স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩ ফেব্রুয়ারি। ইরান সমর্থিত হুতিদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকিয়ে দেওয়ার কয়েকদিনের মাথায় এবার ড্রোন হামলা প্রতিহত করার কথা জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
বুধবার স্থানীয় সময় সকালের দিকে তিনটি ড্রোন তাদের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ে; পরে জনমানবহীন এলাকার ওপর সেগুলোকে ‘নিস্ক্রিয়’ করে দেওয়া হয়, বলেছে তারা।এ নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহে উপসাগরের বাণিজ্যিক ও পর্যটন হাব খ্যাত আমিরাতে এ ধরনের চতুর্থ হামলা হল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।সোমবার ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের আমিরাত সফরের সময় হওয়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলাসহ আগের তিনটি হামলা চালিয়েছিল ইয়েমেনের ইরানঘনিষ্ঠ হুতিরা। সৌদি নেতৃত্বাধীন যে জোটের সঙ্গে হুতিদের যুদ্ধ চলছে, তাতে আমিরাতও আছে।
হুতিরা এখন পর্যন্ত তাদের নতুন কোনো হামলার ঘোষণা দেয়নি; অন্যদিকে স্বল্পপরিচিত গোষ্ঠী ‘ট্রু প্রমিজ ব্রিগেডস’ বুধবারের ড্রোন হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে বলে জানিয়েছে জিহাদিদের ওয়েবসাইট অনুসরণ করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গোষ্ঠী সাইট ইন্টিলিজেন্স। ট্রু প্রমিজ ব্রিগেডস’ এর আগে গত বছরের জানুয়ারিতে সৌদি আরবে একটি ড্রোন হামলা চালানোর দায় নিয়েছিল।মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে সৌদি আরব ওই অঞ্চলে ইরানের সঙ্গে যে কয়েকটি ছায়া যুদ্ধে লিপ্ত, তারমধ্যে ইয়েমেনের যুদ্ধও রয়েছে।সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ‘যে কোনো হুমকি মোকাবেলায় প্রস্তুত’ এবং দেশের সুরক্ষায় ‘প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা’ নেবে।এর আগে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছিল, হামলা মোকাবেলায় আমিরাতকে সহযোগিতায় উপসাগরীয় দেশটিতে যুদ্ধবিমান পাঠাচ্ছে তারা। গত কয়েক সপ্তাহে উপসাগরীয় দেশটিতে যে কয়েকটি হামলা হয়েছে, তার মধ্যে একটি হামলার লক্ষ্য ছিল দেশটিতে থাকা মার্কিন সেনাদের একটি ঘাঁটি।
১৭ জানুয়ারি অন্য এক হামলায় আবু ধাবিতে ৩ জন নিহতও হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র এ দেশটিতে এ ধরনের নজিরবিহীন হামলা গত ৭ বছর ধরে চলা ইয়েমেন যুদ্ধের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
হুতিরা সাধারণত ইয়েমেন সীমান্তের ভেতরে-বাইরে সৌদি বাহিনী ও স্থাপনার ওপর হামলা চালিয়ে আসছিল, কিন্তু গত মাসে আমিরাতের মদতপুষ্ট স্থানীয় বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু এলাকায় হুতিদের সঙ্গে লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়লে ইরানসমর্থিত গোষ্ঠীটি তাদের হামলার আওতা বাড়ায়।আমিরাতের ওপর হামলা নিয়ে তেহরান এখন পর্যন্ত সরাসরি কোনো মন্তব্য না করলেও তারা দীর্ঘদিন ধরেই ইয়েমেন সংকটের রাজনৈতিক সমাধান চেয়ে আসছে। বুধবার ইয়েমেন পরিস্থিতি নিয়ে ইরান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে ফোনে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।আমিরাত ২০১৯ সালেই ইয়েমেনে তাদের সামরিক উপস্থিতি অনেকখানি কমায়; সাম্প্রতিক সময়ে তারা অর্থনীতিকে অগ্রাধিকার দিয়ে তেহরানের সঙ্গে উত্তেজনা কমিয়ে আনারও চেষ্টা করছে।