স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২ জুলাই : টেট উত্তীর্ণ হয়ে এবার চাকুরীর দাবিতে রীতিমতো আন্দোলনে নেমেছে যুবক-যুবতীরা। কারণ তাদের কথা শুনছে না দপ্তর এবং দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ। বহুবার দপ্তরের মন্ত্রী থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিকের সাথে দেখা করেও কোন দিশা খুঁজে পায় নি সেই যুবক-যুবতীরা।
তাই এবার আন্দোলনের উপর আস্থা রেখে শিক্ষামন্ত্রী বাড়ির সামনের ধর্নায় বসলো টেট উত্তীর্ণ যুবক-যুবতীরা। ২০২১ সালে টি টেট উত্তীর্ণ হয় তারা। কিন্তু সকলকে একসাথে নিয়োগ করা হচ্ছে না। তাই শনিবার বাদুরতলি স্থিত শিক্ষামন্ত্রীর বাসভবন ঘেরাও করে ২০২১ সালের টেট উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা। এদিন মিছিল করে এসে আচমকা শিক্ষামন্ত্রীর বাসভবন ঘেরাও করে তারা। পুলিশ তাদের বাধা দিলে রাস্তায় বসে পড়ে। ২০২১ সালের টেট উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা জানান একাধিকবার তাদের দাবি নিয়ে দপ্তর থেকে শুরু করে মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। কিন্তু কোন সদুত্তর মেলেনি। তাই বাধ্য হয়ে ডক্টরের মন্ত্রীর বাড়ির সামনে ধর্নায় বসতে হলো বলে তাদের অভিযোগ। শিক্ষামন্ত্রী দুর্গা পূজার আগে সকলকে এক সঙ্গে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অথচ এখনো এই বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি সরকারের পক্ষ থেকে। এই বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রীর স্পষ্টী করণ ও প্রকাশ্যে বিবৃতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়। মোট ৩৬৩১ জন ২০২১ সালে টেট উত্তীর্ণ হয়েছে বলে জানান তারা।
শেষ পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রী বেকাদায় পড়ে ধর্নায় বসা যুবক-যুবতীদের দেখা করার সুযোগ দেন। প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সাথে কথা বলেন। প্রতিনিধি দল জানান শিক্ষা মন্ত্রী জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে এলে এই বিষয়ে আলোচনা করবেন। আগামী দুর্গাপূজার আগে সকলকে এক সঙ্গে নিয়োগ করার প্রচেষ্টা থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান।
এদিকে শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ জানান, শিক্ষক স্বল্পতা আছে। কিন্তু একসঙ্গে নিয়োগ ভারত বর্ষের কোথাও নেই। যারা টেট উত্তীর্ণ তাদের পূজার আগে ধাপে ধাপে নিয়োগ করার। ইতিমধ্যে ৬০০ জনের অনুমতি মিলেছে। সেই মোতাবেক টি আর বি টিকে বলা হয়েছে। সহসাই তাদের নিয়োগ করা হবে। বাকীদের নিয়োগের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হবে। কিভাবে তাদের নিয়োগ করা যায় তা দেখবে সরকার। কোন ভাবেই সরকার আন্দোলনে বিশ্বাসী নয়। সরকার আলোচনায় বিশ্বাসী। বার বার আলোচনা হতে পারে। কিন্তু আন্দোলন করলে সরকার পাশে থাকবে না বলে জানান শিক্ষা মন্ত্রী। কিছু শিক্ষকের ঘাটতি রয়েছে। বিদ্যাজ্যোতির জন্য শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ২০০ জনের পোস্টিং ছাড়া হবে বলে জানান তিনি। আশ্বাস পেয়ে আন্দোলন প্রত্যাহারকরে তারা।
কিন্তু এই বিষয়ে বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন জানান বেকারত্বের জ্বালায় মানুষ দিশা হারাচ্ছে। টেট উত্তীর্ণ হয়ে যুবক যুবতীদের হন্য হন্য হয়ে ঘুরতে হচ্ছে। আর শিক্ষামন্ত্রী বলার সময় বলেন রাজ্যে নাকি ১৪ হাজার শূন্যপদ পড়ে রয়েছে লোক পাচ্ছে না নিয়োগ করার। আর এখন যখন প্রচুর যুবক-যুবতী টেট উত্তীর্ণ হয়েছে তখন তাদের নিয়োগ করা হচ্ছে না। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন সুদীপ রায় বর্মন। তিনি আরো বলেন, শিক্ষা হলো জাতির মেরুদন্ড। আর মেরুদণ্ড যদি সোজা না করা যায় তাহলে মিশন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।