স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা। ১২ মার্চ : তিপরা মথার পূর্বপুরুষেরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নাম দিয়ে আবির্ভাব হয়ে মানুষের সাথে ছিনিমিনি খেলেছে। তারা দেশের ক্রাইমী স্বার্থে বিভিন্ন নামে অতীতে এবং বর্তমানে খুব সক্রিয় হয়ে কাজ করেছে। তাদের সহায়তা করতে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন তৈরি করে বামফ্রন্টের কর্মসূচিকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে গেছে। তারাই আজ তিপরা মথা বলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড, তিপ্রাল্যান্ড এবং ওয়ান লাস্ট ফাইট বলে নাটক করে জাতি জনজাতিকে বিভাজন করার চেষ্টা করছে। তারা ত্রিপুরাকে লুটের শ্রেষ্ঠ রাজ্য হিসেবে তৈরি করেছে।
এর বিরুদ্ধে আগামী দিন লড়াই করতে হবে রাজ্যের মহিলাদের। যেভাবে রাজন্য আমলে রাজার সৈনিকদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন সিপিআইএমের নেত্রীরা, সেভাবেই বিজেপি, আইপিএফটি এবং ত্রিপুরা মাথার বিরুদ্ধে লড়াই করে ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে রাজ্যের মহিলাদের। কারণ তারা ক্ষমতায় থাকলে কখনো নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না। বুধবার সারা ভারত গণতান্ত্রিক নারী সমিতির রাজ্য কমিটির ডাকে আয়োজিত রাজভবন অভিযান থেকে এই কথা বললেন বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী। এদিন নারী নির্যাতনকারিদের শাস্তি, অস্বাভাবিক দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি রোধ, কর্ম সংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি সহ মোট ৬ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এইদিন রাজ ভবন অভিযান করে সারা ভারত গণতান্ত্রিক নারি সমিতি ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী এইদিন সংগঠনের নেতৃত্ব সহ কর্মী সমর্থকরা স্বামী বিবেকানন্দ ময়দান থেকে মিছিল করে রাজভবনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। মিছিলটি সার্কিট হাউসের সামনে পৌঁছানোর পর আরক্ষা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিছিল আটকে দেওয়া হয়। সেখানে করা হয় সভা।
সভায় তিনি ভারতীয় জনতা পার্টির সমালোচনা করতে গিয়ে সর্বপ্রথম আরএসএসকে তুলোধুনো করেন। তিনি বলেন আরএসএস জন্ম লগ্ন থেকে মনোবাদ ও মনো সংস্কৃতির বিশ্বাসী। তারা বিশ্বাস করে নারীদের জন্ম শুধু পুরুষদের সেবা করার জন্য হয়েছে। নারী এবং পুরুষদের মধ্যে সমান দৃষ্টিভঙ্গি নেই তাদের। এই আরএসএস -এর পোশাক হলো বিজেপি। বর্তমানে তাদের নেতৃত্বেই দেশ এবং রাজ্য চলছে। তারা বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও মুখে বলছে, অথচ এইগুলি সব তাদের লোক দেখানো। ইদানিং ভারতীয় জনতা পার্টির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা দলের ডুবন্ত নৌকা বাঁচানোর জন্য আসতে বলে এসে সমাবেশ করে মরিয়া চেষ্টা করে গেছেন। জবরদস্তি করে মানুষকে সমাবেশে এনেছে। কিন্তু আজ গোটা দেশে নারীদের উপর যে ধরনের নির্যাতন সংঘটিত হচ্ছে তার জন্য পুরোপুরি ভাবে দায়ী বিজেপি -র দর্শন। তারা আরএসএস দ্বারা পরিচালিত হয়ে নারীদের অধিকার ভূলুণ্ঠিত করছে। এবং গোটা দেশে নারীদের প্রতি অবিচার চলছে। তাই নারী সমিতি রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে বলে জানান বিরোধী দলনেতা। বিরোধী দলের নেতা আরো বলেন সারা রাজ্যের একটা কমিশনের সরকার চলছে। দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য এবং মহাকুম্ভে পরিণত হয়েছে ত্রিপুরা। আরো বলেন মহিলারা এই সময়ে সংসার পরিচালনা করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। কাজ নেই খাদ্য নেই। রাজ্যে শুধু হাহাকার। যার কারণে পারিবারিক সমস্যা বাড়ছে। নারী পুরুষের সমানভাবে অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা রাজ্যে বেড়ে চলেছে। এর জন্য দায়ী ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, শুধু অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রেই ত্রিপুরা প্রথম রাজ্য নয়, জনসংখ্যার অনুপাতে নারী নির্যাতনের ঘটনায় ত্রিপুরা সবার উপরে রয়েছে। এটা ন্যাশনাল ক্রাইম বোরোর রিপোর্ট বলে দাবি করলেন বিরোধী দলনেতা। আয়োজিত জনসভায় এদিন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নারী নেত্রী রমা দাস। তিনি বিজেপি সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে বলেন, সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিশ্রুতি রাখে নি। রাজ্যে নারী নির্যাতনের ঘটনা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। দোষীদের সঠিক বিচার হচ্ছে না। অপরদিকে মানুষ সঠিক ভাবে রেগার কাজ ও কাজের মজুরি পাচ্ছে না। তাই এইদিন রাজ্য পালের নিকট ডেপুটেশান প্রদান করা হয়েছে।