স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২১ মার্চ : এবার ডিফফেকের শিকার ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। বেশ কয়েকটি ভিডিওতে তাঁর মুখ ব্যবহার করে অ্যাডাল্ট সাইটে আপলোড করার অভিযোগ উঠেছে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। আমেরিকার একটি কনটেন্ট ওয়েবসাইটে নাকি সেগুলো ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ সেই ভিডিওগুলো দেখেছেন। এই ঘটনায় অপরাধীদের শাস্তির পাশাপাশি মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন মেলোনি।
ইটালির প্রধানমন্ত্রীর আধিকারিক দাবি করেছেন, এক পর্ণ অভিনেতার সঙ্গে মেলোনির ডিফফেক ভিডিও বানিয়ে আমেরিকার একটি অ্যাডাল্ট সাইটে আপলোড করা হয়েছিল। মাসের পর মাস ধরে সেগুলোতে লক্ষ লক্ষ ভিউ হয়েছে। ২০২২ সালে ইটালির প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসেছিলেন মেলোনি। অভিযোগ, তারও আগে মেলোনির মুখ ব্যবহার করে ভিডিও বানিয়ে তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি বিষয়টি তাঁদের নজরে আসে। এর পরই কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। আদালতের দ্বারস্থ হন মেলোনি।
এই ঘটনায় বছর চল্লিশের এক ব্যক্তি ও তাঁর বাবার (৭৩) দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। বাবা ও ছেলে মিলে নাকি ওই ভিডিওগুলো বানিয়েছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দুজনের বিরুদ্ধেই মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে। যে মোবাইল থেকে ভিডিওগুলো আপলোড করা হয়েছিল তাঁর সূত্র ধরেই ওই দুজনের হদিশ মিলেছে।
জানা গিয়েছে, আগামী ২ জুলাই সাসারির একটি আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা রয়েছে মেলোনির। এই ঘটনায় ইটালির প্রধানমন্ত্রী ১ লক্ষ ইউরোর ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন। এনিয়ে মেলোনির আইনজীবী মারিয়া গিউলিয়া মারোঙ্গিউ জানিয়েছেন, জর্জিয়া মেলোনি যে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন সেটি যদি মঞ্জুর করা হয় তাহলে তা অন্য কাজে লাগানো হবে। তিনি ক্ষতিপূরণের গোটা অর্থ পুরুষের হিংসার শিকার এমন মহিলাদের জন্য তৈরি তহবিলে দান করে দেবেন। এই ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে তিনি আসলে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিতে চেয়েছেন। এই ধরনের ক্ষমতার অপব্যবহারের শিকার মহিলারা যাতে ভয় না পান এবং নির্দ্বিধায় নিজেদের অভিযোগ জানাতে পারেন তাই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইটালির আইন অনুসারে, কিছু নির্দিষ্ট মানহানির মামলা ফৌজদারি অপরাধ হিসাবে গণ্য হতে পারে। এবং তা প্রমাণিত হলে অপরাধীদের কারাদণ্ডও হতে পারে।
উল্লেখ্য, ডিপফেক হল একটি এআই প্রযুক্তি। যার মাধ্য়মে একজনের ভিডিওতে আরেকজন মুখ বা শরীরের যেকোনও অংশ খুব সহজেই পালটে ফেলা যায়। সেই ছবি বা ভিডিও দেখে আপাতভাবে বোঝাই যায় না এই ছবি বা ভিডিও আসল নয়, নকল। এমনকী, বদলে ফেলা যায় কণ্ঠস্বরও। ২০১৭ সালে রেডইট সোশাল মিডিয়ার হাত ধরে প্রথম প্রকাশ্য়ে আসে এই ডিপফেক প্রযুক্তি। যেখানে একবারে পালটে ফেলা হয়েছিল গাল গোডো, টেলর শিফট, স্কারলেট জহনসানের। আর তার পর থেকেই গোটা দুনিয়ায় ত্রাস হয়ে উঠেছে ডিফফেক। সাধারণ মানুষ থেকে নামকরা তারকারাও এর শিকার হচ্ছেন।