স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক , আগরতলা। ১১ মে : সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে মানুষের সামনে দাঁড়াতে পারছে না। তাদের দুর্বলতা আড়াল করতে বর্তমানে ত্রিপুরা রাজ্যে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চাইছে শাসক দল বিজেপি। রবিবার সিপিআইএম রাজ্য কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কথা বলেন সিপিআইএম কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এম এ বিবি এবং পলিটব্যুরোর সদস্য জিতেন্দ্র চৌধুরী। সিপিআইএম কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এম এ বিবি বলেন, ভারত পাকিস্তানের মধ্যেকার যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি শিথিল করার জন্য দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত এবং পাকিস্তান সরকারকেই আলোচনা করে সমাধান সূত্র বের করতে হবে। এর জন্য তৃতীয় পার্টির প্রয়োজন কেন।
ভারত এবং পাকিস্তানের ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস এর মধ্যেকার আলোচনার ২৪ ঘন্টা আগে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়ে দিলেন তার মধ্যস্থতায় ভারত এবং পাকিস্তান সংঘর্ষ বিরতিতে রাজি। যা পুরোপুরি অপ্রত্যাশিত ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাবখানা এরকম যেন তিনি শুধুমাত্র আমেরিকার রাষ্ট্র প্রধান নন, তিনি গোটা বিশ্বের প্রেসিডেন্ট। ভারত সরকারের বিদেশ সচিব জানিয়েছেন সিজ ফায়ার এর জন্য পাকিস্তানের ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস ফোন করে আবেদন করেছে ভারতের ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশন এর কাছে। বিদেশ সচিবের এই বক্তব্য গ্রহণযোগ্য এবং প্রত্যাশিত। কিন্তু এই রকম পরিস্থিতিতে সিজ ফায়ার নিয়ে তৃতীয় দেশের ভূমিকা কি এবং কেন তা পরিষ্কার করতে হবে ভারত সরকারকে।
এই দাবি করেছেন সিপিআইএমের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মারিয়াম আলেকজান্ডার বেবি। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা পলিটব্যুরোর সদস্য জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, মূলত দেশের চলমান পরিস্থিতি এবং অচল অবস্থা তৈরি করে যে একনায়কতন্ত্র তৈরি করেছে তা স্বাধীনতা সংগ্রামের পরিপন্থী। ভারতীয় জনতা পার্টি এ ধরনের আক্রমণ প্রতিহত করা নিয়ে আজকের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন পশ্চিমবঙ্গ এবং ত্রিপুরায় সিপিআইএম ক্ষমতায় না থাকলে খুব গুরুত্ব সহকারে এই সমস্যা গুলি দেখে কর্মসূচি গ্রহণ করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। তবে অতীতে বামফ্রন্টের গণতান্ত্রিক শক্তি গোটা দেশকে পথ দেখিয়েছে। বর্তমানে ত্রিপুরার ক্ষেত্রে শাসক দল তাদের কার্যকলাপের জন্য জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে। এদিকে প্রতিদিন রাস্তায় নেমে জল, বিদ্যুৎ এবং শিক্ষা ব্যবস্থা সহ বিভিন্ন জলন্ত ইস্যু নিয়ে মানুষ প্রতিবাদ করছে। রেগা মজুরি না পেয়ে ব্লক অফিসে তালা দিচ্ছে। তাই তাদের সন্ত্রাসের কৌশল আড়াল করতে প্রতিদিন খেলা মেলার নামে মাইক্রোফোন লাগিয়ে প্রচার করছে। সম্প্রতি রাজনগরে, ধর্মনগরে, উদয়পুর, মোহনপুর মান্দায় এবং ডুকলি মহকুমা অফিস সহ বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ অব্যাহত রেখেছেন। দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর এবং নেতৃত্ব সহ কর্মী সমর্থকদের মারধর করেছে। এর বিরুদ্ধে আগামী দিন কিভাবে রুখে দাঁড়ানো যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। সাংবাদিক সম্মেলনে বিরোধী দলনেতা আরো বলেন, দেশে যখন এক পরিস্থিতি কায়েম হয়ে আছে তখন গত দুদিন ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে ত্রিপুরার সংখ্যালঘুদের মধ্যে এক আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে শাসক দল। এর তীব্র নিন্দা জানান তিনি। আরো বলেন সিপিআইএম পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা কমিটির সম্পাদক রতন দাস এবং কৃষ্ণ রক্ষিতকে রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীতে নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি হরিবল দেবনাথ এবং লংতরাই ভ্যালির সম্পাদক হিমাংশুদেরকে কমিটিতে আমন্ত্রিত সদস্য করা হয়েছে। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএম নেতৃত্ব মানিক দে।