স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৩ ডিসেম্বর: প্রায় দুই সপ্তাহের আলোচনা ও ভোটাভুটি নিয়ে কয়েক দিনের বিলম্ব শেষে গাজায় আরও ত্রাণ সহায়তা ঢুকতে দেওয়া নিয়ে শুক্রবার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।তবে প্রস্তাবে ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান’ জানানো হয়নি; বরং ‘লড়াই স্থায়ীভাবে বন্ধের জন্য একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার’ আহ্বান জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া প্রস্তাবনায় ভোটদানে বিরত থেকেছে।জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গাজা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) আনা এই খসড়া প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিটো ঠেকাতেই দীর্ঘ আলোচনা এবং ভোটাভুটিতে দেরি করা হয়েছিল।
প্রস্তাবনায় শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আনা হয়েছিল উল্লেখযোগ্য সংশোধনী। এরপরই যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবটি সমর্থন করার ইঙ্গিত দেয়। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র ভোটদানে বিরত থাকলেও প্রস্তাবে ভিটো দেয়নি। এতে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ প্রস্তাবটি পাস করতে পেরেছে।প্রথমে প্রস্তাবটিতে গাজায় অবিলম্বে লড়াইয়ের অবসান ঘটিয়ে অবাধে ত্রাণ ঢুকতে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। গাজায় ত্রাণ সরবরাহ একান্তভাবে জাতিসংঘের তদারকিতে রাখার ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয় এতে।
যুক্তরাষ্ট্র প্রথমত: প্রস্তাবে লড়াইয়ের ‘অবসান’ শব্দটি নিয়ে আপত্তি করায় পরে সেটি বাদ দেওয়া হয়। দ্বিতীয়ত: ত্রাণ সরবরাহ জাতিসংঘের তদারকিতে রাখার ব্যবস্থা নিয়েও যুক্তরাষ্ট্র আপত্তি তুললে সেটিও পরিবর্তন করা হয়।ভাষার এইসব সংশোধনীতে প্রস্তাবনাটি দুর্বল হয়ে পড়ায় নিরাপত্তা পরিষদের কয়েকটি সদস্যদেশ হতাশা প্রকাশ করেছে। এ মাসের শুরুর দিকে নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের ১৩ টি সদস্যদেশই গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান সম্বলিত প্রস্তাবকে সমর্থন দিয়েছিল।কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তাতে ভিটো দেয় এবং যুক্তরাজ্য ভোটদানে বিরত ছিল।
এবার ভোটাভুটিতে ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান’ ছাড়াই প্রস্তাবনা পাস হওয়ায় আরব এবং ইসলামিক সহযোগিতা সংগঠনের (ওআইসি) কিছু দেশের কূটনীতিকরা বলছেন, ইসরায়েলকে হামাসের বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা নিতে দেওয়ার জন্যই যেন এ প্রস্তাব পাস করা হয়েছে।গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার পর থেকে দুপক্ষের মধ্যে শুরু হওয়া যুদ্ধের দুই মাস পেরিয়েছে। এখন যুদ্ধ তীব্রতম পর্বে প্রবেশ করেছে।এ পরিস্থিতিতে গাজায় হামলা বন্ধ করা এবং গাজাবাসীর জন্য আরও মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর সুযোগ দিতে ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে।