স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ২৯ মে : আধুনিক পদ্ধতির মাধ্যমে কৃষকদের স্বনির্ভর করার জন্য চেষ্টা করছে সরকার। কারণ সরকারের মূল উদ্দেশ্য হলো অন্নদাতাদের শক্তিশালী করা। বৃহস্পতিবার বিশ্রামগঞ্জ স্থিত শচীন দেববর্মন হলে বিকশিত কৃষি সংকল্প অভিযানের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখে এই কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। তিনি বলেন, সরকারের আগামী দিনের লক্ষ্য হলো কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করা, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং স্থায়ী সম্পদের জন্য কাজ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন থাকবে স্বয়ম্বর হতে বৈচিত্র্যময় শস্য উৎপাদনে গুরুত্ব দিতে হবে সরকারকে। বিশেষ করে প্রাকৃতিক ও জৈব চাষেও গুরুত্ব দিতে হবে।
রাজ্যে মোট ৪ লক্ষ ৭২ হাজার কৃষক রয়েছে। এই অন্নদাতাদের কাছে সেরা প্রযুক্তি পৌঁছে দিতে হবে। ২০১৪-১৫ সালে কৃষকদের আয় ছিল ৬৫৮০ টাকা। বর্তমানে বেড়ে হয়েছে ১৩ হাজার ৫৯০ টাকা। প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনায় ১০ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকার অধিক পেয়েছে রাজ্যের কৃষকরা। কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা পেয়েছে ২,২০০ কোটি টাকার অধিক পেয়েছে কৃষকরা। ৪৪৬ কোটি টাকার অধিক ধান কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করা হয়েছে। ২০৪ কোটি টাকার অধিক ভর্তুকিতে কৃষকদের সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। আয়োজিত অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী রতন লাল নাথ বক্তব্য রেখে বলেন, খাদ্য নিরাপত্তার জন্য এই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
বিশেষ করে কৃষি স্বয়ম্বর রাজ্য করতে ত্রিপুরায় এ কার্যক্রমের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে রাজ্য সরকার। এই কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে কিভাবে মাটি ছাড়া কৃষিকাজ করা যায়, ড্রোনের মাধ্যমে কিভাবে ফসলের উপর সার দেওয়া যায় ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হবে। গোটা কার্যক্রমের মাধ্যমে আধুনিক ভাবে কৃষি কাজে বিষয়ে অবগত করা হবে। এছাড়া আধুনিক ফসল কিভাবে উৎপাদন করা যায় সে বিষয়ে কৃষকদের অবগত করা হবে। এর সাথে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে পশুপালন ও মৎস্য চাষের বিষয়ে অবহিত করা হবে কৃষকদের। রাজ্যের ২ লক্ষ ৮৪ হাজার কৃষক পাচ্ছে কৃষক নিধি প্রকল্পের সুবিধা। আরো এক লক্ষ কৃষক এই প্রকল্পের সুবিধায় আসতে পারে। এর জন্য এই কার্যক্রমে অংশ নিতে আহ্বান জানান মন্ত্রী রতন লাল নাথ। ১২ জুন পর্যন্ত সারাদেশের সাথে ত্রিপুরা রাজ্য এই অভিযান চলবে। ৮৬৪ টি জায়গায় এই অভিযান চলবে। প্রত্যেক জেলায় তিনটি কমিটি করা হয়েছে। প্রত্যেকদিন তিনটি করে দুই শতাধিক কৃষকদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। প্রথম বৈঠক হবে সকাল ৯ টা থেকে এগারোটা, দ্বিতীয় বৈঠক হবে বারোটা থেকে দুইটা এবং তৃতীয় বৈঠক হবে দুপুর তিনটা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত। প্রতিটি বৈঠকে কৃষি দপ্তর, উদ্যান দপ্তর, প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর, মৎস্য দপ্তর, কৃষি বিজ্ঞানীরা উপস্থিত থাকবেন। প্রত্যেক জেলা তিনটি কমিটির মধ্যে প্রত্যেক কমিটির সাথেই একটি করে রথ থাকবে। এই রথে বিভিন্ন প্রকল্পের উল্লেখ থাকবে। তৎসঙ্গে কেন্দ্র এবং রাজ্যের প্রচার পত্রিকা বিলি করা হবে।