স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ২৫ মার্চ :কলঙ্কিত বিধানসভা অধিবেশন। শাসক, বিরোধীর লড়াইয়ে অন্যতম নাটক মঞ্চস্থ হলো বিধানসভা অধিবেশনের চতুর্থ দিন অর্থাৎ বুধবার। এদিন সকালবেলা পরিষদীয় মন্ত্রী রতনলাল নাথের অসাংবিধানিক মন্তব্য নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিধানসভা। অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন বিরোধী বেঞ্চের কথা কর্ণপাত না করায় একটা সময়ের পর নিজ নিজ আসন ত্যাগ করে অধ্যক্ষের সামনে গিয়ে বিক্ষোভের সামিল হয় প্রধান বিরোধী দলের বিধায়করা। কিন্তু কোন পাত্তা না পেয়ে অবশেষে ওয়ার্ক আউট করে বিধানসভা থেকে বের হয়ে তারা বাকি দিনগুলি বয়কট করার ঘোষণা দেন।
তারপরেই পরিস্থিতি ধীরে ধীরে অন্যদিকে মোড় নিতে শুরু করে। বিধানসভা থেকে বের হয়ে গান্ধীর মূর্তির পাদদেশে জমায়েত হন সি পি আই এম দলের বিধায়করা। তারপর সিপিআইএম বিধায়করা ডঃ বি আর আম্বেদকরের মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় শামিল হন। স্লোগান তুলেন ত্রিপুরার বিধানসভার গরিমা নষ্ট করা যাবে না। উপস্থিত বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে জানান, বিধানসভা এবং মহাকরণের চত্বরে সংবিধান প্রণয়নকারী ডঃ বি আর আম্বেদকরের মূর্তির পাদদেশে এসেছেন বিরোধী দলের বিধায়করা। কারণ ডঃ বি আর আম্বেদকরের রচিত সংবিধানের হাত ধরে আজকের মন্ত্রী বিধায়ক হয়েছেন শাসক দলের সদস্যরা। এবং বিধানসভার অধ্যক্ষের আসনে যে বসেছেন তাঁর হাতেই আজ বিধানসভায় সংবিধান পদদলিত ও অপমানিত হয়েছে। সারা রাজ্যে প্রশাসনকে অচল করে দুর্নীতি, মিথ্যাচারের সংক্রামকতা চলছে, এর হাত থেকে রেহাই পায়নি বিধানসভা।
কারণ মঙ্গলবার বিধানসভার ভেতরে পরিশোধীয় মন্ত্রী যে অসভ্যতা করেছেন তার জন্য অধ্যক্ষের কাছে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। তারপর দেখা দেয় পড়ে যায় শাসক শিবির। অপরাধী রতন লাল নাথ কে বাঁচানোর জন্য অধ্যক্ষের নেতৃত্বে মঙ্গলবার রাতে এই বিধানসভায় চক্রান্ত হয়েছে। রাত প্রায় দশটা পর্যন্ত রেকর্ডিংগুলি পরিবর্তন করা যায় সেটা করার চেষ্টা করেছে। শেষ পর্যন্ত আজ অধ্যক্ষ বলছেন পরিষদীয় মন্ত্রীর পিএ নাকি অধ্যক্ষ সাহেবের পিএ -এর কাছে চিঠি দিয়েছেন। এভাবে অধ্যক্ষ বুঝাতে চেয়েছেন বিরোধী দলনেতার চিঠি বাতিল হয়ে গেছে। বিরোধী দলনেতা আরো বলেন এভাবে মন্ত্রী রতন লাল নাথ সাম্প্রদায়িক কথা বলতে পারেন না। ত্রিপুরা বিধানসভার ইতিহাসে এমন কলঙ্ক আর নেই। তাই আজ সংবিধান বাঁচানোর শপথ নিতে ডঃ বি আর আম্বেদকর মূর্তিকে সাক্ষী করতে আসা। যাতে আগামী দিন সংবিধানের ঐতিহ্য রক্ষা করা যায়। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা বিধানসভা অধিবেশনে প্রধান বিরোধী দল সিপিআইএমের উদ্দেশ্যে দাবি করেন, তারা যাতে গণতন্ত্র মানে। বিধানসভা অধিবেশনের বাকি দিনগুলি বয়কট না করে যে সমস্যা হয়েছে সেগুলি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে এগিয়ে আসেন। এখন দেখার বিষয় বিরোধী দলের সদস্যরা কোন পথে হাটেন।