস্তাবও রয়েছে।বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে বিবিসির সঙ্গে কথা বলার সময় শামিহাল বলেন, “আগামীকাল নয়, আজ নয় বরং গতকালই আমাদের ওই অর্থের প্রয়োজন ছিল।“যদি আমরা প্রতিরক্ষা না করি…ইউক্রেইনের পতন হবে। আর তাতে বিশ্ব ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে এবং পুরো বিশ্বে নিরাপত্তার একটি নতুন ব্যবস্থা খুঁজে বের করার প্রয়োজন পড়বে।
“অথবা, সেখানে অনেক সংঘাত ছড়িয়ে পড়বে, অনেক ধরণের যুদ্ধ এবং দিন শেষ ওইসব যুদ্ধ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।”রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নিজেদের সম্ভাব্য পরাজয়ের ফলাফল কী হতে পারে তা নিয়ে ইউক্রেইন অবশ্য এবারই প্রথম বিশ্বকে সতর্ক করছে না।গত বছর দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, যদি রাশিয়া যুদ্ধে জিতে যায় তবে তারা এরপর পোল্যান্ডে আক্রমণ করবে। যা তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধকে উসকে দেবে।তবে ইউক্রেইনের নেতাদের এসব সতর্কবার্তা উড়িয়ে দিয়ে ক্রেমলিনের কর্মকর্তারা বলেছেন, পশ্চিমারা এসব বলে ভীতি ছড়াচ্ছে।গত মাসেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার দেশ পূর্ব ইউরোপে আক্রমণ করবে বলে যে গুঞ্জন ছড়িয়েছে তা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, এগুলো ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা’। রাশিয়া কখনও নেটো জোটভুক্ত দেশে আক্রমণ করবে না।নেটো সংবিধান অনুযায়ী, সদস্যভুক্ত কোনো দেশ আক্রান্ত হওয়ার অর্থ নেটোকেই আক্রমণ করা এবং পশ্চিমা এ সামরিক জোট তখন পূর্ণ শক্তি দিয়ে ওই আক্রামণ প্রতিহত করবে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে ইউক্রেইনকে সহায়তা বিল মূলত আটকে যাচ্ছে রিপাবলিকান দলের ডানপন্থি আইনপ্রণেতাদের কারণে। তাদের বেশ কয়েকজন তাদের আপত্তির কারণ ব্যাখ্যায় বলেছেন, বিদেশে সহায়তা হিসেবে লাখ লাখ ডলার না পাঠিয়ে বরং আগে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তহবিল পাঠানো উচিত।বুধবার এক বিবৃতি এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, কংগ্রেসে পাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি ওই সহায়তা প্যাকেজে অনুমোদন দিতে সই করবেন।“যাতে আমরা বিশ্বকে এই বার্তা দিতে পারি যে, আমরা আমাদের মিত্রদের পাশে আছি।”রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে ইউক্রেইন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের অস্ত্র সরবরাহের উপর দারুণভাবে নির্ভরশীল। কংগ্রেসে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বিলটি কয়েক মাস ধরে আটকে থাকার প্রভাব এরই মধ্যে ইউক্রেইন যুদ্ধে পড়তে শুরু করেছে। কিউভ জানিয়েছেন, তাদের যুদ্ধাস্ত্র দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।