স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৩ জুলাই : ৯ দফা দাবিকে সামনে রেখে মঙ্গলবার কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তার কাছে সারা ভারত কৃষক সভার পক্ষ থেকে ডেপুটেশন প্রদান করা হয়। কৃষি ভবনে গিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অধিকর্তা শরদিন্দু দাসের হাতে দাবি সনদের একটি প্রতিলিপি তুলে দেওয়া হয়েছে। বুধবার সারা ভারত কৃষক সভা রাজ্য কমিটির অফিসে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা জানান সারা ভারত কৃষক সভার রাজ্য কমিটির সম্পাদক পবিত্র কর। বর্তমান সরকারের আমলে কৃষকরা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে ৪০ শতাংশ ধান উৎপাদন রাজ্যে কমে গেছে।
কৃষকদের সরকারি সহযোগিতা মিলছে না। তাই এস আর আই প্রোডাকশন চালু করে ধানের উৎপাদন এবং খাদ্য স্বয়ংভর ত্রিপুরা করতে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন বৃষ্টি না থাকার কারণে ফলন অনেকটাই কমে গেছে। রাজ্যে বর্তমানে ৮০ ভাগ ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রত্যন্ত এলাকার জলাশয় গুলিকে কাজে লাগানোর জন্য দপ্তরের অধিকর্তাকে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সারের অভাবের বিষয়ে অবগত করা হয়েছে অধিকর্তাকে। কারণ অধিকাংশ সার মিজোরামে চলে যাচ্ছে। ফলে কৃষকদের ফসল উৎপাদন করার জন্য সার মিলছে না। পাশাপাশি নাগীছড়া কৃষি খামার পুনর্জীবিত করার জন্য উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। আধিকারিকের কাছ থেকে জানা গেছে শুধু আলুর ফসলের উৎপাদন করা হয়। অন্যান্য ফসল উৎপাদন হয় না। তাই অন্যান্য ফসল উৎপাদন করে নাগীছড়ার কৃষি খামার পুনর্জীবিত করা পাশাপাশি রাজ্যের সবগুলি জেলাতে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র চালু করার বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। আরো বলা হয়েছে জুম চাষের জমিতে যাতে অন্য ফসল উৎপাদন করা না হয়। কারণ জুম চাষের জমিতে অন্য ফসল উৎপাদন হয় না। এছাড়াও বন্যপ্রাণী গুলি যাতে বনে খাবার পায়, খাবারের জন্য যাতে তাদের লোকালয়ে আসতে না হয় তার জন্য বনাঞ্চলে বিভিন্ন ফলের গাছ না কাটার জন্য যে প্রকল্পটি রয়েছে সেটা যাতে বাস্তবায়িত করা হয় সে বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। এছাড়াও ধান যাতে কৃষকদের কাছ থেকে সঠিক সময়ে ক্রয় করা হয় তার জন্য দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি অত্যন্ত এলাকার গলিতে যাতে ধান ক্রয় করার সেন্টার খোলা হয় সেই বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। নাহলে কৃষকদের প্রত্যন্ত এলাকার থেকে ধান নিয়ে আসতে অনেক টাকা ব্যয় হয়। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দাবি হলো বিগত বছর অকাল বর্ষণে এবং এ বছর গত দু মাস আগে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক সহযোগিতা করার জন্য দাবি জানানো হয়েছিল দপ্তরের কাছে। দপ্তরের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতা করা হয়নি। দাবিগুলি শোনার পর আধিকারিক জানিয়েছেন সবগুলো দাবি সময় উপযোগী। বিষয়টি তিনি গুরুত্বের সাথে দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন। পবিত্র কর আরো বলেন, দাবিগুলি জানানো পর এখন দপ্তরকে সময় দেওয়া হবে। নাহলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
কৃষি নিয়ে সরকার উদাসীন। সারের আকাল হলেও সরকারের কোন নজর নেই। আধুনিক জুম চাষের কোনো উদ্যোগ নেই এতে বাজার গুলি শক্তি বাড়াতে পারছে না। তাই ফসল বৃদ্ধি করতে কম্পোস কৃষকদের মধ্যে অধিকভাবে বৃদ্ধি করার কথাও বলা হয়েছে বলে জানান সারা ভারত কৃষক সবার রাজ্য কমিটির নেতা রাধা চরণ দেববর্মা।