Saturday, January 25, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদদুর্ভিক্ষের ঝুঁকির মুখে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দা

দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির মুখে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দা

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২২ ডিসেম্বর: ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের মধ্যে ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার সবাই বিপর্যয়কর ক্ষুধার মোকাবেলা করছে এবং দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জাতিসংঘ সমর্থিত এক সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।   ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্ল্যাসিফিকেশন (আইপিসি) এর বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী রেকর্ড করা সবচেয়ে বড় খাদ্য সংকট বা উচ্চ পর্যায়ের তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে গাজার বাসিন্দাদের একটি বড় অংশ।৭ অক্টোবর ইসরায়েলে গাজার শাসক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধাদের নজিরবিহীন হামলার প্রতিশোধ নিতে ফিলিস্তিনি ছিটমহলটিতে নির্মম সামরিক অভিযান শুরু করে তেল আবিব। তাদের অবিরাম বিমান হামলা ও স্থল আক্রমণে গাজার বিস্তৃত এলাকা ধূলায় মিশে যায়। টানা আড়াই মাস ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ২০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও ৮০ শতাংশের বেশি বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে।গাজা অবরুদ্ধ করে রেখে সেখানে খাবার, পানি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে পড়ার মুখে রাফাহ ক্রসিং দিয়ে মিশর থেকে গাজায় ট্রাকযোগে কিছু ত্রাণ পাঠানো শুরু হয়েছে। এসব ট্রাকে করে খাবার, পানি ও ওষুধ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।   কিন্তু জাতিসংঘ বলছে, যে পরিমাণ খাবার নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা গাজার বাসিন্দাদের প্রয়োজনের মাত্র ১০ শতাংশ পূরণ করতে পারবে যাদের অধিকাংশই বাস্তুচ্যুত হয়ে রয়েছে। “সেখানে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি আছে আর তা দিন দিন বাড়ছে। তীব্র শত্রুতা ও মানবিক ত্রাণ প্রবেশে বিধিনিষেধ বজায় থাকায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে,” আইপিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলা, তাদের দাবিমতো ত্রাণ যাচাই করার সুযোগ দেওয়া, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রাখা ও জ্বালানি সংকটের কারণে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। অপ্রতুল সরবরাহের মধ্যে গাজার কিছু বেপরোয়া বাসিন্দা ত্রাণ ট্রাকগুলোতে ঝাঁপিয়ে পড়ে খাবার ও অন্যান্য পণ্য ছিনিয়ে নেওয়া চেষ্টা করেছে। গাজার বাসিন্দারা গাধা জবাই করে সেগুলোর মাংস খাচ্ছে ও ক্ষীণ হয়ে পড়া রোগীরা চিকিৎসা সহায়তা চাইছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীর প্রধান অর্থনীতিবিদ ও গবেষণা পরিচালক আরিফ হুসেইন গাজার সংকটকে ‘নজিরবিহীন’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, “এই প্রতিবেদনটি আমাদের সবচেয়ে খারাপ শঙ্কাকেই নিশ্চিত করেছে।” রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “গত ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমি একাজ করছি। আমি আফগানিস্তানে গিয়েছি, ইয়েমেনে গিয়েছি, সিরিয়ায়, দক্ষিণ সুদানে, ইথিওপিয়ায়, নাইজেরিয়ার উত্তরপূর্বাঞ্চলে। কিন্তু কোথাও এতো দ্রুত পরিস্থিতি এমন খারাপ হতে দেখিনি।“যুদ্ধ এখন যেরকমভাবে চলছে তা যদি চলতে থাকে, যদি ত্রাণ সহায়তা যে পরিমাণ আসা উচিত তা না আসে, তাহলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে দুর্ভিক্ষ হবে। দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেও হতে পারে।”    গাজার প্রতি চারটি পরিবারের মধ্যে অন্তত একটি অর্থাৎ ৫ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ ইতোমধ্যে বিপর্যয়কর ক্ষুধার মোকাবেলা করছে, তারা তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছে আর অনাহারে থাকছে বলে আইপিসি দেখতে পেয়েছে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য