স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩০ এপ্রিল : ভেটেনারি দিবস উপলক্ষ্যে শনিবার ত্রিপুরা ভেটেনারি কাউন্সিলের উদ্যোগে এক রক্তদান শিবির ও সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর নজরুল কলাক্ষেত্রে আয়োজিত এইদিনের রক্তদান শিবির ও কর্মশালা উদ্বোধন করেন মন্ত্রী ভগবান দাস। তিনি বক্তব্য রেখে বলেন, মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস বলেন প্রানী সম্পদ বিকাশ দপ্তর একটা গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর। তাই সমগ্র বিশ্ব পশু পালনের উপর গুরুত্ব দিয়েছে।
গ্রামীণ এলাকার মানুষ পশু পালন অর্থাৎ প্রানী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের সাথে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ভাবে যুক্ত। প্রানি সম্পদ বিকাশ দপ্তর গ্রামীণ এলাকার মানুষকে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী করে তোলে। মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বক্তব্য রয়েছে বলেন, বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবস সারা বিশ্বের প্রাণীসেবায় কর্মরত ভেটেরিনারিয়ানদের জন্য একটি বিশেষ দিন। প্রতি বছর এপ্রিল মাসের শেষ শনিবার সারা বিশ্বে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয় এই দিবস। প্রতি বছর ভেটেরিনারি পেশা সর্ম্পকে সাধারণ মানুষকে অবগত করণ সহ উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে ওয়ার্ল্ড ভেটেরিনারি ডে মর্যাদার সাথে রাজ্যেও পালন করা হয়। আন্তর্জাতিক ভেটেরিনারি দিবস এর মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে পশু চিকিৎসা স্থিতিস্থাপকতা শক্তিশালীকরণ করা।
প্রাণী স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা এবং পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি ভেটেরিনারি পেশাকে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে পৌছে দেওয়া এবং প্রাণী ও মানুষের উন্নয়নে কাজ করা, পরিবেশের উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা এবং প্রাণী পরিবহন ও কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরনে ভূমিকা রাখাই আজকের দিনটির মূল লক্ষ্য। পাশাপাশি মানুষের সুস্থ থাকার জন্য এখন প্রানীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা রাখাটা বেশী জরুরী। পৃথিবীর প্রাণীকুলের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত না থাকলে মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকবে না। যার প্রমান অতীত ও বর্তমানের “কোভিড-১৯” মহামারি দেখলেই বোঝা যায়। প্রানীর স্বাস্থ্য সেবা, খাদ্য, চিকিৎসা, লালন পালনে একমাত্র দায়িত্ব ও কর্তব্য ভেটেরিনারিয়ানদের। একজন ভেটেরিনারিয়ানই পারেন বিশ্বের প্রাণীকুলকে প্রকৃত সেবা দিতে বলে জানান মন্ত্রী। ভেটেরিনারিয়ানরা অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন ভাইরাস যেমন- ইবোলা, সোয়াইন ফ্লু, বার্ড ফ্লু, র্যাবিস , ফুট এন্ড মাউন্ড ডিজিস -এর মত জুনেটিক ডিজিস নিয়ে কাজ করছেন। ভাইরাস নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা অনেক বেশী ভেটেরিনারি ডাক্তারদের। মহামারিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা সনাক্তকরণে টেকনিক্যাল সাপোর্ট ও প্রশিক্ষণ প্রদান করে যাচ্ছেন ভেটেরিনারিয়ানরা। শুধু তাই নয়, মানুষে করোনা টিকা প্রদানের জন্য ভেটেরিনারিয়ানদের সহযোগিতা নিচ্ছে বিভিন্ন দেশ। ভারতবর্ষেও করোনা টেস্ট ল্যাব স্থাপন এবং বিভিন্ন সরকারী ও বেসসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অনেক ভেটেরিনারিয়ান করোনা মোকাবিলায় কাজ করেছেন বলে জানান তিনি। কোভিড-১৯ মহামারী মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর জীবনকে দ্রুত বদলে দিচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করছে বিশ্বব্যাপী মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর জীবনযাত্রাকে। তবুও এই চ্যালেঞ্জ সময়ের মধ্য দিয়ে ভেটেরিনারিয়ানরা পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে তাদের সেবা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। প্রযুক্তির সমন্বয়ে তারা প্রাণীর স্বাস্থ্য ও কল্যাণ এবং নিরাপদ প্রোটিন সরবরাহের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্যে তাদের ভূমিকা অব্যাহত রেখেছেন। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
তাই বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবস-২০২২ সফল ও সার্থক করতে প্রত্যাশা করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস, মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী রক্তদান শিবির ঘুরে দেখে রক্ত দাতাদের উৎসাহিত করেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রানী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের অধিকর্তা দিলীপ কুমার চাকমা, ত্রিপুরা ভেটেনারি কাউন্সিলের সভাপতি ডাক্তার চিন্টু দেববর্মা সহ অন্যান্যরা।