Tuesday, July 22, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদমুক্তি পাচ্ছেন ‘সিরিয়াল কিলার’ চার্লস শোভরাজ

মুক্তি পাচ্ছেন ‘সিরিয়াল কিলার’ চার্লস শোভরাজ

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,২২ ডিসেম্বর: নেপালের কারাগারে ১৯ বছর বন্দি থাকার পর মুক্তি পাচ্ছেন ১৯৭০-৮০ দশকের কুখ্যাত ‘সিরিয়াল কিলার’ চার্লস শোভরাজ (৭৮) ।পুলিশের সন্দেহ, ওই দশকগুলোতে ধারাবাহিকভাবে হওয়া অনেকগুলো খুনের জন্য দায়ী শোভরাজ।আদালতের আদেশের পর বৃহস্পতিবার তিনি মুক্তি পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।ফ্রান্সের নাগরিক শোভরাজ ২০ জনেরও বেশি পশ্চিমা ব্যাকপ্যাকারকে এশিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া ‘হিপ্পি ট্রেইলে’ হত্যা করেছিলেন বলে সন্দেহ করা হয়। শিকারদের সবকিছু লুটে নেওয়ার উদ্দেশ্যে সাধারণত তাদের খাবারে বা পানীয়তে মাদক মিশিয়ে দিতেন তিনি। ১৯৭৫ সালে নেপালে এক মার্কিন ও এক কানাডীয় ব্যাকপ্যাকারকে হত্যার দায়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন (২০ বছর) কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ২০০৩ সালে ফ্রান্স থেকে নেপালে গেলে তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। ওই সময় থেকেই তিনি কাঠমান্ডুর একটি কঠোর নিরাপত্তা কারাগারে বন্দি ছিলেন।

আদালত থেকে কারাগারে নিতে চার্লস শোভরাজকে প্রিজন ভ্যানে তোলা হচ্ছে। 

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ২০ বছর মেয়াদের মধ্যে ১৯ বছর কারাগারে কাটানোর পর বয়স, স্বাস্থ্য ও কারাগারে ভাল ব্যবহার বিবেচনায় বুধবার নেপালের সুপ্রিম কোর্ট তার আবেদন মঞ্জুর করে তাকে মুক্তির নির্দেশ দেন।বৃহস্পতিবার কাঠমান্ডুর স্থানীয় সময় সকাল ১০টার পর শোভরাজ কারাগার থেকে বের হবেন, এমনটি আশা করা হচ্ছে বলে তার আইনজীবী রাম বন্ধু শর্মা রয়টার্সকে জানিয়েছেন। তবে মুক্তির পর ১৫ দিনের মধ্যে তাকে নেপাল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।শোভরাজ ওই মার্কিন নারীকে হত্যার কথা অস্বীকার করেছিলেন। অনুমানের ভিত্তিতে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে বলে তার আইনজীবী দাবি করেছিলেন। তবে বেশ কয়েক বছর পর শোভরাজ ওই মার্কিন নারীর কানাডীয় বন্ধুকে খুনের দায়েও অভিযুক্ত হন। নেপালে পৃথক দুটি বিচারের রায়ের প্রত্যেকটিতে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।থাইল্যান্ডে শোভরাজ ‘বিকিনি কিলার’ নামে পরিচিত। এখানে ছয় নারীকে মাদক সেবন করানো ও হত্যার দায়ে ১৯৭০ দশকের মাঝামাঝি তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। এই নারীদের কয়েকজনকে পাতায়ায় রিজোর্টের কাছে সৈকতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। 

এসব অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার আগেই ভারতে কারাগারে যেত হয় তাকে। দিল্লিতে তিন পর্যটককে বিষ খাওয়ানোর অপরাধে দীর্ঘদিন তিহার জেলে ছিলেন তিনি। ১৯৮৬ সালে এক কারারক্ষীকে মাদক সেবন করিয়ে তিহার জেল থেকেও পালিয়েছিলেন তিনি, পরে তাকে গোয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।১৯৯৭ সালে ভারত থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি ফ্রান্সে চলে যান। পরে ২০০৩ সালে কাঠমান্ডুতে ফিরলে এক ক্যাসিনো থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।শোভরাজের বাবা ভারতীয় ও মা ভিয়েতনামি। সহযোগীরা তাকে একজন প্রলুব্ধকারী প্রতারক, ডাকাত ও খুনি হিসেবে বর্ণনা করেছে। বিবিসি জানিয়েছে, ১৯৭২ থেকে ১৯৮২ সালের মধ্যে ২০টিরও বেশি খুনের সঙ্গে শোভরাজ জড়িত বলে ধারণা করা হয়। এদের অধিকাংশকেই মাদক প্রয়োগের পর মারধর করে, শ্বাসরোধ করে অথবা পুড়িয়ে হত্যা করেন তিনি।ছদ্মবেশের দক্ষতা, কারাগার থেকে পালানোর ক্ষমতা ও তরুণীদের টার্গেট করার প্রবণতার কারণে তিনি ‘দ্য সার্পেন্ট’ নামেও পরিচিতি পেয়েছিলেন। পরে এই খুনিকে নিয়ে এই নামে বিবিসি ও নেটফ্লিক্সে একটি জনপ্রিয় সিরিজও হয়েছিল।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য

error: <b>Alert: </b>Content selection is disabled!!