স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৩ এপ্রিল: যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগে ৫০ কোটি ডলারের মামলা করেছেন তার সাবেক ব্যক্তিগত আইনজীবী মাইকেল কোহেনের বিরুদ্ধে।ট্রাম্প বলছেন, ব্যক্তিগত আইনজীবী হিসেবে তার স্বার্থ রক্ষা করার যে দায়িত্ব কোহেনের ছিল, তিনি তা করেননি।সাবেক পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে সম্পর্কের ঘটনা ধামাচাপা দিতে গোপনে অর্থ দেওয়ার যে মামলায় ট্রাম্প সম্প্রতি অভিযুক্ত হয়েছেন, সেই মামলায় অন্যতম প্রধান সাক্ষী হলেন কোহেন। কোহেনের মুখপাত্র এবং আইনজীবী ল্যানি ডেভিসকে উদ্ধৃত করে বিবিসি লিখেছে,তিনি আত্মবিশ্বাসী, ট্রাম্পের করা এ মামলা টিকবে না।
বুধবার ফ্লোরিডার ফেডারেল আদালতে করা ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, কোহেন ‘নিজের স্বার্থে’ তার সাবেক মক্কেল ট্রাম্প ও তার পরিবার এবং তার ব্যবসা সম্পর্কে ‘মিথ্যা’ তথ্য ছড়িয়েছেন।এক দশকের বেশি সময় ধরে ট্রাম্পের অ্যাটর্নি হিসেবে কাজ করেছেন কোহেন। তিনি ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের একজন ভাইস-প্রেসিডেন্টও ছিলেন। তাকে বলা হত ট্রাম্পের ‘ফিক্সার’, অর্থাৎ সাবেক প্রেসিডেন্টের ভুলগুলো মিটমাট করাই ছিল তার কাজ।সাবেক পর্ন তারকা ড্যানিয়েলসের দাবি, ট্রাম্পের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক ছিল এবং ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ওই বিষয়ে মুখ না খুলতে ট্রাম্প তার আইনজীবী মাইকেল কোহেনের মাধ্যমে তাকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছিলেন।ওই অভিযোগ যখন ওঠে, ট্রাম্প তখনও হোয়াইট হাউজে। শুরু থেকেই তিনি ওই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন।
তবে জালিয়াতি এবং ভোটের প্রচারের চাঁদা সংগ্রহে অনিয়মের অভিযোগে দোষ স্বীকার করে নেওয়ায় ২০১৮ সালে মাইকেল কোহেনের তিন বছরের জেল হয়। সে সময় তিনি প্রসিকিউটরদের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছিলেন, ট্রাম্পের ফিক্সার হিসাবে স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছিলেন তিনি।মার্কিন আইনে মুখ বন্ধ রাখার জন্য অর্থ দেওয়া অবৈধ নয়। কিন্তু ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ হল, ড্যানিয়েলসকে দেওয়া ওই অর্থ তিনি কোহেনকে দেওয়া লিগ্যাল ফি হিসেবে দেখিয়ে ব্যবসার খরচ হিসেবে চালিয়েছেন।
আর নিউ ইয়র্কের আইনে ব্যবসার নথিতে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য দেওয়া ফৌজদারি অপরাধ। সেজন্য ৩৪ দফা অনিয়মের অভিযোগে অভিযুক্ত করে তার বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে জুরি আদালত।এদিকে জেল খেটে বেরিয়ে কোহেন এখন আবির্ভূত হয়েছেন ট্রাম্পের একজন কট্টর সমালোচক হিসেবে। বিভিন্ন টেলিভিশন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি নিয়মিত কথাও বলছেন। ইতোমধ্যে তিনি একটি বই লিখেছেন এবং একটি পডকাস্টেরও তিনি হোস্ট ছিলেন। এ বিষয়গুলোও ট্রাম্প তার মামলায় উল্লেখ করেছেন।কোহেনের আইনজীবী ল্যানি ডেভিস বলছেন, আদালতে অভিযুক্ত হওয়ার পর ট্রাস্প তার পরিণতি নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। সে কারণে সম্ভাব্য সাক্ষীদের ভয় দেখাতে চাইছেন, যাতে তারা এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষকে সহযোগিতা না করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ট্রাম্পই প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট, যাকে ফৌজদারি মামলায় বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। গত ৪ এপ্রিল তিনি ম্যানহটনের আদালতে হাজির হন এবং নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।