স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ১৩ এপ্রিল : ত্রিপুরা রাজ্যে বেসরকারি বিদ্যুৎ সংস্থা গুলোর রেকর্ড যে মোটেও ভালো নয় তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। বেসরকারি বিদ্যুৎ সংস্থার এক কর্মীর মৃত্যুর পরেও জিবি হাসপাতালে খোঁজ-খবর নিতে যান নি সে সংস্থার কোন আধিকারিক থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ নিগমের কোন আধিকারিক। এ নিয়ে রবিবার দুপুরে সৃষ্টি হলো বড় ঝামেলা। মৃত বিদ্যুৎ কর্মীর মরদেহ নিয়ে রাজধানীর ভুতুরিয়া বিদ্যুৎ নির্গম অফিসের সামনে এসে জমায়েত হয় বেসরকারি বিদ্যুৎ সংস্থার কর্মীরা। পথ অবরোধ করে তাদের দাবি তুলে বলেন, বিদ্যুতের কাজ করতে গিয়ে গত রবিবার গুরুতর আহত হয়েছিলেন তাপস নমঃ দাস নামের এক বিদ্যুৎ কর্মী।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সেসময় ভর্তি করানো হয়েছিল আগরতলার জিবি হাসপাতালে। টানা ছয় দিন জিবি হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর শনিবার দুপুরে চিকিৎসার যাবতীয় বাধন ছেড়ে তাপস মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। তাপস নমঃ দাসের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই আগরতলার জিবি হাসপাতালে ছুটে যান তার সহকর্মীরা। বিদ্যুৎ কর্মীদের অভিযোগ ভীষণ প্লাস নামের বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানি থেকে কোন ধরনের সহযোগিতা পায়নি তাপস নম দাসের পরিবার। যার কারনে শনিবার বিদ্যুৎ কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিদ্যুৎ কর্মীদের সুরক্ষার বিষয়টি দেখার জন্য রাজ্য সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা। ক্ষুব্ধ বিদ্যুৎ কর্মীরা ভুতুরিয়া বিদ্যুৎ দপ্তরে এসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। বিদ্যুৎ কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় ভীষণ প্লাস নামের বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানির অনিকেত পালকে। পরবর্তী সময়ে রবিবার বিদ্যুৎ কর্মী তাপসের মৃতদেহ ময়না তদন্তের পর পরিবার এবং সহকর্মীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
জিবি হাসপাতালে মর্গ থেকে মৃতদেহ নিয়ে আসে ভুতুরিয়া বিদ্যুৎ নিগম অফিসের সামনে। সেখানে বিদ্যুৎ কর্মীরা জমায়েত হয়ে তীব্র আন্দোলন শুরু করে। তাদের আরো দাবি প্রায় ২০০ জনের মত কর্মী বিদ্যুৎ সংস্থার অধীনে কর্মরত। তাদের কাছ থেকে গ্রুপ ইন্সুরেন্সের নাম করে টাকা কাটা হলেও এখন পর্যন্ত তারা কোন কাগজ হাতে পায়নি। প্রতিনিয়ত তাদের মৃত্যু হচ্ছে। অথচ তাদের পরিবার কোনরকম সহযোগিতা পাচ্ছে না। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো কোন বিদ্যুৎ কর্মী গুরুতর আহত হলে তার চিকিৎসার খরচ পর্যন্ত বহন করছে না সংস্থা। আরো বলেন তারা যখন কাজ করতে যায় তখন তাদের কোনরকম সুরক্ষা সামগ্রী দেওয়া হয় না। যার কারণে বর্তমানও দুজন বিদ্যুৎ কর্মী গুরুতর আহত হয়ে জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। তারা জানান কাজে নিয়োগ হওয়ার সময় তাদের বলা হয়েছিল প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। অথচ সংস্থার পক্ষ থেকে কোন রকম প্রশিক্ষণ এখন পর্যন্ত তাদের দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন পূর্ব আগরতলা থানার পুলিশ। পুলিশ তাদের আশ্বস্ত করেন বিষয়টি অবিলম্বে গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে। কিন্তু পুলিশের আস্বস্তি তারা সন্তুষ্ট নয়। তারা শেষ পর্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করে বলেন প্রায়ই তাদের সহকর্মী হারাচ্ছে। কিন্তু সহকর্মীদের মৃত্যুর পর ফুল দিয়ে পর্যন্ত সম্মান জানানো হয় না। এ দিনের ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে গোটা এলাকায়। পরিস্থিতি উদ্বেগ জনক দেখে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।