Tuesday, January 21, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদগাজার অবস্থাকে হিটলারের ক্যাম্পের সঙ্গে তুলনা, ব্রিটেনে তদন্তের মুখে অধ্যাপক

গাজার অবস্থাকে হিটলারের ক্যাম্পের সঙ্গে তুলনা, ব্রিটেনে তদন্তের মুখে অধ্যাপক

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৯ নভেম্বর: গাজায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণকে জার্মানির কুখ্যাত ‘আউশউইৎজ’ ক্যাম্পের সঙ্গে তুলনা করে তদন্তের মুখে পড়েছেন ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউসিএল) এক শিক্ষক।লন্ডনে ফিলিস্তিনের পক্ষে এক সমাবেশে ওই মন্তব্য করেছিলেন ইউসিএলের নৃবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক অ্যালেক্স পিলেন।ইউসিএল বলছে, তারা কোনোভাবেই ইহুদি-বিদ্বেষ মেনে নেবে না। পিলেন ইউসিএলের নীতি লঙ্ঘন করেছেন কিনা, সেটি তদন্ত করে দেখা হবে।

৫৪ বছর বয়সী পিলেনের জন্ম বেলজিয়ামে। গত ১১ নভেম্বর প্রায় ৩ লাখ মানুষের এক সমাগমে গাজায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণকে আউশউইৎজ ক্যাম্পের সঙ্গে তুলনা করে গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি জানান তিনি।ইভনিং স্ট্যান্ডার্ডকে পিলেন বলেন, “মূলত এখানে আমার আসার কারণ হল, আমি মনে করি, যে অবস্থা চলছে, তা আসলেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা মানবতার অবমাননা। গাজায় আজ যা হচ্ছে, তা আউশউইৎজের চেয়ে খারাপ, বাগেন-বেইজেন বন্দিশিবিরের চেয়েও বাজে। এর অবস্থা দাহও ক্যাম্পের চেয়েও জঘন্য; লুবলিন ক্যাম্পের চেয়েও খারাপ।”ইসরায়েলের হামলাকে মানবতার জন্য লজ্জার মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমি এখানে আছি, কারণ আমি ব্রিটেনেই থাকি। গাজার যুদ্ধে বিবিসির অবস্থান নিয়ে আমি লজ্জিত। সংবাদমাধ্যমটি পক্ষপাতদুষ্ট। রাজনৈতিক একটি সংঘাতের প্রতি বিবিসি পক্ষপাতদুষ্ট।”

পিলেনের এই বক্তব্যের পর এক বিবৃতিতে ইহুদি বিদ্বেষের অভিযোগ তুলে নিন্দা জানায় ইউসিএল।ইউসিএলের প্রেসিডেন্ট ও প্রভোস্ট মাইকেল স্পেন্স বলেছেন, “আমরা সব ধরনের ইহুদি বিদ্বেষের নিন্দা করি এবং আমাদের কমিউনিটিকে স্পষ্ট করে দিয়েছি, ইউসিএলে এটা সহ্য করা হবে না…।“আমাদের কাছে আসা অভিযোগগুলো তদন্ত করছি। এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থাও নিচ্ছি।”দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুর দিকে ১৯৩৯ সালে পোল্যান্ডের ‘ওশপিয়েনসিম’ শহর দখল করে জার্মানি। পরের বছর সেখানে আউশউইৎজ বন্দিশালা খোলে নাৎসি বাহিনী। জার্মান অধিকৃত ইউরোপে যারা সেসময় নাৎসি বাহিনীর প্রভাব-প্রতিপত্তির বিরোধিতা করতেন, কিংবা জাতিগত বা রাজনৈতিকভাবে ‘গ্রহণযোগ্য’ বিবেচিত হতেন না, তাদের ধরে নিয়ে ওই শিবিরে আটকে রাখা হত।

আউশউইৎজ ছাড়াও পোল্যান্ডে লুবনিনসহ আরও কিছু ক্যাম্প গড়ে তোলা হয়। উত্তর জার্মানিতে বাগেন-বেইজেন ক্যাম্প ও দক্ষিণ জার্মানিতে দাহও ক্যাম্প গড়ে তোলে নাৎসি বাহিনী। এসব ক্যাম্পে জোরপূর্বক অমানবিক শ্রমে বাধ্য করা হত। বন্দিদের কৌশলে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হত।অ্যাডলফ হিটলারের প্যার‌্যা মিলিটারি বাহিনী ও পুলিশ ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে আউশউইৎজ ক্যাম্পে ১৩ লাখ মানুষকে বন্দি করে। এর মধ্যে ১১ লাখ মানুষই হত্যার শিকার হন।নাৎসি বাহিনীর এসব ক্যাম্পের সঙ্গে গাজার চিত্রকে তুলনা করেই তদন্তের মুখে পড়েছেন অধ্যাপক পিলেন। তবে তার বক্তব্য কাউকে আঘাত করলে তার জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি।এক বিবৃতিতে পিলেন বলেন, “আমি যুদ্ধ-সংঘাতের বিষয়ে একজন স্কলার। সব ধরনের বর্ণবাদ এবং ইহুদি বিদ্বেষের সম্পূর্ণ বিরোধিতা করি।… আমি বিশ্বাস করি, আমার কথাগুলো ইহুদি বিদ্বেষের সঙ্গে মেলানো হবে না।”

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য