স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১২ মে : ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে রাজ্যের প্রতিটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে কমিউনিটি হেলথ অফিসার নিয়োগ করে সেই গুলিকে হেলথ এন্ড ওয়েলনেস সেন্টারে পরিণত করা হবে। তার জন্য ৯৯৯ জন কমিউনিটি হেলথ অফিসার প্রয়োজন। ইতিমধ্যে ৪৩৪ জন নিয়োগ করা হয়েছে।
সহসাই বাকি শূন্যপদ গুলির জন্য নিয়োগ করা হবে। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক সেবিকা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আলোচনা করতে গিয়ে এই কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। একটা সময় ত্রিপুরা থেকে বড় মাত্রায় রোগী রেফার নিয়ে বহিঃরাজ্যে চিকিৎসার জন্য চলে যেত। বর্তমানে রাজ্য থেকে বহিরাজ্যে রোগী রেফারের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। জিবি হাসপাতালে বর্তমানে ওপেন হার্ট সার্জারি হয়। বড় বড় জটিল অস্ত্রোপচার বর্তমানে জিবি হাসপাতালে হয়।
এটা কখনো ত্রিপুরার মানুষ কল্পনাও করতে পারেনি। রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। একটা রাজ্যের উন্নয়নের মাপকাঠি নির্ভর করে সেই রাজ্যের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থার উপর। পূর্বতন সরকারের সময় ত্রিপুরা রাজ্যকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাওয়ার কোন প্রবণতা ছিল না। মানুষকে দিয়ে সেই সময় শুধুমাত্র মিছিল-মিটিং করানো হতো। আর কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হতো। বর্তমানে ত্রিপুরা রাজ্য নতুন দিশাতে চলছে। তিনি আরো বলেন সরকারি চাকুরির দিকে তাকিয়ে না থেকে বেসরকারি চাকুরি কিংবা ব্যবসা করতে হবে। স্বরোজগারি হতে হবে। নেশায় আসক্ত হয়ে গেলে চলবে না। নেশার করাল গ্রাস থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার পাশাপাশি প্রতিবেশীকেও মুক্ত রাখতে হবে। কেউ এলাকায় নেশা সামগ্রী বিক্রি করলে পুলিশকে অবগত করতে হবে। সকলে মিলে আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়তে হবে। আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়তে গেলে স্বরোজগারি মহিলা ও স্বরোজগারি পুরুষ চাই। রাজ্যের ৭৮ টি থানার মধ্যে মহিলাদের জন্য ডেস্কের ব্যবস্থা করা হবে।
তার পাশাপাশি মহিলাদের নামে জায়গা কিংবা জমি রেজিস্ট্রি করলে সেই ক্ষেত্রে ২ শতাংশ রাজস্ব কম দিতে হবে। নারী নির্যাতনের মতো ঘটনা যেন হ্রাস পায় তার জন্য রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠার পর সকল উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে কমিউনিটি হেলথ অফিসার নিয়োগ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্কিম লাগু করেছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। ত্রিপুরা রাজ্যে ৫০ শতাংশ মহিলা রয়েছে। মহিলারা স্বরোজগারি না হলে ত্রিপুরাকে কোনদিনও স্বনির্ভর ত্রিপুরায় পরিণত করা সম্ভব নয়। তাই সব ক্ষেত্রে মহিলাদের সমান অংশীদারিত্ব থাকতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত সেবিকাদের উদ্দেশ্যে বলেন কোন ব্যক্তি অসুস্থ হলে তবেই সে হাসপাতালে আসে। আর অসুস্থ ব্যক্তি কখনোই সুস্থ ব্যক্তির ন্যায় ব্যবহার করবে না। তাই সেবিকাদের ধৈর্য সহকারে রোগীর সাথে ভালো ব্যবহার করতে হবে। হাসপাতালে কর্মরত সেবিকারা ধৈর্য হারিয়ে ফেললে চলবে না। পাশাপাশি নার্সিং পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী আহ্বান জানান নেশা থেকে সর্বদা নিজেদেরকে দূরে রাখার জন্য। এদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, সাংসদ তথা ডাক্তার মানিক সাহা, স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা ডাক্তার সুভাশিষ দেববর্মা, মেডিকেল এডুকেশনের অধিকর্তা ডাক্তার চিনময় বিশ্বাস, ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড প্রিভেনটিভ মেডিসিনের অধিকর্তা ডাক্তার রাধা দেববর্মা সহ অন্যান্যরা। অনুষ্ঠানে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত সেবিকাদের পাশাপাশি বিভিন্ন নার্সিং প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়াদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।