স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩০ জুন : বৃহস্পতিবার মার্কসবাদীর দুটি প্রতিনিধি দল রাজ্যপাল এবং রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশকের সাথে সাক্ষাৎ করেন। রাজ্যের সন্ত্রাস বন্ধ করার জন্য ভূমিকা নিতে দাবি জানিয়েছেন। রাজ্যে সন্ত্রাস রুখতে এদিন ডেপুটেশনের পর সিপিআইএম রাজ্য কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার জানান রাজ্যপাল অসুস্থ থাকার তার সচিব এস চাকমা দাবি সনদটি গ্রহণ করেন।
সচিব রাজ্যপালের সাথে কথা বলে স্মারক লিপি পড়ে শোনান। রাজ্যপাল আশ্বস্ত করেছেন স্মারক লিপি সরকারের কাছে পাঠিয়ে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বলবেন। তবে এদিন দাবিগুলির ছিল মূলত জঙ্গলে শাসন বন্ধ করে আইনের শাসন ফিরিয়ে আনার জন্য। বিরোধী সবগুলি রাজনৈতিক দলকে গণতান্ত্রিকভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া। পাশাপাশি সংবাদ মাধ্যমে স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে সুযোগ করে দেওয়া। যাতে সংবাদমাধ্যম স্বাধীনভাবে এবং নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারে। পুলিশকে আইনিভাবে নিরপেক্ষ হয়ে যেভাবে কাজ করার কথা, সেভাবে কাজ করতে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আরো বলা হয়েছে উপ নির্বাচনে যাদের সন্ত্রাসের কাজে ব্যবহার করা করেছে বিজেপি, তাদের গ্রেপ্তার করা দরকার এবং আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলে জানানো হয়েছে। কারণ রাজ্যপাল রাজ্যের প্রধান। তিনি অসুস্থ হতে পারেন। কিন্তু দায়িত্ব পালন করতে হবে। রাজ্যপাল আশ্বস্ত করেছেন স্মারকলিপিটি সরকারের কাছে পাঠাবেন।
পরবর্তী সময় রাজ্য পুলিশের মহা নির্দেশকের সাথে এক প্রতিনিধি দল দেখা করে সন্ত্রাসে ক্ষতিগ্রস্ত ১৫০ জনের নামের তালিকা তুলে দেওয়া হয়। তিনি যাতে উদ্যোগ নিয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তার জন্য দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু মহান নির্দেশক প্রথমে বলেন সংশ্লিষ্ট স্থানে মামলা করেননি কেন, এভাবে দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তারপর মহা নির্দেশ বলা হয়েছে বিভিন্ন জায়গায় মামলা করা হলে আরো বেশি হামলা সংগঠিত হয়। তাই ঘটনা গুলি পুলিশ পর্যবেক্ষণ করে মামলা হাতে নিয়ে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। বিষয়টি বলার পর রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক প্রথমে দায়িত্ব নিতে রাজি ছিলেন না। তারপর মহানির্দেশককে বলা হয়েছে দায়িত্বশীল লোকেরা মামলা করতে গেলে মামলা নেওয়া হয়নি। তারপর রাজ্য পুলিশের মহা নির্দেশক আশ্বস্ত করেছেন ঘটনাগুলি চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠানো হবে। মহা নির্দেশক এর কাছে ডেপুটেশনের পর একথা বলে জানান প্রাক্তন মন্ত্রী ভানুলাল সাহা।
পুলিশের মহানির্দেশকের বক্তব্য ঘিরে উঠছে প্রশ্ন। কারণ তিনি কিভাবে বলতে পারলেন যে মামলা না করা হলে পুলিশ কি করবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে যেখানে আক্রান্ত এবং বিপন্ন মানুষ পরিস্থিতির কারণে সংশ্লিষ্ট থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করতে পারছে না, কিন্তু পুলিশ পুরো ঘটনাটি সম্পর্কে জানেন, তখন পুলিশকে নিজে থেকে মামলা গ্রহণ করতে হয় বলে জানান বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। যদি পুলিশের মহান নির্দেশকে ভূমিকা এমন হয়, তাহলে দপ্তরের সাধারণ পুলিশদের ভূমিকা কী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তিনি। তাই ন্যূনতম দায়িত্ববোধ এবং স্বাধীনতা থাকা পুলিশের দরকার বলে মনে। তিনি যদি ভাবেন চোখ, কান বন্ধ করে রাখবেন তাহলে জেনে রাখা ভালো ত্রিপুরার মানুষের কিন্তু চোখ কান আছে। তাই উপযুক্ত তদন্ত করতে দাবি জানানো হয়েছে। এদিন প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার, প্রাক্তন মন্ত্রী তপন চক্রবর্তী, ভানু লাল সাহা, বিধায়ক রতন ভৌমিক।