স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৯ মার্চ : হামাস ফের সঙ্ঘবদ্ধ হচ্ছে সেখানে, এই দাবি তুলে সোমবার ভোরে গাজ়া ভূখণ্ডের আল-শিফা হাসপাতালে তীব্র হামলা চালাল ইজ়রায়েলি সেনা বাহিনী। গাজ়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে খবর, মুহুর্মুহু নির্বিচারে গুলি-বোমার দাপটে সেখানে এখনও প্রাণ হাতে করে আটকে রয়েছেন প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। অনেকের প্রাণ গিয়েছে। আগুন ধরে গিয়েছে হাসপাতালের একটি ভবনে।
সোমবারই একটি বিবৃতিতে ইজ়রায়েলের বাহিনী জানিয়েছে, ‘যথাযথ ভাবে নির্ভুল’ হামলা চালানো হয়েছে আল শিফায়। উত্তর গাজ়ায় কয়েক দিন আগেই হামাসের ঘাঁটি সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে বলে মনে করেছিল তারা। কিন্তু পরে তাদের কাছে খবর আসে যে আল শিফায় ফের ঘাঁটি তৈরি করছে এই সশস্ত্র বাহিনী। ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে কোনও হামলার পরিকল্পনা করার আগেই তারা সেই ঘাঁটি ধ্বংস করতে চায়।
হামলার পাশাপাশি আল-শিফা এলাকার চারপাশে ইস্তাহার ছড়িয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের দ্রুত এলাকা ছেড়ে যেতে বলেছে বাহিনী। আল শিফার চারপাশ এখন কার্যত যুদ্ধক্ষেত্র।
বাহিনীর হামলার পরেই অবশ্য রাষ্ট্রপুঞ্জ-সহ আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলির কাছে গাজ়ার হাসপাতাল বাঁচানোর দাবি জানাল হামাস। এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, সাধারণ নাগরিক, অসুস্থ শিশু, রোগীদের হামলা করা ছাড়া আর কোনও সামরিক সাফল্য নেই ইজ়রায়েলের। হাসপাতালে হামলা চালিয়ে গণহত্যা জারি রাখা হচ্ছে।
তবে, ইজ়রায়েল যে হামলা অব্যাহত রাখবে তার ইঙ্গিত রবিবারই দেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তাঁর কথায় উঠে এসেছে দক্ষিণ গাজ়া ভূখণ্ডের রাফার নামও। নেতানিয়াহু জানান, হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করার জন্য প্রয়োজনে রাফায় হামলা চালানোর পরিকল্পনাও মঞ্জুর করেছেন তিনি। সেখান থেকে সাধারণ মানুষকে সরিয়েই হামলা চালানো হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। প্রাণ বাঁচাতে গাজ়া থেকে বেশির ভাগ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন রাফায়। ফের ঘর ভাঙার আতঙ্ক দানা বাঁধছে তাঁদের মধ্যে।
এ দিকে, সোমবারই ইজ়রায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বার্নিয়া, কাতারের প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি ও মিশরীয় কূটনীতিকদের সঙ্গে ইজ়রায়েল-হামাস সন্ধি নিয়ে বৈঠকে বসবেন বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। কাতারের রাজধানী দোহায় হবে এই বৈঠক। তবে, এত দিন পরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা আমেরিকা সুর পাল্টে যুদ্ধ থামাতে বললেও নারাজ ইজ়রায়েল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে সংঘাত শুরু হওয়ায় ইজ়রায়েলি বাহিনীর হাতে প্রাণ গিয়েছে অন্তত ৩১ হাজার ৭২৬ জন প্যালেস্টাইনির। গুরুতর জখম হয়েছেন অন্তত ৭৩ হাজার ৭৯২ জন। যুদ্ধবিরতির উপরেই নির্ভর করছে শয়ে শয়ে সাধারণ মানুষের প্রাণ।