স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,১৯ জানুয়ারি: ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা বলেছেন, তার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ৮ জানুয়ারির দাঙ্গার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছিল।সেদিন সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর কট্টর সমর্থকরা রাজধানী ব্রাসিলিয়ার একাধিক সরকারি ভবনে হানা দিয়ে তাণ্ডব চালিয়েছিল।ব্রাজিলের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক লুলা সম্প্রতি বোলসোনারো সমর্থকদের দাঙ্গা রুখতে ব্যর্থ হওয়ার সামরিক বাহিনীরও কড়া সমালোচনা করেছেন।
সামরিক বাহিনী নিয়ে সমালোচনার মধ্যেই তিনি এবার গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতা নিয়ে মুখ খুললেন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। “আমরা প্রথমেই একটি ভুল করেছি। (সেদিন) আমার গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অস্তিত্বই ছিল না। আমাদের সেনা গোয়েন্দা আছে, বিমানবাহিনীর গোয়েন্দা আছে, এবিআইএন (ব্রাজিলের গোয়েন্দা সংস্থা) আছে; কেউই আমাকে সতর্ক করেনি,” টিভি চ্যানেল গ্লোবোনিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন লুলা।লুলা এর আগে বলেছিলেন, ৮ জানুয়ারি বোলসোনারো সমর্থকরা কংগ্রেস ভবন, প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ও সুপ্রিম কোর্ট ভবনে যে অরাজকতা চালিয়েছিল, তাতে ‘সশস্ত্র বাহিনীর লোকজনের’ যোগসাজশ থাকতে পারে বলেও তিনি সন্দেহ করছেন।“আমার মনে হয়েছিল এটা অভ্যুত্থানের সূচনা,” দাঙ্গা নিয়ে বলেছিলেন তিনি।ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখতে চান, তবে তারা রাজনীতি করতে পারবে না।আগামী সপ্তাহে তার সঙ্গে ব্রাজিলের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর কমান্ডারদের বৈঠক হওয়ার কথা।“বাহিনীগুলোকে নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই, তাদেরও আমাকে নিয়ে সমস্যা থাকার কথা না। কিন্তু যারা রাজনীতি করতে চায়, তাদের অবশ্যই উর্দি খুলে, বাহিনীর দায়িত্ব ছেড়ে রাজনীতিতে ঢোকা উচিত,” বলেছেন লুলা।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে বামপন্থি এ প্রেসিডেন্ট তার বাসভবন ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার কার্যালয়ের পাহারায় থাকা অর্ধশতাধিক সামরিক কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেন; ব্রাসিলিয়ায় দাঙ্গার পর তিনি আর তাদের ওপর বিশ্বাস রাখতে পারছেন না জানিয়ে এ পদক্ষেপ নেন।গ্লোবোনিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লুলা আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন, সে কথা পুনর্বার জানান।ব্রাসিলিয়ায় দাঙ্গা নিয়ে পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে বড় দুই গণতান্ত্রিক দেশের নেতার মধ্যে ফোনে কথা হওয়ার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট লুলাকে যুক্তরাষ্ট্র সফরের দাওয়াত দিলে দুই নেতার বৈঠকের এ সময় ঠিক হয়। ব্রাসিলিয়ার দাঙ্গার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি হওয়া সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডবের মিল রয়েছে। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের আইনপ্রণেতারা ব্রাসিলিয়ায় সহিংস বিক্ষোভ নিয়ে তদন্তে সহযোগিতার উপায় খুঁজছেন বলে কয়েকদিন আগেই এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছিল রয়টার্স।“বিশ্বে গণতন্ত্র কেমন করছে, এখানে-সেখানে কী হচ্ছে, তা নিয়ে বাইডেনের সঙ্গে আলোচনা করতে চাই আমি,” মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার দেশে ডানপন্থিদের হুমকি মোকাবেলায় কী করছেন বৈঠকে তিনি তাও জিজ্ঞেস করবেন বলে জানান লুলা।চলতি মাসের শেষদিকে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সঙ্গেও ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।