Sunday, January 26, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদগাজায় যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর চেষ্টার মধ্যেই পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি অভিযান

গাজায় যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর চেষ্টার মধ্যেই পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি অভিযান

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ৩০ নভেম্বর: গাজায় ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলার ষষ্ঠ দিনে নতুন করে সহিংসতার খবর এসেছে। অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহর এবং জেনিন শরণার্থী শিবিরে বড় ধরনের অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েল।গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও বাড়ানো নিয়ে কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের আলোচনা চলার মধ্যেই ইসরায়েল পশ্চিম তীরে এ অভিযান চালাল।

জেনিনের পরিস্থিতি সম্পর্কে ফিলিস্তিনের এক রাজনীতিবিদ মুস্তফা বিবিসি রেডিও ফোর কে জানান, ইসরায়েলি বাহিনী দুটি বাড়ি ধ্বংস করেছে এবং বহু জায়গা অবরুদ্ধ করে রেখেছে।জেনিনের দুটি বড় হাসপাতালে ঢুকছে ইসরায়েলি সেনারা। তারা জেনিনের শরণার্থী শিবিরেও ঢুকেছে। তারা সেখানকার অবকাঠামো ধ্বংস করছে। পরিস্থিতি খুবই ভয়ঙ্কর। তারা পুরো জেনিন এলাকাকে সামরিক এলাকা ঘোষণা করেছে।ইসরায়েলের অবরোধের কারণে জেনিনের হাসপাতালে দুই ঘণ্টারও বেশি সময়ধরে আটকা পড়ে আছে এমএসএফ এর দাতব্য চিকিৎসাকর্মী দল। তবে ইসরায়েল হাসপাতালের পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেনি।জেনিনে গুলিতে দুই শিশু নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। ওদিকে, ইসরায়েল পশ্চিম তীরের অভিযানে দুই নেতৃস্থানীয় ‘সন্ত্রাসীকে’ হত্যার দাবি করেছে।ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু আবারও তার অটল অবস্থান ব্যক্ত করে বলেছেন, পূর্ণ যুদ্ধবিরতি কখনওই হবে না। তার বাহিনী শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবে।

তিনি বলেন, “যুদ্ধের শুরু থেকেই আমি তিনটি লক্ষ্য স্থির করেছি। হামাসকে নির্মূল করা, আমাদের সব জিম্মিকে ফিরিয়ে আনা এবং ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্য গাজা আবার হুমকি হবে না সেটি নিশ্চিত করা।“কিন্তু সম্প্রতি কয়েকদিনে আমি একটি প্রশ্ন শুনছি: আমাদের জিম্মিদের ফেরানোর এই পর্যায় শেষের পর ইসরায়েল কি আবার লড়াইয়ে ফিরবে? স্পষ্টতই আমার উত্তর হচ্ছে, হ্যাঁ। এটাই আমার নীতি। গোটা ইসরায়েলি নিরাপত্তা মন্ত্রিপরিষদ, গোটা সরকার, সেনারা এর পক্ষে আছে। গণমানুষও এর পক্ষে আছে। তাই আমরা ঠিক এটাই করব।”ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে এই যুদ্ধবিরতি চলছে গত শুক্রবার থেকে। বুধবার গাজায় ছিল যুদ্ধবিরতির ষষ্ঠদিন। এই কয়দিনের যুদ্ধবিরতিতে মুক্তি পেয়েছে হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলি জিম্মিরাসহ ইসরায়েলের জেলে বন্দি বেশকিছু সংখ্যক ফিলিস্তিনি। গাজায় ঢুকেছে বেশ কয়েক ট্রাক ত্রাণ সাহায্যও।হামাসের হাতে আরও ১৬১ জন জিম্মি আছে বলে ধারণা ইসরায়েলের। তাদের মুক্ত করতে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও বাড়াতে দোহায় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতাকারীরা। তবে এর মধ্যেই গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এক জিম্মির পরিবারের মৃত্যু হওয়ার হামাসের দাবি আলোচনায় কালো ছায়া ফেলেছে।

হামাসের হাতে সপরিবারে জিম্মি হয়েছিল ইসরায়েলি বিবাসের পরিবার। হামাস বলছে, গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় বিবাস, তার স্ত্রী শিরি বিবাস এবং তাদের ৪ বছর ও ১০ মাস বয়সী ছেলে নিহত হয়েছে। হামাসের এই দাবির সত্যাসত্য তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।গত ৭ অক্টোবর গাজার সীমান্ত সংলগ্ন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের নজিরবিহীন হামলা সবাইকে হতবাক করে দেয় এবং সাধারণ ইসরায়েলিরা হতভম্ব হয়ে পড়ে।সেই হামলায় ১২০০ জন নিহত হয় এবং তাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক বলে ইসরায়েল জানিয়েছে। ওই দিন প্রায় ২৪০ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে গিয়ে জিম্মি করে রাখে হামাস।হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে প্রায় সবদিক থেকে গাজা অবরুদ্ধ করে ভয়াবহ আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল। তাদের অবিরাম বোমাবর্ষণ ও গোলা হামলায় ১৪ হাজারেরও বেশি গাজাবাসী ফিলিস্তিনি নিহত হয়, এদের প্রায় ৪০ শতাংশ শিশু।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য