স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা। ৯ মার্চ : সরকারি স্কুলের শিক্ষিকাকে ধারালো দা দিয়ে মাথায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আক্রমণকারী পালিয়ে গিয়ে সতেরো দিন পর ফের ফোন করে খুনের হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ। অসহায় সরকারি শিক্ষিকা প্রানভিক্ষা চাইলো রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রীর কাছে। ঘটনা কৈলাসহরের পাখিরবাদা গ্রামে। অভিযোগ, কৈলাসহরের ইছবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তিন নং ওয়ার্ডের পাখিরবাদা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা রুখিয়া বেগম। রুখিয়ার জন্মের পর থেকেই রুখিয়ার মা মানষিক অবসাদ গ্রস্ত। রুখিয়ার বাবা পেশায় দিনমজুর। অভাব অনটনের মধ্যেই রুখিয়া কৈলাসহর কলেজ থেকে ২০১৮ সালে রাস্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স নিয়ে পাশ করে।
২০২২ সালে টেট পরীক্ষা দিয়ে সরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষিকার চাকুরি পান। রুখিয়া ঊনকোটি জেলার পেচারতলের নালকাটা এডিসি ভিলেজের অন্তর্ভুক্ত এক সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। রুখিয়া জানান, কয়েক বছর পূর্বে কৈলাসহরের পশ্চিম ইয়াজিখাওড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জলালের সাথে ফোনের মাধ্যমে পরিচয় হয়েছিলো। পরবর্তী সময়ে ২০২৫ সালের কুড়ি জানুয়ারি কৈলাসহর আদালতে রেজিষ্ট্রি করে দুজনের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক দিন পর রুখিয়া জানতে পারে যে, আব্দুল জলাল রুখিয়াকে বিয়ে করার পূর্বে আরও দুটি বিয়ে করেছে এবং আব্দুল জলালের পাঁচজন সন্তানও রয়েছে। এসব জেনে বিয়ের আঠারো দিন পর ২০২৫ সালের সাত ফেব্রুয়ারি রুখিয়া কৈলাসহর আদালতে আব্দুল জলালকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়। এই ডিভোর্স দেওয়ার পর থেকে রুখিয়ার জীবনে একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলছে। ঊনিশ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে রুখিয়া ঘুম থেকে উঠে প্রাকৃতিক কাজে ঘর থেকে বের হলে আব্দুল জলাল ধারালো দা দিয়ে রুখিয়ার মাথায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ।
রুখিয়ার চিৎকার শুনে গ্রামবাসীরা এগিয়ে আসে এবং জেলা হাসপাতাল নিয়ে যায়। রুখিয়ার মাথায় আটটি সেলাই লাগে। ঘটনার পরের দিন সকাল বেলায় রুখিয়ার বাবা কৈলাসহর মহিলা থানায় আব্দুল জলালের নামে লিখিত অভিযোগ করে। রুখিয়া দীর্ঘদিন বাড়িতে থাকার পর কিছুটা সুস্থ হয়ে ৩ মার্চ থেকে রুখিয়া প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে। রুখিয়া স্কুলে যাওয়া শুরু করার পর আব্দুল জলাল রুখিয়াকে ফোন করে হুমকি দিয়ে বলে যে, ‘আগামী পনেরো দিনের মধ্যে তাকে মেরে ফেলবে। এই হুমকি পেয়ে রুখিয়া আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। বাড়িতে মা মানসিক অবসাদগ্রস্ত এবং বৃদ্ধ বাবাও অসুস্থ। মা বাবা ছাড়া বাড়িতে রুখিয়ার কেউ নেই। প্রানে মেরে ফেলার হুমকির রেকর্ডিংটি রুখিয়া পুলিশকে দিয়েছে। এ ব্যাপারে কৈলাসহর মহিলা থানায় যোগাযোগ করে জানা যায় যে, রুখিয়ার বাবার লিখিত অভিযোগ পাবার সাথে সাথেই পুলিশ মামলটি রেজিষ্ট্রি করেছে। পুলিশ অভিযুক্ত আব্দুল জলালকে গ্রেফতার করার জন্য ফোন ট্রেক করে রেখেছে। ভীতসন্ত্রস্ত রুখিয়া বেগম নিজের প্রান বাঁচানোর জন্য রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রানভিক্ষা চাইলেন।