স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ৪ মার্চ: এডেন উপসাগরে হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার দুই সপ্তাহ পর শনিবার ডুবে গেছে ব্রিটিশ মালিকানাধীন পণ্যবাহী জাহাজ রুবিমার। হুতিরা এরপর আরও ব্রিটিশ জাহাজকে হামলার নিশানা করার হুমকি দিয়েছে।হুতি-পরিচালিত সরকারের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুসেইন আল এজ্জি এক্সে এক পোস্টে বলেছেন, “ইয়েমেন আরও ব্রিটিশ জাহাজ ডুবাবে। আর এর কোনওরকম পাল্টা জবাব কিংবা অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির ক্ষেত্রে ব্রিটেনের বিলই কেবল বাড়বে।”
ব্রিটেনকে দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, তারা ইয়েমেনে হামলা চালায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে গাজায় সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে চলমান অপরাধে মদদ দেয়।গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের মুখে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে লোহিত সাগরের জাহাজ চলাচল রুটে হামলা চালিয়েছে আসছে ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুতি গোষ্ঠী।ইয়েমেন সরকার জানায়, হুতি হামলায় ডুবে যাওয়ার আগে কয়েক দিন ধরেই ব্রিটিশ জাহাজ রুবিমার এডেন উপসাগরে ভাসছিল এবং এর ভেতরে পানি ঢুকছিল।
হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে বিভিন্ন জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা শুরুর পর এটিই প্রথম কোনও জাহাজ ডুবির ঘটনা। রুবিমার জাহাজে করে সার পরিবহন করা হচ্ছিল। ফলে জাহাজটি ডুবে যাওয়ায় পরিবেশ বিপর্যয়ের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।বাব আল-মান্দাব প্রণালির কাছাকাছি এডেন উপসাগরে হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া দুটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে রুবিমার বিধ্বস্ত হয়। ১০ দিন আগে ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছিল, জাহাজটি পানিতে ভাসছে এবং এর ২৪ জন নাবিককে উদ্ধার করা হয়েছে।গত ২১ ফেব্রুয়ারি বিবিসি-র হাতে আসা একটি ছবিতে দেখা গিয়েছিল, সামনের অংশ ডুবে গেলেও জাহাজটি তখনও পানির ওপর ভাসছিল।
সে সময় মালিকপক্ষ বলেছিল, জাহাজটিকে কাছাকাছি জিবুতিতে নিয়ে যাওয়া হবে। তবে তারপরও এটি ডুবে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। জাহাজটিতে সে সময় কেউ অবস্থান করছিল কি না তা জানা যায়নি। জাহাজটির মালিক গোল্ডেন অ্যাডভেঞ্চার শিপিং কোম্পানি। ব্রিটিশ বন্দর সাউদাম্পটনের ঠিকানা দেওয়া আছে এ সংস্থার। অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট সার বহন করা রুবিমার ডুবে যাওয়াকে ‘নজিরবিহীন পরিবেশ বিপর্যয়’ আখ্যা দিয়েছেন ইয়েমেন সরকারের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আওয়াদ বিন মুবারক।সাগরের পানিতে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ছড়িয়ে দক্ষিণাঞ্চলীয় লোহিত সাগরের প্রবাল প্রাচীর, উপকূলীয় ম্যানগ্রোভ, সামুদ্রিক জীবন ও বাস্তুতন্ত্রে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পরিবেশবাদী সংস্থা গ্রিনপিসও।