স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা,২৬ অক্টোবর: মালয়েশিয়াকে মিয়ানমারের শরণার্থীদের দেশ ফেরত পাঠানো বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)। শরণার্থীদেরকে এভাবে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে সংস্থাটি উল্লেখ করেছে।গত দুই মাস থেকে শত শত শরণার্থীকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর খবর পাওয়া গেছে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর। এই শরণার্থীদের মধ্যে আশ্রয়প্রার্থনা করা নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারাও আছেন।সংস্থাটির সহকারী হাই কমিশনার গিলিয়ান ট্রিগস এক বিবৃতিতে বলেছেন, মিয়ানমারের নাগরিকরা যারা এরই মধ্যে বিদেশে চলে গেছে এবং আন্তর্জাতিক সুরক্ষা পেতে চাইছে, তখন তাদেরকে জোর করে দেশে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত নয়। এটি শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের সুরক্ষা বিষয়ক আইনের লঙ্ঘন।অথচ মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশ থেকে তাদেরকে জোর করে ফেরত পাঠানোর একাধিক খবর পেয়ে ইউএনএইচসিআর গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলে ট্রিগস উল্লেখ করেন।ওদিকে, ইউএনএইচসিআর এর মুখপাত্র সাবিহা মান্তু জেনেভায় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, “কেবল গত দু’মাসেই কর্তৃপক্ষ মিয়ানমারের শত শত নাগরিককে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে ফেরত পাঠিয়েছে বলে খবর বেরিয়েছে। মানুষ যেখানে জীবন ও স্বাধীনতার হুমকি এবং ক্ষতি ও বিপদের মুখে পড়ে সেরকম জায়গায় তাদেরকে ফেরত পাঠাতে নেই।”
মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ইউএনএইচসিআর এর যোগাযোগের পরও জোর করে মিয়ানমারের এক আশ্রয়প্রার্থীকে ফেরত পাঠানোর সর্বশেষ ঘটনা ২১ অক্টোবরে ঘটেছে বলে জানান মান্তু। তিনি বলেন, মিয়ানমারে ফেরার পর সেই আশ্রয়প্রার্থীর ভাগ্যে কি ঘটেছে তা জানা যায়নি।এ ব্যাপারে মন্তব্যের অনুরোধে মালয়েশিয়ার স্বরাষট্র ও পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় কিংবা মিয়ানমার জান্তার মুখপাত্রের কাছ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।মালয়েশিয়ায় অবস্থিত মিয়ানমারের দূতাবাস এর আগে ফেইসবুকে এক পোস্টে বলেছিল, মালয়েশিয়ার অভিবাসন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ৬ অক্টোবরে মিয়ানমারের ১৫০ জন নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে সাবেক নৌ কর্মকর্তারা আছেন কিনা তা উল্লেখ করেনি দূতাবাস।মিয়ানমারে গত বছরের শুরুতে সেনা অভ্যুত্থানে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকার উৎখাত হওয়ার পর থেকেই সহিংসতা, অশান্তি চলছে। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভ ঠেকাতে সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নের মাত্রাও বেড়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছে রাজনৈতিক কর্মী, অধিকারকর্মী, সাংবাদিক, শিক্ষক, চিকিৎসকসহ গণতন্ত্রপন্থি ১০ হাজারের বেশি মানুষ।এই দমনাভিযান থেকে বাঁচতে এ পর্যন্ত ১৫০,০০০ জনেরও বেশি শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থী মালয়েশিয়ায় পালিয়ে গেছে। তাদের মধ্যে বহু রোহিঙ্গাও আছে।