স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা , ৬ ফেব্রুয়ারি : বৃহস্পতিবার রাজধানীর রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে রাজ্যস্তরের টি এল এম প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতা সহ বিভিন্ন বিভাগে জয়ী প্রতিযোগীদের পুরস্কার বিতরণ করার এক অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। তিনি প্রজ্বলন করে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসরণ করে টি এল এম অর্থাৎ শিক্ষণ শিখন উপকরণ ব্যবহারের মাধ্যমে প্রাথমিক স্তরে প্র ায় ৯০ হাজার শিক্ষার্থীকে শিক্ষাগত ও অক্ষর জ্ঞান এর মৌলিক শিক্ষাকে বাস্তবায়ন করার জন্য নির্লসভাবে কাজ করে চলেছে নিপুন ত্রিপুরা।
২০২২ সালে ১৮ নভেম্বর ত্রিপুরায় নিপুন ত্রিপুরা শুরু হয়। বর্তমানে এর সুফল পাচ্ছে রাজ্য। অথচ রাজ্যের নিন্দুকেরা বিভিন্ন সময় বলে রাজ্যের বিদ্যালয় গুলি মধ্যে পড়াশোনা সঠিকভাবে চলছে না এবং ছাত্রছাত্রীদের ফলাফল ভালো হচ্ছে না বলে অভিযোগ চলছে। কিন্তু ত্রিপুরা গত আড়াই বছরে নিপুন ত্রিপুরার সুফল পেয়ে চলেছে। এর পুরো কৃতিত্ব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। কারণ তারাই নপুন ত্রিপুরার মূল চালিকা শক্তি। কিন্তু নিপুন ত্রিপুরার বয়সের আওতায় রয়েছে প্রায় দেড় লক্ষ ছাত্রছাত্রী। এর জন্য বারো হাজার শিক্ষক দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছে। তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ৪ হাজার ২২৭ টি বিদ্যালয় নিপুন ত্রিপুরার আওতায় রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এইদিন আরও বলেন ঘর নির্মাণ করতে গেলে যেমন ফাউন্ডেসান মজবুত করতে হয়, তেমনি শিশুদেরও প্রথম থেকে সঠিক ভাবে গড়ে তুলতে হয়। প্রধানমন্ত্রী নয়া জাতীয় শিক্ষা নীতি চালু করার পর শিশুদের প্রথম থেকে সঠিক ভাবে গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী সর্বদা বলে থাকেন যাদের কাছে জ্ঞান থাকবে তারাই আগামী দিনে দেশকে চালাবে। জ্ঞান ছাড়া কোন কিছু হবে না। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এ নিপুন ত্রিপুরার আওতায় রয়েছে তিন থেকে সাত বছর বয়সে ছাত্রছাত্রী। তাদের মেধা বিকাশের জন্য যে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে তাতে আগামী দিন ছাত্রছাত্রীরা প্রশ্ন করার সাথে সাথে উত্তর দেওয়ার জন্য মেধার বিকাশ হবে। সুতরাং টি এল এম -এর মাধ্যমে এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া অত্যন্ত প্রশংসনীয় কাজকর্ম।
কারণ ক্লাসরুমে যে পরিবেশে গড়ে তোলা হচ্ছে তাতে ছাত্রছাত্রীরা ভাববে যে তারা বাড়িতে বসে পড়াশোনা করছে। এমনটাই অভিমত ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেন রাজ্যে নিপুন ত্রিপুরা মিশনের সঠিক বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০ জন ব্লক রিসোর্স পার্সনকে মূল প্রসিক্ষক হিসাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময় তারা প্রায় ১০ হাজার ১৮২ জনের অধিক প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকাকে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছেন। নিপুন ত্রিপুরার নামে ওয়েব পোর্টাল চালু করা হয়েছে। তার অফিশিয়াল ফেসবুকও রয়েছে। তার সদস্য প্রায় ১১ হাজার। বর্তমানে যারা শিশু, আগামিদিনে তারা দেশের ভবিষ্যৎ। তাদেরকে সঠিক ভাবে গড়ে তুলতে হবে। এদিন অনুষ্ঠানে টি এল এম প্রদর্শনীতে সেরা জেলা হয়েছে পশ্চিম ত্রিপুরা। পুরস্কারটি গ্রহন করেন নিপুন কডিনেটর এবং পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার শিক্ষা অধিকর্তা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা দপ্তরের সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার, এলিমেণ্টারি এডুক্যাশনের অধিকর্তা এনসি শর্মা সহ অন্যান্যরা। মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিরা বিভিন্ন প্রদর্শনী স্টল গুলি ঘুরে দেখেন এইদিন।