Sunday, January 26, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদনাইজারে সম্ভাব্য হস্তক্ষেপের পরিকল্পনা পশ্চিম আফ্রিকার নেতাদের

নাইজারে সম্ভাব্য হস্তক্ষেপের পরিকল্পনা পশ্চিম আফ্রিকার নেতাদের

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,৫ আগস্ট: পশ্চিম আফ্রিকার নেতারা নাইজারের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে পুনর্বহাল করার যে সময়সীমা অভ্যুত্থানকারী জান্তাকে বেঁধে দিয়েছিলেন রোববার তা শেষ হচ্ছে; এই পরিস্থিতিকে সামনে রেখে দেশটিতে সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের পরিকল্পনা করা হয়েছে।পশ্চিম আফ্রিকার আঞ্চলিক জোট ইকোনমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস (ইসিওডব্লিউএএস) শুক্রবার জানিয়েছে, রোববারের মধ্যে অভ্যুত্থানের অবসান না ঘটানো হলে নাইজারে সামরিক হস্তক্ষেপ করতে একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছেন তাদের প্রতিরক্ষা প্রধানরা।গত ২৭ জুলাই নাইজারের প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ড বাহিনী রাজধানী নিয়ামের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বাজোমকে বন্দি করে অভ্যুত্থান ঘোষণা করে। পরে দেশটির সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থানে সমর্থন জানায়।

এর প্রতিক্রিয়ায় কঠোর অবস্থান নেয় ইসিওডব্লিউএএস। ব্লকটির নেতারা ৩০ জুলাই এক জরুরি বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকের পর দেওয়া বিবৃতিতে পশ্চিম আফ্রিকার নেতারা বলেন, যে কোনো ধরণের অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ইসিওডব্লিউএএস ‘জিরো টলারেন্স’ অবস্থান নিয়েছে।“যদি এক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের শর্তগুলো পূরণ করা না হয় তবে নাইজারের সাংবিধানিক শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে আঞ্চলিক ব্লকটি প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

যার মধ্যে হয়তো বল প্রয়োগের ব্যবস্থাও থাকবে।

সামরিক হস্তক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা করতে ‘শীঘ্রই’ সেনাপ্রধানরা আলোচনায় বসবেন বলেও ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছিল।ইসিওডব্লিউএএসের শান্তি, নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিশনার আব্দেল ফাতাউ মুসা জানিয়েছেন, প্রস্তুত করা সামরিক হস্তক্ষেপের পরিকল্পনা অনুযায়ী কখন এবং কোথায় আঘাত হানতে হবে সে সিদ্ধান্ত ব্লকভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানরা নেবেন আর তা অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রকারীদের কাছে প্রকাশ করা হবে না।নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজায় তিন দিনব্যাপী এক বৈঠক শেষে মুসা বলেন, “চূড়ান্ত কোনো হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটলে তাতে যেসব বিষয় থাকবে তা এ বৈঠকে ঠিক করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে কী কী উপাদান লাগবে এবং আমরা কখন ও কীভাবে বাহিনী মোতায়েন করবো তা।”বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ১৫ জাতির জোট ইসিওডব্লিউএএস যে বিকল্পই বেছে নেক না কেন তা বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র একটি অঞ্চলটিতে আরও সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি করবে, এখানে আগে থেকেই ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও আল কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কিত গোষ্ঠীগুলো চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি করে রেখেছে।

সামরিক হস্তক্ষেপের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জোটটি কী পরিমাণ সমর্থন পাবে বা তাদের কী পরিমাণ সমর্থন আছে তাও পরিষ্কার নয়। প্রতিবেশী শাদ ইসিওডব্লিউএএস জোটের অংশ নয়, কিন্তু দেশটি সামরিক নেতা প্রেসিডেন্ট ইদ্রিস ডেবি নাইজারের সঙ্কট সমাধানের প্রচেষ্টায় নেওয়া এক মধ্যস্থতা উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। চলতি সপ্তাহে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেনারেল ইয়াইয়া ব্রাহিম জানিয়েছেন, তারা সামরিক হস্তক্ষেপের সঙ্গে নেই।ইসিওডব্লিউএএস ইতোমধ্যেই নাইজারের ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। পাশাপাশি তারা বৃহস্পতিবার দেশটির রাজধানী নিয়ামেতে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ সমাধান প্রস্তাব’ দিয়ে একটি প্রতিনিধি দলও পাঠিয়েছে। কিন্তু ওই প্রতিনিধি দলের এক সদস্য জানিয়েছেন তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে এবং তারা সেখানে আর বেশিক্ষণ থাকবেন না।জোটের কমিশনার মুসা জানিয়েছেন, তারা চান কূটনীতি কাজ করুক এই কারণে এবং নাইজারের জান্তাকে সুযোগ দিতে তারা প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিলেন।শুক্রবার নাইজেরিয়ার সেনেটে পাঠ করা এক চিঠি থেকে জানা গেছে, দেশটির প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু তার সরকারকে সামরিক বাহিনী মোতায়েনসহ সব ধরনের বিকল্পের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। সেনেগাল জানিয়েছে, তারাও সেনা পাঠাবে।

কিন্তু নাইজারের জান্তা বাইরের হস্তক্ষেপের নিন্দা করে তারা এর বিরুদ্ধে লড়াই করবে বলে জানিয়েছে।নাইজারের অভ্যুত্থানের নেতা জেনারেল আবদুরাহমানে চিয়ানি (৫৯) আইভরি কোস্টে ২০০৩ সালের সংঘাতের সময় সেখানে হস্তক্ষেপ করা ইসিওডব্লিউএএস এর বাহিনীর ব্যাটেলিয়ন কমান্ডার হিসেবে কাজ করেছিলেন। তাই এ ধরনের হস্তক্ষেপ মিশন কেমন হতে পারে তা তিনি ভালোকরেই জানেন।প্রতিবেশী মালি ও বুরকিনা ফাসোর জান্তা সরকারও চিয়ানির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। উভয় দেশই জানিয়েছে, তারা নাইজারের প্রতিরক্ষায় এগিয়ে আসবে।এসব পরিস্থিতি ইসিওডব্লিউএএস এর প্রতিক্রিয়াকে দুর্বল করে তুলতে পারে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য