স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ১২ মে : মঙ্গলবার আগরতলা স্থিত রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ত্রিপুরা পুলিশের চাকরিপ্রাপ্য ৯৭৫ জনের হাতে চাকরির অফার তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের আগের তুলনায় যথেষ্ট ভালো হয়েছে। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে মামলা ১৯.৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এবং ২০২৫ সালে গত চার মাসে ১০ শতাংশ মামলা হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশের অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের গ্রেফতারের হার ৩৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে রাজ্যে। গত বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচন রাজ্য পুলিশের কারণে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
এই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিয়ে দেশের নির্বাচন কমিশন ত্রিপুরা পুলিশের ভুয়সী প্রশংসা করেছেন। সরকার চায় এইভাবেই ত্রিপুরার গণতন্ত্র বজায় থাকুক। কিন্তু বিভিন্ন সময় কিছু বিষয় নিয়ে হইচই করে ত্রিপুরায় গণতন্ত্র নেই বলে দাবি করে। তাদের উদ্দেশ্যে বলা হচ্ছে আপনারা পিছনের দিকে ফিরে দেখুন। বিশেষ করে অতীতের নিউজ পেপার গুলি কাটিং সংগ্রহ করে দেখুন কি ছিল ত্রিপুরা! মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ত্রিপুরার আইনশৃঙ্খলা ১০০ শতাংশ ঠিক হয়ে গেছে বলে দাবি করে না সরকার, কিন্তু আগের তুলনায় আইনশৃঙ্খলা অনেক উন্নত হয়েছে রাজ্যে। তবে যারা আইনশৃঙ্খলা নষ্ট করার চেষ্টা করবে তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী এদিন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সোশ্যাল মিডিয়াতে এখন যা খুশি তা লেখা যায়। তাই রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার দিকে কড়া নজরদারি রয়েছে। কাউকেই ছাড়া হবে না। তাই বিতর্কিত ও কুরুচিকর মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে মুখ্যমন্ত্রীর আহবান।
অনুষ্ঠানে বিরোধীদের খোঁচা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ৩৫ বছর ও এর আগে ৫ বছরের সরকার রাজ্যের মানুষ দেখেছে। সেই সময় বিধায়কদের বাড়ি এবং পার্টির অফিস থেকে চাকরির অফার বিলি হতো। কিন্তু বর্তমানে প্রত্যেকটা চাকুরি স্বচ্ছতার নিরিখে হচ্ছে বলে মন্ত্রীদের সাহস আছে মঞ্চে দাঁড়িয়ে অফার বিলি করার। মুখ্যমন্ত্রী বিগত সরকারদের কাঠগড়ায় তুলে বলেন আপনারা যা করেছেন সেটা আমরা করব না। কিন্তু আমরা যা করছি সেটা থেকে আপনাদের শিক্ষা নিয়ে আগামী দিন করা দরকার। যারা নতুন চাকরি পেয়েছে তাদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা সকলে মানুষের জন্য কাজ করবেন। আপনাদের বেতন হবে মানুষের করের পয়সা দিয়ে। বিশেষ করে আপনারা যেখানেই পোস্টিং পাবেন সেখানেই রাষ্ট্রবাদী চিন্তাধারা নিয়ে মানুষের সাথে বন্ধুত্বমূলক আচরণ করে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। তাহলে রাজ্য পুলিশ মানুষকে নিয়ে চলতে পারবে। এবং নিজেদের মধ্যে আত্মসন্তুষ্টি আসবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠান শেষে মুখ্যমন্ত্রী চাকরিপ্রাপ্যদের হাতে অফার তুলে দেন। মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী সুধাংশু দাস, মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার, রাজ্য পুলিশের মহা নির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন সহ দপ্তরের বিভিন্ন পুলিশ আধিকারিক।