স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা। ৮ মার্চ : শনিবার ৮ই মার্চ ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি। এ উপলক্ষ্যে শনিবার রাজধানীর রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে অনুষ্ঠানের সুচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। পরে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা বলেন সুস্থায়ি উন্নয়নের ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে প্রথম সারিতে উঠে এসেছে ত্রিপুরা রাজ্য। উন্নয়ন মানে বিল্ডিং নির্মাণ করা নয়। উন্নয়ন মানে মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন। সর্ব ক্ষেত্রে বর্তমানে ত্রিপুরা রাজ্যের উন্নয়ন হচ্ছে। রাজ্যের সর্বত্র উন্নয়নের লক্ষ্যে রাজ্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ত্রিপুরা রাজ্যে বর্তমানে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে। গত ৭ বছরে রাজ্যে একাধিক জনমুখী প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার।
একাধিক নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন মুখি প্রকল্প গুলির সঠিক বাস্তবায়ন করা হয়েছে ত্রিপুরা রাজ্যে। রাজ্য সরকারের সবচেয়ে বড় বিষয় স্বচ্ছতা। স্বচ্ছতা, দক্ষতা এবং দায়বদ্ধতাকে মাথায় রেখে প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বচ্ছ প্রশাসন দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন ত্রিপুরা রাজ্য একমাত্র রাজ্য যেখানে পঞ্চায়েত স্তর থেকে কেবিনেট পর্যন্ত ইঅফিস চালু করা হয়েছে। আগে সবদিকে উন্নয়নের যজ্ঞ চলছে বলে শোনা যেত, বাস্তবে দেখা যেত না। বর্তমানে উন্নয়ন বাস্তবে দেখা যায়। কারণ উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান রাজ্য সরকার। আগে উন্নয়ন কথা শুনা যেত। কিন্তু বাস্তবে উন্নয়ন দেখা যেত না বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন বর্তমানে বাস্তবে উন্নয়ন দেখা যায়। প্রধানমন্ত্রীর এক্টইস্ট পলিসির কারনে ত্রিপুরা রাজ্যের উন্নয়ন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ত্রিপুরা রাজ্যকে হীরা মডেল দিয়েছেন। জিডিপির দিক থেকে সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে ত্রিপুরা রাজ্য। রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়ন হয়েছে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষের মাথা পিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন ইনফ্রাস্ট্রাকচারের জন্য বিগত বাজেটে সাত হাজার ৮০০ কোটি টাকা রাখা হয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে রাজ্যের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল এক লক্ষর ৪৪৪ টাকা।
বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে এক লক্ষ ৭৭ হাজার ৭২৩ টাকা। জিএসডিপি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছিল ২৫.৫৮ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৮২.৮২ হাজার কোটি টাকা। এগুলি দিয়ে বুঝা যায় ত্রিপুরা এগিয়ে চলছে। ত্রিপুরার এসডিজি -র টপ পারফরম্যান্স রাজ্য ছিল। এখন ত্রিপুরা ফ্রন্ট রানারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মানুষের জীবনযাত্রা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, কর্মসংস্থানের উন্নয়ন এবং আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি সাধন হলেই রাজ্যের প্যারামিটার উচ্চ স্থানে পৌঁছে যায়। বর্তমানে ত্রিপুরার প্যারামিটার উচ্চস্থান লাভ করেছে। দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে এমনটাই দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এইদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য, সাংসদ কৃতি সিং দেববর্মণ, মন্ত্রী প্রনজিৎ সিংহ রায়, মন্ত্রী টিঙ্কু রায়, মন্ত্রী রতন লাল নাথ, মন্ত্রী সান্তনা চাকমা, মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, মন্ত্রী শুক্লা চরণ নোয়াতিয়া, মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা, রাজ্যের মুখ্য সচিব জেকে সিনহা সহ অন্যান্যরা। এইদিনের অনুষ্ঠানে বর্তমান রাজ্য সরকারের দুই বছরের রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিক কর্মী সহ সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যনীয়।