স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৯ জুন। অবশেষে স্বপ্নপূরণ। বহু বছরের প্রতীক্ষার পরিসমাপ্তি। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টির সেরার খেতাব ছিনিয়ে নিল ভারত। আসমুদ্র হিমাচলের প্রার্থনা পূর্ণ হল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে উইকেট হারাতে থাকে ভারত। সেখান থেকে ইনিংস ধরে বিরাট আর অক্ষর। দুরন্ত হাফসেঞ্চুরি করে যান বিরাট। জবাবে প্রথমে ধাক্কা খেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাও। কিন্তু সেখান থেকে সাফল্যের দিকে নিয়ে আসেন সেই বুমরাহই। সঙ্গ দেন অর্শদীপও।
আর শেষ ওভারে ১৬ রান বাঁচাতে নেমে দুরন্ত বোলিং হার্দিকের। শেষ পর্যন্ত ৭ রানে ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন টিম ইন্ডিয়া।ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে ভারতীয় ইনিংসের ভার সামলে ছিলেন রোহিত এবং সূর্যকুমার। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দু’জনেই ব্যর্থ হলেন। অবিবেচকের মতো ব্যাট করে দলের চাপ বৃদ্ধি করলেন ঋষভ পন্থও। রোহিত (৯), পন্থ (শূন্য) এবং সূর্যকুমার (৩) ৫ ওভারের মধ্যএ আউট হওয়ায় চাপে পড়ে যায় ভারত। ব্যাটিং ধস রুখতে এই সময় ‘প্ল্যান বি’তে চলে যান। পাঁচ নম্বরে নামিয়ে দেওয়া হয় সেমিফাইনালের সেরা ক্রিকেটার অক্ষর পটেলকে। বিরাট কোহলির সঙ্গে জুটি বেঁধে দলের বিপর্যয় ঠেকালেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার।
শুরুতে আগ্রাসী মেজাজে শুরু করেছিলেন কোহলি। অনেক দিন পর তাঁকে এ দিন চেনা মেজাজে খেলছিলেন। কিন্তু চাপের মুখে নিজেকে গুটিয়ে নেন কোহলি। চাপ খানিকটা সামলে নিয়ে আগ্রাসী হওয়ার চেষ্টা করেন অক্ষর। শেষ পর্যন্ত অবিবেচকের মতো রান আউট হলেন সময় থাকতেও ক্রিজ়ে ফেরার চেষ্টা না করে। ভুলের মাসুল দিয়ে অর্ধশতরান হাত ছাড়া করলেন অক্ষর। ৩১ বলে ৪৭ রান করলেন ১টি চার এবং ৪টি ছয়ের সাহায্যে। উইকেটের অন্য দিক আগলে রেখেছিলেন কোহলি। গোটা প্রতিযোগিতায় ব্যর্থ শিবম দুবে কিছুটা লড়াই করার চেষ্টা করলেন ফাইনালে। ২২ গজে সঙ্গ দিলেন কোহলিকে। প্রতিযোগিতার প্রথম অর্ধশতরান করলেন কোহলি। আউট হলেন ৫৯ বলে ৭৬ রান করে। তাঁর ব্যাট থেকে এল ৬টি চার এবং ২টি ছক্কা। শিবম করলেন ১৬ বলে ২৭। ৩টি চার এবং ১টি ছয় মারেন তিনি। কোহলি-শিবম জুটির ৭২ রানের শেষে হার্দিক অপরাজিত থাকেন ৫ রান করে। জাডেজা আউট হন ২ রান করে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সফলতম বোলার কেশব মহারাজ ২৩ রানে ২ উইকেট নিলেন। বল করতে এসে প্রথম ওভারেই রোহিত এবং পন্থকে আউট করে তিনি চাপে ফেলে দেন ভারতকে। ২৬ রানে ২ উইকেট অনরিখ নোখিয়া। ৩৬ রানে ১ উইকেট কাগিসো রাবাডার। মার্কো জানসেন ১ উইকেট নিলেন ৪৯ রান খরচ করে।
জয়ের জন্য ১৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই জোড়া উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকাও। রেজ়া হেনড্রিকসকে (৪) আউট করেন যশপ্রীত বুমরা। এডেন মার্করামকে ফেরান (৪) আরশদীপ সিংহ। ১২ রানে ২ উইকেট হারানোর পর দলের ইনিংসের হাল ধরেন কুইন্টন ডিকক এবং ট্রিস্টান স্টাবস। তৃতীয় উইকেট তাঁদের জুটির সাবলীল ব্যাটিং কিছুটা চাপে ফেলে দেয় রোহিতদের। তাঁদের জুটি ভাঙেন অক্ষর। স্টাবস আউট হন ২১ বলে ৩১ রান করে। মারলেন ৩টি চার এবং ১টি ছয়। তাঁর পর ডিককের সঙ্গে জুটি বাঁধেন হেনরিক ক্লাসেন। দক্ষিণ আফ্রিকার রান তোলার গতি আটকাতে পারেননি ভারতীয় বোলারেরা। ডিকককে আউট করেন আরশদীপ। তাঁর ৩১ বলে ৩৯ রানের ইনিংসে রয়েছে ৪টি চার এবং ১টি ছক্কা। তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি। ক্লাসেনের আগ্রাসী ব্যাটিং ভারতকে চাপে রাখে। শেষ পর্যন্ত হার্দিক তাঁকে আউট করলে আবার লড়াইয়ে ফেরে ভারত। ক্লাসেন করেন ২৭ বলে ৫২ রান।