স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ২১ মার্চ : ককবরক ভাষার পাঠ্য বই রোমান হরফে করা এবং ককবরক প্রশ্নপত্র রোমান হরফের দাবিতে তিপরা স্টুডেন্টস ফেডারেশনের পক্ষ থেকে শুক্রবার সকাল থেকে জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। এইদিন সকাল থেকেই রাজ্যের প্রধান জাতীয় সড়ক অবরোধে বসে টি এস এফ। দিকে দিকে তারা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বসে। ব্যতিক্রম হয়নি আগরতলা শহরেও। রাজধানীর সার্কিট হাউস এলাকায় টিএসএফ কর্মী সমর্থকরা রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করে। নেতৃত্ব দেন টি এস এফ -এর আগরতলা টাউন কমিটির সভাপতি মনীষ দেববর্মা।
তিনি সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ১৯৬৮ সাল থেকে ককবরক ভাষা রোমান হরফে লেখার সুযোগ নিয়ে আন্দোলন চলছে। বিগত দিনে শ্যামা চরণ ত্রিপুরা কমিশন, পবিত্র সরকার কমিশন এবং অতুল দেববর্মা কমিশন হয়েছে। রিপোর্ট রোমান হরফের পক্ষে গেলেও সরকার রিপোর্ট ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে। তিনি আরো বলেন জনজাতিদের আবেগ নিয়ে খেলছে সরকার। ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে রাজনীতি করে চলেছে। তাই গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদে জাতীয় সড়ক বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আর বিকল্প কোন পথ তাদের কাছে খোলা নেই বলে জানান। এদিকে সার্কিট হাউস এলাকায় দুপুর বারোটা নাগাদ আন্দোলনকারীদের সাবাসী দিতে গেলেন তিপরা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ। তিনি সংবাদ মাধ্যমে মুখোমুখি হয়ে বলেন, এটা কোন রাজনৈতিক দলের আন্দোলন নয়। তিপ্রাসাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন চলছে। এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। পার্লামেন্টের ভেতর আমাদের বিধায়করা এই দাবি নিয়ে আওয়াজ তুলবে, আর রাস্তায় আওয়াজ তুলবে আমাদের লোকেরা। যতদিন না দাবি পূরণ হবে ততদিন আন্দোলন চলবে।
ছাত্র ছাত্রীরা পাস না করলে তাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হবে। তারা ভুল পথে অগ্রসর হবে। তখন আপনারা আমাদের উগ্রপন্থী বলবেন। তিনি আরো বলেন, জোট তিপ্রাসাদের সঙ্গে। কোন পার্টি এবং সরকারের সাথে জোট হয়ে এই আন্দোলন নয় বলে জানান তিনি। এদিকে বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন এদিন বিধানসভা অধিবেশনে যাওয়ার সময় অবরোধের মুখোমুখি হন। বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনকে ঘেরাও করে আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি উত্থাপন করেন। বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন বলেন, রাজ্যের আঞ্চলিক দলগুলি এবং কংগ্রেস দলের দীর্ঘদিনের দাবি ককবরক ভাষাকে রোমান হরফে লেখার সুযোগ দেওয়ার জন্য। কারণ ছাত্র-ছাত্রীরা দেব নাগরিক হরফের জন্য সমস্যায় পড়ছে। কিন্তু সরকার তাদের আন্দোলন এড়িয়ে একটি বিতর্কিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। আগের সরকারেরও এদিকে কোন হেলদোল ছিলনা। তিনি বলেন, এ বিষয় নিয়ে গত বিধানসভা অধিবেশনেও একমাত্র কংগ্রেস দলের হয়ে তিনি আওয়াজ তুলেছিলেন। অন্য কোন রাজনৈতিক দলের বিধায়ক এই দাবি নিয়ে আওয়াজ তুলেন নি। আজকের বিধানসভা অধিবেশনেও তিনি এই বিষয় নিয়ে আবার আওয়াজ তুলবেন বলে জানান। এদিন দীর্ঘক্ষণ চলে আন্দোলন। এদিকে রাজ্যের গ্রাম পাহাড়েও দেখা গেছে আন্দোলনের গতি। ককবরক ভাষাকে রোমান হরফে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে গন্ডাছড়া মহকুমাও সম্পূর্ণ স্তব্ধ ছিল। বন্ধ ছিল মহকুমার সমস্ত যানবাহন, বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিস এবং দোকানপাট। TISF ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা সকাল থেকেই গন্ডাছড়া মহকুমা হাসপাতাল চৌমুহনী ও নারায়নপুর চৌমুহনীতে অবস্থান নিয়ে পিকেটিং চালায়। সংগঠনের সদস্যরা তাদের দাবির পক্ষে শ্লোগান দিতে থাকেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তাদের নেতৃত্ব ক্ষত্র জয় রিয়াং। এদিকে খোয়াই মহকুমা বেহালাবাড়ি এলাকায় রাস্তায় জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখে এবং বেলফাঙ এলাকায় খোয়াই – আগরতলা সড়ক অবরোধ করে।কমলপুর – খোয়াই জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখে। পাশাপাশি বড়মুড়ায় জাতীয় সড়ক অবরোধ করে চলে টিএসএফের আন্দোলন।