স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,,৩ মে: অস্ট্রেলিয়া ই–সিগারেট বা ভ্যাপিংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে দেশটির সরকার। দেশটিতে ই-সিগারেট এত সহজলভ্য হয়েছে যে এটিকে ‘মহামারি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মার্ক বাটলার বলেছেন, এই পণ্যগুলো অস্ট্রেলিয়ায় নিকোটিনে আসক্তদের একটি নতুন প্রজন্ম তৈরি করছে।অস্ট্রেলিয়ায় ওষুধের দোকানে নিকোটিন ভ্যাপ পাওয়া যায়। কখনো কখনো চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকেরা ব্যবস্থাপত্রে ভ্যাপ গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এর সুযোগ নিয়ে এখন ভ্যাপ কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে দেশটিতে ই-সিগারেটের ন্যূনতম মানও চালু করা হবে। এ ছাড়া ফার্মেসিতে ই-সিগারেট বিক্রির ওপর বিধিনিষেধও জারি করা হয়েছে।ই-সিগারেট বা ভ্যাপ একটি তরল নিকোটিন। এই তরল বাষ্পে পরিণত করে ব্যবহারকারীরা শ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করে। ধূমপান ত্যাগ করার সহায়তা হিসেবে এই পণ্যটিকে বিবেচনা করা হয়। তবে অস্ট্রেলিয়ায় ভ্যাপ বিনোদনমূলক পণ্য হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিশেষ করে শহুরে তরুণদের মধ্যে এটা ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে।গতকাল মঙ্গলবার এক সংস্কার ঘোষণায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মার্ক বাটলার বলেছেন, এটি ধূমপানের মতোই একটি আসক্তিমূলক পণ্য। চকচকে প্যাকেটে মোড়া এই ভ্যাপ নতুন প্রজন্মকে নিকোটিনে আসক্ত করতে মিষ্টি স্বাদ যোগ করেছে। এটা একধরনের প্রতারণা।
ভ্যাপকে সাধারণ সিগারেটের চেয়ে নিরাপদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এতে ক্ষতিকারক তামাক থাকে না। যুক্তরাজ্য সরকার ‘স্টপ টু স্টপ’ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিনা মূল্যে ধূমপায়ীদের হাতে ভ্যাপ তুলে দিচ্ছে। তবে স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, ভ্যাপ ঝুঁকিমুক্ত নয়। এতে রাসায়নিক থাকতে পারে এবং এগুলো ব্যবহারের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়।গবেষণার তথ্য বলছে, অস্ট্রেলিয়ার ১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের প্রতি ছয়জনে একজন ভ্যাপ নেয় এবং ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের প্রতি চারজনে একজন ভ্যাপ নেন।৫২ বছর বয়সী স্বাস্থ্যমন্ত্রী মার্ক বাটলার বলেছেন, তাঁর বয়সী ৭০ জনের মধ্যে ১ জন ভ্যাপ নেন। এই পণ্যগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে শিশুদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে এবং খুচরা দোকানে ‘ললি ও চকলেটবারের পাশাপাশি’ সহজেই পাওয়া যায়। হাইস্কুলে ভ্যাপিং ‘এক নম্বর আচরণগত সমস্যা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে কেউ কেউ বাথরুমে ভ্যাপ ডিটেক্টর বসাতে শুরু করেছে।স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ই-সিগারেট রাখার জন্য সম্ভাব্য শাস্তির বিষয়ে ফেডারেল সরকার রাজ্য ও আঞ্চলিক সরকারের সঙ্গে কাজ করবে।অস্ট্রেলিয়ায় ইতিমধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ধূমপানবিরোধী আইন রয়েছে। নতুন সংস্কারের মধ্যে একবার ব্যবহারযোগ্য ভ্যাপ নিষিদ্ধ ও ব্যবস্থাপত্রবহির্ভূত পণ্য আমদানির ওপর কঠোর বিধিনিষেধ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাপে বাবল-গাম ফ্লেভার দেওয়া যাবে না। এ ছাড়া গোলাপি ইউনিকর্ন বা শিশুদের জন্য হাইলাইটার কলমের মতো তৈরি করা যাবে না।এর আগে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ ভ্যাপিংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। আর অস্ট্রেলিয়ার ওষুধ নিয়ন্ত্রক দ্য থেরাপেটিং গুডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিধিনিষেধ সংস্কারের সুপারিশ করেছে।