কলকাতা, ৪ নভেম্বর (হি.স) : শেষরক্ষা আর হল না। দীপাবলির আলোর রোশনাইয়ে নেমে এল অন্ধকার। চলে গেলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের বর্তমান পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি এসএসকেএম হাসপাতালে রাত ৯.২২ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সুব্রতবাবু ১৯৭১ সালে বালিগঞ্জ থেকে প্রথমবার বিধায়ক হন।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাত ৮.১৫ নাগাদ তাঁর হার্ট অ্যাটাক হয়। তারপর থেকেই তিনি কিছুই বলছিলেন না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। খবর পেয়ে, পঞ্চায়েত মন্ত্রীকে দেখতে এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিমরা।পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন-সহ রাজ্যের চারটি দফতরের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।গত ২৪ অক্টোবর রবিবার স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে এসএসকেএম হাসপাতালে যাওয়ার পর সুব্রতকে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। শ্বাসকষ্ট বাড়ায় উডবার্ন ওয়ার্ডের আইসিসিইউ-তে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ।
বাংলার কংগ্রেসি রাজনীতিতে ষাটের দশকে ছাত্রবয়সেই নজর কেড়েছিলেন সুব্রত। ছাত্র পরিষদের সভাপতি ছিলেন। ১৯৭২ সালে মাত্র ২৬ বছর বয়সে তিনি সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য হন। জরুরি অবস্থার বিতর্কিত পর্বে সুব্রত ছিলেন রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের দায়িত্বে। ২০০০ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ২০০১ থেকে ২০০৫ তিনি ছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র। মেয়র পদে থাকার শেষ দিকে মমতার সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে সুব্রত। তিনি নিজের মঞ্চ গড়ে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে পুরভোটে লড়েন। ‘ঘড়ি’ চিহ্নে পুরভোট লড়েন। জেতেনও। কিন্তু হেরে যায় তাঁর দল। ফলে কলকাতার মেয়র পদে আর ফেরা হয়নি সুব্রতের। পরে আনুষ্ঠানিক ভাবেই কংগ্রেসে ফিরে যান সুব্রত। তাঁকে কার্যনির্বাহী সভাপতিও করা হয়। কিন্তু ২০১০ সালে আবার তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন তাঁর। সেই থেকে তিনি তৃণমূলেই। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর থেকে তিন দফাতেই সুব্রতকে গুরুত্বপূর্ণ দফতরের ভার দেন।
রাজনৈতিক বা সাংগঠনিক অভিজ্ঞতার নিরিখেই শুধু নয়, সুব্রত রাজনৈতিক মহলে এক বর্ণময় চরিত্র হিসেবে থেকে গিয়েছেন। বরাবর বাম-বিরোধী রাজনীতি করলেও রাজ্যে সর্বস্তরের বাম নেতাদের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক বজায় থেকেছে