স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৩ মার্চ : রাতের অন্ধকারে আকাশের বুক চিরে ধেয়ে আসছে ক্ষেপণাস্ত্র। একটা-নয় একাধিক। সেই দৃশ্য স্পষ্ট ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ে সমুদ্রের ধার ঘেঁষা জ়াপোরিজ়িয়ার নিপ্রো হাইড্রোইলেকট্রিক প্ল্যান্টে। সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ। আগুনের কুণ্ডলী ঢেকে ফেলে আকাশ।
গত কাল রাতভর ইউক্রেনে হামলায় চালিয়েছে ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনী। কমপক্ষে ৯০টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৬০টি ড্রোন এসে পড়েছে এ দেশের মাটিতে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি বলেন, ‘‘রুশ সন্ত্রাসবাদীরা কী করছে, তা গোটা বিশ্ব দেখতে পাচ্ছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র, জ্বালানি পরিষেবার লাইন, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, বাঁধ, সাধারণ জনবসতি, কিছুই রেহাই দিচ্ছে না ওরা।’’
নিপ্রো হাইড্রোইলেকট্রিক প্ল্যান্টের বাঁধটি ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় বাঁধ। হামলার জেরে বাঁধটি ভেঙে পড়ার কোনও আশঙ্কা দেখছেন না কর্তৃপক্ষ। তবে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের একটা বড় অংশ বিদ্যুৎহীন। লক্ষ লক্ষ মানুষ অন্ধকারে। বন্ধ জল পরিষেবা, অকেজো ঘরবাড়ি গরম রাখার ব্যবস্থা। ইউক্রেনের সব ক’টি বাঁধ পরিচালনার জন্য বিশেষ নেটওয়ার্ক রয়েছে। তারা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে— ‘‘ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় জলবিদ্যুৎ স্টেশনে আগুন ধরে গিয়েছে। আকাশপথে একাধিক হামলা চলেছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।’’
জ়াপোরজিয়াতেই ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ পরমাণু শক্তি কেন্দ্রটি রয়েছে। কেন্দ্রটি এখন রাশিয়ার দখলে, তবে এতে বিদ্যুৎ পরিষেবা যায় ইউক্রেনের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি থেকেই। ইউক্রেনের পরমাণু শক্তি দফতর সাবধান করে দিয়েছে, জ়াপোরজ়িয়ার কেন্দ্রটির নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রয়োজন। তা কোনও ভাবে ব্যহত হলে বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে। এই অবস্থায় ইউক্রেনকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে পোল্যান্ড, রোমানিয়া ও স্লোভাকিয়া। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশনীতি বিভাগের প্রধান জোসেফ বোরেল রুশ হামলার কড়া নিন্দা করে বলেছেন ‘ইউক্রেনের মানুষের উপরে নৃশংস হামলা চালিয়েই যাচ্ছে রাশিয়া’। শোনা যাচ্ছে, ১ লক্ষ সেনার একটি সুবিশাল বাহিনী তৈরি করছে ক্রেমলিন। আশঙ্কা ছড়িয়েছে, ফের বড় হামলার ছক কষতে পারে রাশিয়া।
এরই মধ্যে খবর মিলেছে, ১৯ মার্চ নৌবাহিনীর মহড়া চলাকালীন রাশিয়া ভুল বশত নিজেদের জাহাজেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ফেলে। এতে জাহাজের তিন কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। চার জন জখম।