Sunday, February 16, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদচাপের মধ্যে জনসনের ৪ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার পদত্যাগ

চাপের মধ্যে জনসনের ৪ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার পদত্যাগ

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৪ ফেব্রুয়ারি। লকডাউনের মধ্যে পার্টি আয়োজনের ঘটনায় ঘরে-বাইরে চাপের মুখে থাকা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের চার জ্যেষ্ঠ সহকারী পদত্যাগ করেছেন।

বিবিসি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জনসনের কার্যালয়ের কমিউনিকেশনস ডিরেক্টর জ্যাক ডয়েল, হেড অব পলিসি মুনিরা মির্জা, চিফ অব স্টাফ ড্যান রোজেনফিল্ড ও সরকারের জ্যেষ্ঠ আমলা মার্টিন রেনল্ডসের ইস্তফা দেওয়ার খবর আসে।

বরিস জনসনের নেতৃত্ব নিয়ে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ভেতরেও প্রশ্ন বাড়ছে। এ অবস্থায় তার চার কর্মকর্তা পদত্যাগ করলেন।

জ্যাক ডয়েল বিবিসিকে বলেছেন, মুনিরা মির্জার পদত্যাগের কিছুক্ষণ পরই পদত্যাগ করেন তিনি। পরে পদত্যাগ করেন রোজেনফিল্ড ও রেনোল্ডস।ডয়েল তার কর্মীদের বলেছেন, দায়িত্বের দুই বছর পার করেই চলে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তারপারিবারিক জীবনে ভয়ানক প্রভাব পড়ছে।ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, চিফ অব স্টাফ রোজেনফিল্ড বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে পদত্যাগের কথা জানান। তবে নতুন কেউ দায়িত্ব না নেওয়া পর্যন্ত তিনি কাজ চালিয়ে যাবেন।

বরিসের প্রধান ব্যক্তিগত সচিবের দায়িত্ব পালন করে আসা রেনল্ডসও একই কাজ করবেন। তবে দায়িত্ব ছাড়ার পর তিনি ফরেন অফিসে আগের দায়িত্বে ফিরতে পারবেন।এ ঘটনায় জনসনের সমর্থক বেশ কয়েকজন এমপি টুইট করে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেছেন। তারা বলছেন, লকডাউনে পার্টির আয়োজন নিয়ে সু গ্রের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে যে ক্ষতি হয়েছে, তার মেরামতে কর্মী বাহিনীতে এই পরিবর্তন এনে প্রধানমন্ত্রী ‘সঠিক কাজটিই’ করেছেন।

হেড অব পলিসি মুনিরা মির্জা অবশ্য পদত্যাগ করেছেন অন্য কারণ দেখিয়ে। লেবার পার্টির নেতা কেইর স্টারমার সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী জনসন ‘মিথ্যা অভিযোগ’ তুলেছেন বলে মির্জার ভাষ্য।

পরপর গুরুত্বপূর্ণ চার শীর্ষ কর্মকর্তার পদত্যাগের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন লেবার পার্টির উপনেতা অ্যাঞ্জেলা রাইনার।জনসনের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ঊর্ধ্বতন উপদেষ্টা এবং সহকারীরা যখন ছেড়ে যাচ্ছেন, সম্ভবত এটাই আয়নার দিকে তাকানোর উপযুক্ত সময়। জনসন নিজেই সমস্যার মূল কিনা, তা বিবেচনা করার সময় এসেছে।কনজারভেটিভ পার্টির ইতিহাসে ৩০ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় জয় নিয়ে ২০১৯ সালে ক্ষমতায় আসেন বরিস জনসন।২০২০ সালের মে মাসে সারা দেশে লকডাউনের মধ্যে ডাউনিং স্ট্রিটের বাগানে মদের পার্টির আয়োজন হয়, যা ফাঁস হলে গত বছরের শেষ দিকে তুমুল সমালোচনায় পড়েন তিনি।

পার্টি নিয়ে জনসন নানা ধরনের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কোনো নিয়ম লঙ্ঘন করেননি বলেও দাবি করেছিলেন। আবার জনগণের কাছে তার ক্ষমাও চেয়েছেন।ডাউনিং স্ট্রিটের ঘটনা ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি অফিসে পার্টি এবং তার কোনো কোনোটিতে খোদ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের অংশগ্রহণের খবর নিয়ে গত বছরের শেষ দিকে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যমে শোরগোল শুরু হয়।বিষয়গুলো তদন্তের জন্য গত ডিসেম্বরে যুক্তরাজ্যের কেবিনেট সেক্রেটারি সিমন কেইসকে দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী জনসন।

কিন্তু কেবিনেট অফিসেই সেরকম একটি আয়োজন হয়েছিল- এমন ইঙ্গিত মেলার পর সিমন কেইস তদন্ত থেকে সরে দাঁড়ান এবং আরেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সু গ্রেকে তদন্তের দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়।জ্যেষ্ঠ এই কর্মকর্তা ১৬টি আলাদা জনসমাগমের ঘটনার তদন্ত করেছেন- যার তিনটির বিষয়ে সাধারণ মানুষ আগে জানতে পারেনি।সু গ্রের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড বিধিভঙ্গের এসব ঘটনার মধ্যে আটটি আলাদা তারিখের ১২টি ঘটনার বিষয়ে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ তদন্ত করছে।বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ও চাপের মুখে জনসনের দল কনজারভেটিভ পার্টির বেশ কয়েকজন এমপি-ও তার তার পদত্যাগ দাবি করেন। তারা দলের প্রধানের কাছে জনসনের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে চিঠিও দেন।বিষয়গুলো নিয়ে গত ২৬ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে এমপি’দের প্রশ্নোত্তর পর্বের মুখোমুখি হন প্রধানমন্ত্রী জনসন। সেখানে লকডাউনের মধ্যে পার্টি করা নিয়ে তাকে প্রশ্নবানে জর্জরিত হতে হয়। জনসন সেদিন পার্লামেন্টকে বলেন, ‘কোনো নিয়মই ভঙ্গ হয়নি’।পার্লামেন্টে জনসনের পদত্যাগের দাবি করেছিলেন লেবার নেতা স্টারমার। জবাবে ‘পদত্যাগ করবেন না’ বলে সাফ জানিয়ে দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য