স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৬ জুলাই : সবকা সাথ সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস ও সবকা প্রয়াস এটা নিছক কোন রাজনৈতিক দলের শ্লোগান নয়। এর সঙ্গে ভারতবর্ষের সংস্কৃতির দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক রয়েছে। ঋক বেদে এই কথা গুলি বলা হয়েছে। কিন্তু যারা ভেঙ্গে দাও, গুড়িয়ে দাও, মানছি না, মানব না বলে শ্লোগান তোলে তাদের কোন ভিত্তি নেই। বাম নয়, ডান নয়- একটাই নীতি জাতীয়তাবাদ। এই নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন ডা. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী।
বুধবার তথ্য, সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে রবীন্দ্রভবনে ডা. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর ১২২ তম জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষ্যে আয়োজিত শ্রদ্ধাঞ্জলী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমনটাই বলেন উপ মুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রাম, রাস্তা , স্টেডিয়াম একটা পরিবারের নামই প্রচারে আনা হয়েছে। কিন্তু সময় এসেছে এই পরিবারবাদ থেকে মুক্ত হওয়ার। স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্ব একটি পরিবার ও ব্যক্তি দেয়নি। অনেকেই দিয়েছে। অথচ বাকীদের নাম সামনে আনা হয়নি বলে জানান উপ মুখ্যমন্ত্রী। বর্তমান ছাত্র ছাত্রীদের স্বপ্ন, চিন্তা ভাবনার দিয়ে নতুন ভারত তৈরি হবে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী এক বার্তায় এই কথা বলেছিলেন। যারা ইতিহাস থেকে কিছুই শেখে না, তারা বঞ্চিত থেকে যায়।
ডা. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর সঙ্গে ত্রিপুরার নীবিড় সম্পর্ক ছিল। একটা সময় ত্রিপুরাকে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত করার চক্রান্ত চলছিল। এই অবস্থায় ডা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী মহারাজা বীর বিক্রম মাণিক্যকে নিয়ে গিয়ে হিন্দু মহাসভার বৈঠকের সভাপতি করেছিলেন। লন্ডনে প্রথম হিন্দু মন্দির বানিয়েছিল ত্রিপুরার রাজা। রাষ্ট্রধর্ম পালনের মাধ্যমেই প্রকৃত ধর্মের পালন করা সম্ভব বলে জানান উপ মুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা। দলের উর্ধে চিন্তা ভাবনা করতেন ডা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী। রাষ্ট্রপ্রেমী হলে ধর্মের কোন বিষয় নেই। ইতিহাসকে দাবিয়ে রাখা, বিকৃত করা এটা ভারতবর্ষের জন্য অমঙ্গল। নবীন প্রজন্মকে ভারতবর্ষের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হবে। এটা তাদের অধিকার বলে জানান তিনি।
যারা সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন তাদের কাছে রাজনীতি পেশা হিসাবে দাঁড়ায় না। তা হয়ে যায় শৌখিনতা। আর যারা রাজনীতি ও সমাজ সেবাকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করেন তাদের কাছে দেশ ও জনগনের স্বার্থ প্রাধান্য পায়। স্বাধীনতা সংগ্রামে যারা দিশা দেখিয়েছিলেন তাদের দেশবাসী চিরকাল মনে রাখবেন। অথচ যিনি দেশের অখন্ডতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে প্রান বলিদান দিয়েছেন সেই ভারত কেশরী ডা শ্যামা প্রসাদ মুখার্জীর অবদান অন্যান্য মনীষীদের চাইতে কোন অংশে কম নয় বলে জানান মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। এদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলী জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে একটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের চলচিত্র প্রদর্শিত হয় ডা. শ্যামা প্রসাদ মুখার্জীর জীবনের উপর। উপস্থিত ছিলেন মেয়র দীপক মজুমদার, ত্রিপুরা বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অরুনোদয় সাহা সহ অন্যান্যরা। স্কুল, কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা এই অনুষ্ঠানে অংশ নেয়।