আগরতলা, ৩ নভেম্বর (হি.স.) : ত্রিপুরায় পুর ও নগর সংস্থার নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমা নেওয়ার পর্ব সমাপ্ত হয়েছে। বিজেপি চারটি পুর পরিষদ এবং একটি নগর পঞ্চায়েতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতে চলেছে। এদিকে, আজ শেষ বেলায় তৃণমূল কংগ্রেস আগরতলা পুর নিগম নির্বাচনে ৫১টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে।
আগামী ২৫ নভেম্বর ত্রিপুরায় পুর ও নগর সংস্থার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২৮ নভেম্বর ঘোষণা হবে ভোটের ফলাফল। ত্রিপুরায় আগরতলা পুর নিগম ছাড়া ৬টি নগর পঞ্চায়েত এবং ১৩টি পুর পরিষদ রয়েছে। এবারের ভোটে নির্দল ও অন্যান্য প্রার্থী সহ ১৪টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। আগামী ৫ নভেম্বর মনোনয়ন পত্র স্ক্রুটিনি হবে এবং ৮ নভেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের অন্তিম তারিখ নির্ধারিত রয়েছে।
নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হতেই প্রার্থী তালিকা প্রকাশে সবার আগে চমক দিয়েছে বামফ্রন্ট। কিন্তু সিংহ গর্জন শুরু করেও মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার অন্তিম সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর দেখা গেল, ত্রিপুরায় প্রধান বিরোধী বামেরা মাত্র ২২৭টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী খুঁজে পেয়েছে। শতবর্ষ প্রাচীন জাতীয় দল কংগ্রেসের অবস্থাও একই। তাঁরা টেনেটুনে ১০১ আসনের মধ্যে সীমিত রয়েছে। এদিক দিয়ে কিছুটা এগিয়ে গেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সবকয়টি আসনে প্রার্থী দেবে বলে গলা ফাটালেও আখেরে মাত্র ১২৫টি আসনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দিতে সক্ষম হয়েছে।
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অবস্থা দেখে স্পষ্ট, শুধু মাত্র আগরতলা পুর নিগম নির্বাচনেই তাঁরা পূর্ণ উদ্যমে ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হচ্ছে। এছাড়া নগর পঞ্চায়েত এবং পুর পরিষদ নির্বাচনে তাঁরা তেমন প্রভাব দেখাতে পারেনি। বিরোধীরা অবশ্য ইতিমধ্যেই শাসক দলের রক্তচক্ষুর অভিযোগ এনে সুর চড়িয়েছেন। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী ত্রিপুরা সরকারের চার মন্ত্রীর দিকে সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। রানিরবাজার, মোহনপুর এবং উদয়পুর পুর পরিষদ এবং কমলপুর নগর পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য ওই এলাকার চার বিধায়ক তথা ত্রিপুরা মন্ত্রিসভার চার সদস্য সুশান্ত চৌধুরী, রতনলাল নাথ, প্রণজিত সিংহরায় এবং মনোজকান্তি দেবকে নিশানা করেছেন তাঁরা।
তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, দলীয় প্রার্থীদের বিভিন্ন স্থানে শাসক দলের সমর্থিত দুষ্কৃতী মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি। রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের বাইরে ঘেরাও করে রেখেছিল তাঁরা। তাই তৃণমূল প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। একই অভিযোগ এনে তিপ্রা মথার সমর্থকরা রাস্তা অবরোধ করেছেন। তবে, বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ ফুতকারে উড়িয়ে দিয়ে বিজেপির দাবি, প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না বিরোধীরা। তাঁর দায় শাসক দলের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে।