স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ২০ মার্চ : জাতীয় স্তরে রাজ্যের বায়ু টেকনোলজি দপ্তর এবার স্কচ অ্যাওয়ার্ড পেতে চলেছে। দেশের ২৭ টি রাজ্য স্কচ সংস্থার কাছে ৪০০ টি প্রকল্পের জন্য আবেদন করেছিল। তারপর বিভিন্নভাবে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এর মধ্যে এই অ্যাওয়ার্ড জয়ী হয়েছে ত্রিপুরা রাজ্যের বায়োটেকনোলজি দপ্তর। আগামী ২৯ মার্চ দিল্লির হেরেটেজ সেন্টারে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে ত্রিপুরাকে। বৃহস্পতিবার টিএসপিসিবি -র কনফারেন্স হলে ত্রিপুরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তরের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কথা জানান দপ্তরের মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা।
তিনি আরো বলেন, বায়ো টেকনোলজি দপ্তরে যা যা কাজ হয়েছে তার মধ্যে বায়োটেক ক্লাবের আওতায় আনা হয়েছে ১৭ টি রাজ্যের কলেজকে নিয়ে গবেষণার কাজ করা হচ্ছে। আগামী বছর আরো চারটি কলেজকে এই বায়ু ট্যাক ক্লাবের অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চলছে দপ্তরের। ২.৫ লক্ষ টাকার সীমাবদ্ধে থেকে এই কাজগুলি করা হচ্ছে। আগামী দিন বাজেটে এই অর্থ রাশি আরো বাড়ানো যায় কিনা সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। কারণ গবেষণা বাড়ানো গেলে এ ধরনের বহু টেকনোলজি আরও আনা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি। এফ আর ই টি প্রযুক্তির মাধ্যামে জলের দূষণ সনাক্তকরন ইত্যাদি প্রযুক্তি তৈরীর কাজ চলছে। মন্ত্রী বলেন এই ডিরেক্টরেট কেন্দ্রীয় সরকার থেকে প্রাপ্ত অর্থে মাছের বিকল্প খাদ্য তৈরীর একটি প্রকল্প বাস্তিবায়াতি করছে। মন্ত্রী তার বক্তব্যে ত্রিপুরা বায়োটেকনোলজি কাউন্সিলের উদ্যোগে ১৭২ টি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে ডি.এন.এ ক্লাব গঠন করা হয়েছে। এই উদ্যোগের ফলে ছাত্র ছাত্রীরা আজ রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, ভেষজ আবির তৈরী, মাশরুম চাষ, ফল থেকে ডি.এন.এ সনাক্তকরণ, ভেষজ উদ্যান তৈরী, অপ্রযোজনীয় কাগজের রিসাইকেল, এর মাধ্যামে নতুন উপাদান তৈরী সহ মোট ৮০ রকম বিজ্ঞান ভিত্তিক কাজ করতে সক্ষম। এই ডি.এন.এ ক্লাবের অন্তর্ভুক্ত প্রত্যেকটি স্কুলেকে চার বছরের জন্য ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য ছাড়াও অন্যান্য কারিগরি সহায়তা প্রদান করে।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্ধবর্ষে নতুন ৫০টি স্কুলকে ডি.এন.এ ক্লাব প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এছাড়াও ত্রিপুরা বায়োটেকনোলজি কাউন্সিল বাগমাস্থিত বাড়াভাইয়া অর্চার্ডকে প্লান্ট ব্যাঙ্ক অর্ডার্ড পরিণত করার কাজ করছে যাতে করে রাজ্যের মূল্যবান উদ্ভিদের জার্মপ্লাজম সংরক্ষণ করা ও ভবিষ্যতে গবেষণার সুযোগ করে দেওয়া যায়। এবছর মোট ১৫০০ ছাত্র ছাত্রী তাদের শিক্ষামূলকভ্রমণের জন্য জন এই বাগান পরিদর্শন করে এবং আধিকারিকদের থেকে বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা গ্রহন করে। এছাড়াও রাজ্যের বায়োটেকনোলজি দপ্তর এবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইনস্টিটিউট ফর বায়ো-রিসোর্স এন্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট স্থাপনের জন্য মৌ সাক্ষর করে। এর ফলে রাজ্যের ঔষধি গাছের বিজ্ঞান ভিত্তিক ব্যবহারের মধ্যমে ভেষজ ঔষুধ তৈরীর সম্ভানা রয়েছে। ইতিমধ্যে এই সম্পর্কিত একটি প্রকল্প কেন্দ্রীয় সরকারের জৈব প্রযুক্তি দপ্তরে পাঠনো হয়েছে। রাজ্যের বায়োটেকনোলজি দপ্তরের মূল উদ্দেশ্য হল প্রাকৃতিক সম্পদ এবং পরীক্ষিত প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যামে পরিবেশ সংরক্ষণ, আর্থিক সামাজিক উন্নয়ণ ও কর্মসংস্থানে ব্যবস্থা করা। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সচিব কে শশী কুমার, গবেষক অঞ্জন সেনগুপ্ত।