আগরতলা, ১৯ জুন (হি.স.) : উপনির্বাচনের প্রচারে ত্রিপুরায় এসে ঝড় তুললেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা। কংগ্রেসকে বেজায় সমালোচনায় বিঁধেছেন তিনি। সাথে বিজেপিত্যাগী বিধায়কদের এক হাত নিয়েছেন।
উষ্মা প্রকাশ করে হিমন্তবিশ্ব বলেন, দলীয় নেতা কর্মীদের আপত্তি সত্ত্বেও যাঁকে সম্মান দিয়েছে বিজেপি, এমন-কি মন্ত্রিত্বও দেওয়া হয়েছিল, অথচ প্রথম দিন থেকেই বিজেপির সর্বনাশ চোইছিলেন তিনি। নাম না করে সুদীপ রায়বর্মণকে বেজায় ঠুকেছেন অসমের বাগ্মী মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা। সাথে তাঁর কটাক্ষ, কংগ্রেস পুরনো নোট, তাই দেশের মানুষ ওই দলকে হাতে নিতে চাইছেন না। আজ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে অসমের মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারে ব্যাঘাত ঘটেছে। তাঁর নির্ধারিত সমস্ত কর্মসূচি বাতিল হয়েছে। শেষে সন্ধ্যায় ৬-আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রে আয়োজিত জনসভায় অংশ নিয়ে তিনি ফিরে গেছেন গুয়াহাটি।
আজ রবিবার সকালে আগরতলায় আসেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা। বিমানবন্দরে তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে। এর পর ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সহ বিজেপি নেতৃবৃন্দ তাঁকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। এদিন তাঁর চারটি কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু ভারী বর্ষণের জেরে সমস্ত কর্মসূচি বাতিল করতে হয়েছে। যুবরাজনগর বিধানসভা কেন্দ্রের সভায় তিনি আগরতলা থেকে টেলিফোনে কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন।
এদিন সন্ধ্যায় তিনি হিন্দি স্কুলে ৬-আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রের সভায় অংশ নেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্যই দেশ কোভিডের প্রকোপ থেকে বাঁচতে পেরেছে। কংগ্রেসের দুর্নীতির জন্য পিছিয়ে পড়া দেশ আজ মোদীজির দিশা-নির্দেশনায় উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। তাঁর দাবি, ২০১৪ সালের পর থেকে দেশে নির্বাচনে জয়ী হতে পারেনি কংগ্রেস। অসম, মণিপুর, ত্রিপুরা, অরুণাচল প্রদেশ সহ একাধিক রাজ্যে কংগ্রেসকে পরাজিত করেছে বিজেপি। তিনি জোর গলায় বলেন, উন্নয়নের প্রশ্নে দেশবাসী বার বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নির্বাচিত করছেন।
হিমন্তবিশ্বের কটাক্ষ, আরবিআই পুরনো নোট বাতিল করেছে। তাই মানুষ পুরনো নোট ব্যবহার করেন না। তেমনি, কংগ্রেসের অবস্থাও পুরনো নোটের মতোই হয়েছে। তাই দেশবাসী কংগ্রেসকে হাতে নিতে চাইছেন না। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কংগ্রেসের দুর্নীতির কারণেই দেশ ৭৫ বছর পিছিয়ে গেছে।
এদিন তিনি ৬-আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের জন্য ওই কেন্দ্রে বিজেপিত্যাগী বিধায়ককে একহাত নিয়েছেন। তিনি বলেন, দলবদলু নেতাকে বিজেপিতে শামিল না করার জন্য দলীয় নেতা কর্মীরা অনুরোধ করেছিলেন। তাঁদের আপত্তি সত্ত্বেও দলবদলু নেতাকে বিজেপিতে শামিল করা হয়েছিল এবং সম্মানের সাথে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। শুধু তা-ই নয়, ভোটে জেতার পর তাঁকে মন্ত্রীর দায়িত্বও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রথম দিন থেকেই ওই নেতা বিজেপির সর্বনাশ চাইছিলেন। নাম না করে অসমের মুখ্যমন্ত্রী সুদীপ রায়বর্মণকে এভাবেই বিঁধেছেন।
তাঁর আবেদন, উন্নয়নের দিশায় রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য উপনির্বাচনে দলবদলু নেতাদের যোগ্য জবাব দিন। বিজেপি প্রার্থীকে জয়ী করে এই দলকে আরও শক্তিশালী করুন। তাঁর বিশ্বাস, উপনির্বাচনে বিজেপি প্রত্যাশা ছাপিয়ে ফলাফল করবে।