স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৪ ফেব্রুয়ারি। মডার্নার এমআরএনএ কোভিড-১৯ টিকার উন্মুক্ত তথ্যউপাত্ত ব্যবহার করে আফ্রিকা মহাদেশে প্রথমবাররে মত এ প্রযুক্তির টিকা তৈরি করতে চলেছে দক্ষিণ আফ্রিকার কোম্পানি আফ্রিজেন বায়োলজিকস।
বৃহস্পতিবার আফ্রিজেনের কর্মকর্তাদের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, এ বছরের মধ্যেই মানবদেহে এ টিকার পরীক্ষমূলক প্রয়োগ শুরু করা সম্ভব হতে পারে। অনুমোদন পেলে এটাই হবে প্রথম টিকা যেটা বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত আরেকটি টিকার ওপর ভিত্তি করে প্রস্তুত করা এবং আগের টিকার উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠানের অনুমতি বা সহায়তা ছাড়াই তৈরি করা হয়েছে।
এছাড়া আফ্রিকা মহাদেশের প্রথম এমআরএনএ প্রযুক্তির টিকা হতে চলেছে এটি, যার পরীক্ষাগার পর্যায়ের নকশা, উন্নয়ন ও উৎপাদন সবই ওই মহাদেশে হয়েছে।
এর আগে এমআরএনএ কোভিড টিকা তৈরি করা মডার্না এবং ফাইজার-বায়োএনটেক তাদের প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের আহ্বান নাকচের পর গত বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দরিদ্র ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর কোভিড-টিকার প্রাপ্তি সহজ করতে একটি পাইলট প্রকল্প নেয়। সেজন্য আফ্রিজেনসহ একটি জোট তৈরি করে।
ডব্লিউএইচও এবং জোটের অংশীদাররা আশা করছে, তাদের এই জো ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর টিকা প্রাপ্তির বৈষম্য দূর করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রায়ত্ত্ব টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানি বায়োভ্যাক, ডব্লিউএইচওর ওই হাব থেকে প্রথম টিকা উৎপাদনের প্রযুক্তি পাবে। আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের কোম্পানিগুলোকেও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করতে রাজি হয়েছে আফ্রিজেন।কোভিড টিকা প্রস্তুতের জন্য প্রযুক্তি হস্তান্তরে ফাইজার ও মডার্নার সরাসরি সহযোগিতা অর্জনে ব্যর্থ হয়ে গত সেপ্টেম্বরে কেপ টাউনে ডব্লিউএইচওর তৈরি করা এই জোট এককভাবে পথ চলার সিদ্ধান্ত নেয়।এক্ষেত্রে মডার্নার টিকা বেছে নেওয়ার কারণ হল, তারা তাদের টিকার বিষয়ে সবচেয়ে বেশি তথ্যউপাত্ত উন্মুক্ত রয়েছে এবং তারা অঙ্গীকার করেছে, মহামারী চলার সময় তারা পেটেন্ট বা মেধাস্বত্ত্ব প্রয়োগের চেষ্টা থেকে বিরত থাকবে। তবে মহামারীর পর কী হতে তা স্পষ্ট করেনি মডার্না কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার আফ্রিজেনের ঘোষণার পর তাৎক্ষণিকভাবে মডার্নার পক্ষ থেকে কোন প্রতিক্রিয়া আসেনি।আফ্রিজেনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পেট্রো টারব্ল্যানশে বলেন, “আমরা মডার্নার টিকা নকল করিনি। আমারা আমাদের নিজস্ব প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করেছি, যেহেতু মডার্না আমাদের কোনো প্রযুক্তি দেয়নি।“আমরা মডার্নার সিকোয়েন্স ব্যবহার করে কাজটি শুরু করেছি, কারণ আমাদের দৃষ্টিতে এটেই ছিল সবচেয়ে ভালো সুযোগ। কিন্তু এটা মডার্নার টিকা নয়, এটা আফ্রিজেন এমআরএনএ হাবের টিকা।”জোহানেসবার্গের ইউনিভার্সিটি অব দ্য উইটওয়াটারস্ট্যান্ডের সহায়তায় এই টিকা প্রস্তুত করা সম্ভব হয়েছে বলেও জানান টারব্ল্যানচে।
তিনি বলেন, আফ্রিজেন একটি পরবর্তী প্রজন্মের এমআরএনএ টিকা উদ্ভাবনের ওপর কাজ করছিল, যা সংরক্ষণে বরফ শীতল তাপমাত্রার দরকার হবে না এবং আফ্রিকার পরিবেশের সঙ্গে যা মানানসই হবে।“আমরা এখন থেকে ছয় মাসের মধ্যে আমাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল, অর্থাৎ মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগে যেতে পারবো। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এ বছেরর নভেম্বর।”