স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,,৬ মে: ধর্মীয় অনুশাসন আর ব্রিটিশ কেতা মেনে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে অভ্যাগত ও রাজপারিষদদের সামনে ব্রিটেনের রাজা হিসেবে আনুষ্ঠানিক অভিষেক হচ্ছে তৃতীয় চার্লসের।শনিবার সাত দশকের মধ্যে ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মাথায় রাজমুকুট পরতে যাচ্ছেন চার্লস (৭৪) ।ব্রিটেনের স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় ক্যান্টাবুরির আর্চবিশপের নেতৃত্বে রাজ্যাভিষেকের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।
গত ৭০ বছর ধরে ব্রিটেনের রাজমুকুটের উত্তরাধিকারী হিসেবে জীবন কাটিয়ে অবশেষে মুকুট পরতে চলেছেন চার্লস। এই অভিষেক অনুষ্ঠান উপলক্ষে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে কয়েক হাজার অতিথির পাশাপাশি আশপাশে সেন্ট্রাল লন্ডনের রাস্তাগুলোতে উপস্থিত থাকবেন প্রজারা।গত সেপ্টেম্বরে রানি এলিজাবেথ মারা যাওয়ার পর তার স্থলাভিষিক্ত হন চার্লস। লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে ৩৬০ বছরের পুরনো সেইন্ট এডওয়ার্ডের মুকুট মাথায় পরানোর এবং চতুর্দশ শতাব্দীর রাজসিংহাসনে বসার মাধ্যমে ব্রিটেনের প্রবীণতম রাজা হবেন তিনি।বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, অনুষ্ঠানে প্রায় ১০০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনসহ বিশিষ্টজনরা উপস্থিত থাকবেন।১০৬৬ সালে প্রথম উইলিয়াম বা দিগ্বীজয়ী উইলিয়ামের রাজ্যাভিষেকের পর থেকে চার্লসের পূর্বসূরী ৪০ জন রাজা-রানীর রাজ্যাভিষেক এই ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতেই হয়েছে।
দুই ঘণ্টার এই অনুষ্ঠান চলাকালে চার্লসের দ্বিতীয় স্ত্রী ক্যামেলিয়াকেও (৭৫) রানির মুকুট পরানো হবে।“অন্য কোনো দেশ এমন জমকালো প্রদর্শনী করতে পারেনি- রাজ শোভাযাত্রা, সমারোহ, আনুষ্ঠানিকতা ও স্ট্রিট পার্টি,” বলেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। “এটি আমাদের ইতিহাসের, সংস্কৃতির এবং ঐতিহ্যের এক গর্বিত প্রকাশ। আমাদের দেশের আধুনিক চরিত্রের এক প্রাণবন্ত প্রদর্শনী। এবং একটি লালিত আচার যার মাধ্যমে একটি নতুন যুগের জন্ম হয়,” বলেছেন তিনি। সুনাকের উচ্ছ্বাস সত্ত্বেও জীবনযাত্রার সংকট এবং জনগণের সংশয়ের মধ্যেই এই রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিশেষভাবে ব্রিটিশ তরুণরা রাজতন্ত্রের ভূমিকা, প্রাসঙ্গিকতা এর পেছনে যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। ১৯৫৩ সালে রানি এলিজাবেথের রাজ্যাভিষেকের আয়োজন থেকে এবারের অনুষ্ঠান অপেক্ষাকৃত ছোট হবে, তারপরও এটি আকর্ষণীয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।সব আচার আনুষ্ঠানিকতা সেরে চার্লস ও ক্যামেলিয়া গোল্ড স্টেট কোচ নামের চার টনি ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বাকিংহাম প্রাসাদে ফিরবেন। এক মাইলের এই শোভাযাত্রায় আনুষ্ঠানিক পোশাক পরা ৩৯টি দেশের চার হাজার সামরিক সদস্য তাদের সঙ্গে থাকবেন। রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার মানুষ তাদের রাজা-রানিকে শুভেচ্ছা জানাবেন এবং বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ অনুষ্ঠানটি দেখবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।